শাহ আব্দুল ওহাব ১৭৬৩ সালে গোলাপগঞ্জের ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শাহ্ আব্দুর রহিম। শাহ্ আব্দুল ওহাব ছিলেন জ্ঞান সাধনায় আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ২য় গ্রন্থের রচয়িতা ড. দীন মোহাম্মদ শাহ্ আব্দুল ওহাব সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। এতে তার ‘হাশর তরাণ’ ও ‘ভব তরাণ’ নামক দু’টি গ্রন্থের উল্লেখ থাকলেও তাঁর ‘ভেদকায়া,’ ‘উম্মিতরান’ প্রভৃতি গ্রন্থের উল্লেখ নেই। তার পুত্র ডা. আব্দুর রহিম চৌধুরীর সম্পাদনায় "উম্মিতরান"-এর বাংলা রূপান্তর প্রকাশিত হয়েছে। এ সম্পর্কে ডা. আব্দুর রহিম চৌধুরী বক্তব্য নিম্নরূপ- হযরত শাহ্ আব্দুল ওহাব ১৩৪৩ বাংলায় উম্মিতরান পুঁথি রচনা করেন। সিলেটি নাগরী হরফে এই পুঁথি প্রচলিত ছিল। ইহার অংশবিশেষ কলকাতার শিবদাহ হইতে ১৩০২ বাংলা সিলেটি নাগরী হরফে ছাপা হয়। এই সময় কলকাতার রতু সরকার লেন হইতে পুঁথি ছাপা হইত। সিলেটের প্রচলিত কথ্য ভাষাতেই উক্ত পুঁথি রচিত হয়। রচনার উদ্দেশ্য লেখকের নিজের কথায়-
‘আধা পণ্ডিতের লাগি হইল কিতাব
উম্মি লোকের লাগিয়া পুঁথি কইলা ওহাব’।

তা’ছাড়া শাহ্ আব্দুল ওহাবের রচিত ভেদকায়া পুঁথি থেকে তাঁর পরিচিতি পাওয়া যায়। "মাওলানা মোহাম্মদ নাজিম সর্বলোকে জানে/পূর্ব শহরে কুতুবি আল্লা দিয়াছিল তানে/শরিফত-মারিফত বৃক্ষের ছিলা ফুল/ফুলবাড়ী গদ্দি ছিল আল্লায় মকবুল/আল্লাহ্র রহমতে তাইন হইছেন স্বর্গবাস/ভরে আছে খুসবু তান হইয়া পরকাশ/ সেই গদ্দি পাইয়াছেন পীর যে আমার/শাহ্ আব্দুল কাদের নাম মকবুল আল্লার/ফুলবাড়ী মোকাম তান সর্বজনে জানে/ বাংলার কুতুবি আল্লাহ্ দিয়াছিল তানে/ তান নাম লইয়া ফিরি নাই কোন দিশা/ অদ্যকালে পরকালে আল্লাহ্র ভরসা/ আব্দুল লতিফের নাতি ফকির ওহাব নাম/ আব্দুর রহিমের পুত্র আমি ফুলবাড়ী মোকাম"।

শাহ্ আব্দুল ওহাব শরিয়তের বিধান ও ধর্মশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে সিলেটি কথ্য ভাষায় পুঁথি রচনা করেন। ইসলামী জ্ঞানের ভাণ্ডার সাহিত্য সাধক শাহ আব্দুল ওহাব ১৮৮৮ সালে পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা