শান্তিনি গোবিন্দন

ভারতীয় লেখিকা

শান্তিনি গোবিন্দন (বিবাহপূর্ব কুট্টি) ইংরেজিতে শিশু সাহিত্যের একজন ভারতীয় লেখক। তাঁর রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে কবিতা, ছবির বই এবং সব বয়সের শিশুদের জন্য ছোট গল্প। এগুলি বহু ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।[১] তিনি শিশুদের জন্য নিবন্ধ, গল্প এবং প্রবন্ধ লিখেছেন যা ভারত ও বিদেশের শিশু পত্রিকা এবং জাতীয় দৈনিকগুলিতে প্রকাশিত হয়েছে। গোবিন্দন মুম্বাই জুড়ে স্কুলে এবং অন্যান্য ভারতীয় শহরে শিশুদের জন্য কর্মশালা পরিচালনা করেছেন এবং মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরে সৃজনশীল লেখা শেখান।[২]

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

শান্তিনি গোবিন্দন ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতে শান্তা কুট্টি এবং মাধবন কুট্টির কাছে জন্মগ্রহণ করেন, মাধবন কুট্টি ভারতীয় পররাষ্ট্র সেবায় কূটনীতিক ছিলেন।[১] শান্তিনি চেকোস্লোভাকিয়ার প্রাগে, সুইজারল্যাণ্ডের বার্নে এবং শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে আমেরিকান দূতাবাস আন্তর্জাতিক স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন, যেখানে তাঁর বাবা একজন কূটনীতিক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৭৭ সালে, তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৭৯ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

সাহিত্যিক জীবন সম্পাদনা

শান্তিনি গোবিন্দনের লেখার জীবন শুরু হয় প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জেতার পর। নতুন দিল্লির চিলড্রেন'স বুক ট্রাস্ট দ্বারা আয়োজিত শিশুদের বইয়ের লেখকদের জন্য জাতীয় পুরস্কার প্রতিযোগিতায় তাঁর গল্প "এ টেল অফ টাফি টার্টল" পুরস্কার জিতেছিল।[৩][৪]

ছোট গল্প আকারে শিশুদের জন্য ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য লেখার জন্য শান্তিনি গোবিন্দনকে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সংস্কৃতি বিভাগ থেকে সাহিত্যে দুই বছরের জুনিয়র ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছিল।[৩] পরে তিনি ভারত সরকারের সংস্কৃতি বিভাগ থেকে সাহিত্যে দুই বছরের সিনিয়র ফেলোশিপ পান। "ভারতে ইংরেজিতে শিশু সাহিত্য" -এর উপর একটি গবেষণা প্রকল্পের জন্য তিনি এটি পেয়েছিলেন।[৫] ২০০১ সালের জুলাই মাসে, প্রথম ভারতীয় লেখক হিসেবে তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের চৌতাকুয়াতে অনুষ্ঠিত বার্ষিক হাইলাইটস ফাউণ্ডেশন রাইটার্স ওয়ার্কশপে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।[১][৪]

তিনি হাইলাইটস ফর চিলড্রেন -এর জন্যও কাজ করেছেন। তাঁর কাজের মধ্যে ছিল হাইলাইটস প্রাইমারি এডুকেশন ফাউণ্ডেশন প্রোগ্রামের জন্য অভিভাবক ও শিক্ষক উপদেশাবলী তৈরি, স্কুল প্রোগ্রাম ও প্রাইমারি প্লাস প্রোগ্রামে প্রস্তুত হওয়ার জন্য অভিভাবক ও শিক্ষক নির্দেশিকা তৈরি।[১][৪]

শান্তিনি গোবিন্দন পরবর্তীকালে ১৯৮৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চিলড্রেনস বুক ট্রাস্ট দ্বারা আয়োজিত শিশুদের বইয়ের লেখকদের জন্য জাতীয় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বিভাগে এবং বিভিন্ন বয়সের জন্য গল্প দিয়ে কুড়িটি পুরস্কার জিতেছেন।

২০১৮ সালের অক্টোবরে, শান্তিনি গোবিন্দন ভারতের পার্লামেন্ট কর্তৃক, তাদের স্পিকার'স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে, দুই বছরের লোকসভা রিসার্চ ফেলোশিপ পান। ভারতের সংসদের ভূমিকা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের উপযোগী একটি বই লেখার উদ্দেশ্যে তিনি এটি পেয়েছিলেন।

তিনি ২০১১ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সালে চাঁদমামার প্রকাশনা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত, দু' বছর ধরে, এই মাসিক শিশু পত্রিকায় ঐতিহাসিক কথাসাহিত্য এবং পুরাণ বিষয়ক দুটি কলাম লিখেছিলেন।

প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, প্রারম্ভিক সাক্ষরতা প্রোগ্রাম, এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল ট্রেনিং অ্যাণ্ড রিসার্চ-এর মতো সংস্থা তাঁর বই, দ্য অ্যাঙ্গার অফ আপ্সু, (নতুন দিল্লির সিবিটি দ্বারা প্রকাশিত)-কে ২০১৪ সালের নির্বাচিত শিশু সাহিত্যের প্রস্তাবিত তালিকা, লেভেল ২, (শ্রেণী ৩ - ৪)-র জন্য সুপারিশ করেছিল। শান্তিনি গোবিন্দন আইএলএণ্ডএফএস ইটিএস-এর জন্য ভারতীয় ইতিহাসের উপর শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন যার মধ্যে রয়েছে ইট হ্যাপেণ্ড ৫০০০ ইয়ার্স এগো (সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতার উপর), অশোকা'স ডায়েরি এবং মারাঠা রাজা শিবাজিকে নিয়ে ম্যাজিকাল মারাঠা

২০১৯ সালে, তিনি শিশুদের বই দ্য ম্যাজিক অফ কার্লি হোর্লি প্রকাশ করেন।[৬]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

কে এম গোবিন্দনের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি ভারতের মুম্বাইতে থাকেন এবং কাজ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Pain, Paromita (অক্টোবর ১১, ২০০৩)। "Of giants and centipedes"The Hindu। নভেম্বর ১২, ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২১ 
  2. Madras, Name Santhini GovindanEducation University of (২০১৭-০৮-১৮)। "Santhini Govindan - Alchetron, The Free Social Encyclopedia"Alchetron.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-২৭ 
  3. STP Team (মে ৫, ২০১৫)। "Female Children's writers your kids should read"SheThePeople.TV। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২১ 
  4. Anthikad-Chhibber, Mini (সেপ্টেম্বর ১৮, ২০০৩)। "Small wonder"The Hindu। মার্চ ৪, ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২১ 
  5. Kaur, Jaswant (সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০২)। "Stories from the lap of nature"The Tribune India। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২১ 
  6. Bhattacharyya, Priyanka (২০১৯)। "THE MAGIC OF CURLY WHORLY"The Book Review Literacy Trust। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা