সত্যবতী দেবী

ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী

সত্যবতী দেবী (২৬ জানুয়ারি ১৯০৬ - ২১ অক্টোবর ১৯৪৫) ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তাকে ভারতের জোয়ান অফ আর্ক হিসাবে বিবেচনা করা হত।[ক]

সত্যবতী দেবী
জন্ম২৬ জানুয়ারী ১৯০৬
মৃত্যু২১ অক্টোবর ১৯৪৫(1945-10-21) (বয়স ৩৯)
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ

পরিবার সম্পাদনা

তিনি ছিলেন স্বামী শ্রদ্ধানন্দের নাতনি, এবং অ্যাডভোকেট ধনি রাম এবং বেদ কুমারীর কন্যা।[১] তিনি দিল্লি ক্লথ মিলের একজন অফিসারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।

কর্মকাণ্ড সম্পাদনা

দিল্লিতে জাতীয়তাবাদী নারীদের মধ্যে, সত্যবতী নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। অরুণা আসাফ আলী সত্যবতীকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যোগদানের জন্য অনুপ্রাণিত করার কৃতিত্ব দেন।[২] সত্যবতী গোয়ালিয়রদিল্লিতে টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সামাজিক কর্মকাণ্ড শুরু করেন। তিনি কংগ্রেস মহিলা সমাজ[৩] এবং কংগ্রেস দেশ সেবিকা দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি কংগ্রেস সমাজতান্ত্রিক দলের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নাগরিক সত্যাগ্রহ আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। আইন অমান্য আন্দোলনের সময় তিনি দিল্লিতে কংগ্রেসের নারী শাখার নেত্রী হন। তিনি দিল্লিতে লবণ আইন ভাঙার আয়োজন করেছিলেন যেখানে তিনি এবং একদল স্বেচ্ছাসেবক সেখানে সমবেত হওয়া লোকেদের কাছে অবৈধ লবণের প্যাকেট তৈরি ও বিতরণ করেন। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং ১৯৩২ সালে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাগারে বন্দী থাকাকালীন তিনি প্লুরিসি এবং যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হন।[৪] জেলে থাকাকালীন, খুব অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও, তিনি ভাল আচরণ এবং রাজনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আশ্বাস বিষয়ে মুচলেকা দিতে অস্বীকার করেন, যা তার মুক্তি এবং চিকিৎসার আশা নিশ্চিত করতে পারত।[৫] তিনি ১৯৪৫ সালে ৩৯ বছর বয়সে যক্ষ্মায় মারা যান।

লেখাগুলো সম্পাদনা

জেলে বন্দী নারী রাজনৈতিক মুক্তিযোদ্ধারা কবিতা এবং জাতীয়তাবাদী পুস্তিকা রচনা করতেন, যা গোপনে পাচার করে প্রকাশিত হত। সত্যবতী দেবীর লেখা ‘বহিন সত্যবতী কা জেল সন্দেশ’ (বোন সত্যবতীর কারাগারের বার্তা) শিরোনামের একটি অংশ নিম্নরূপ: [৬]

এটা তোমার জেলবন্দী বোনের বার্তা
ভগিনী সত্যবতী তোমার কাছে আবেদন
আপনার কাজ থেকে বিরত হবে না
প্রয়োজনে জ্বলন্ত শিখায় ঝাঁপ দাও
পবিত্র যুদ্ধ শক্তিতে পূর্ণ হওয়া উচিৎ
একবার এগোলে কখনো পিছোবে না
যুদ্ধের ময়দানে পুরুষদের আগে মরো
গুলি বা লাঠির ভয় নেই
পুরুষদের আগে তোমার মাথা এগিয়ে রাখো
একবার জ্বালালে আগুন নিভে যাবে না
আমার এখন পূর্ণ বিশ্বাস আছে
কারণ নারীরা নিজেদের প্রস্তুত করেছে[খ]

এটি এবং অন্যান্য লেখা এবং কারাগারের গানগুলো ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রবেশের জন্য নারীদের অনুপ্রাণিত ও সংগঠিত করার লক্ষ্য ছিল বলে মনে হয়।

স্বীকৃতি সম্পাদনা

যদিও তাকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন অমিমাংসিত নায়ক বলে মনে করা হয়, ১৯৭২ সালে দিল্লি সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সত্যবতী কলেজ (দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়) তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।[৭]

টীকা সম্পাদনা

  1. Writeup by Jaiprakash Narain, in "Dilli Ki Joan of Arc, Behan Satyavati" souvenir published in 1977 commemorating Satyavati's 70th birth anniversary.
  2. সূত্রে প্রদত্ত নিবন্ধ থেকে ভাবানুবাদকৃত

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Taneja, Anup (২০০৫)। Gandhi, Women, and the National Movement, 1920–47। Haranand Publications Pvt Ltd। পৃষ্ঠা 153। আইএসবিএন 9788124110768 
  2. Taneja, Anup (২০০৫)। Gandhi, Women, and the National Movement, 1920–47। Har-anand Publications Pvt Ltd। পৃষ্ঠা 154। আইএসবিএন 9788124110768 
  3. "CONGRESS SOCIALIST PARTY (CSP) AT A GLANCE AND SHORT PROFILES WORKS OF ITS LEADERS" (পিডিএফ)lohiatoday.com। পৃষ্ঠা 91। ২৩ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৫ 
  4. Geraldine Forbes (১৯৯৯)। Women in Modern India, Volume 4। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 978-0521653770 
  5. "Toofani Satyawati An Unsung Hero of Freedom Struggle" (পিডিএফ)www.manushi.inManushi – Forum for Women's Rights & Democratic Reforms। ২ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৫ 
  6. Thapar-Björkert, Suruchi (২০ ডিসেম্বর ২০০৬)। "Gender, nationalism and the colonial jail: a study of women activists in Uttar Pradesh": 583–615। ডিওআই:10.1080/09612029800200182  
  7. "About Us"satyawati.du.ac.in/