শহর-ই-জোহাক

ঐতিহাসিক নগর-ধ্বংসাবশেষ (আফগানিস্তান)

শহর-ই-জোহাক (পার্শি شهر ضحاک, বাংলা আক্ষরিক অর্থ 'রক্ত নগরী') হল মধ্য আফগানিস্তানের বামিয়ান উপত্যকায় অবস্থিত একটি ত্রয়োদশ শতাব্দীর দুর্গের ধ্বংসাবশেষ।[১] একটি উঁচু টিলায় অবস্থিত এই দুর্গটি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ধ্বংস হবার আগে পর্যন্ত বামিয়ান উপত্যকা রক্ষার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত। ঘুরি সাম্রাজ্যের শাসনকালে (১১৫৫ - ১২১২ খ্রিঃ) বামিয়ান একটি শক্তিশালী ও বিস্তৃত সাম্রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হলে[২] তা রক্ষার উদ্দেশ্যে এই দুর্গটিকেও অত্যন্ত শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হয়।[১] ঘুরিদের পতনের পর সমগ্র বামিয়ান উপত্যকার সাথে সাথে এই দুর্গটিও উত্তরের খরেজম সাম্রাজ্যের অধীনে আসে।

শহর-ই-জোহাক
স্থানীয় নাম
ফার্সি: شهر غلغله
অবস্থানবামিয়ান উপত্যকা, আফগানিস্তান
স্থানাঙ্ক৩৪°৪৯′৩৫″ উত্তর ৬৭°৪৯′১৮″ পূর্ব / ৩৪.৮২৬৩৯° উত্তর ৬৭.৮২১৬৭° পূর্ব / 34.82639; 67.82167
শহর-ই-জোহাক আফগানিস্তান-এ অবস্থিত
শহর-ই-জোহাক
আফগানিস্তানের মানচিত্রে শহর-ই-জোহাকের অবস্থান

১২২১ খ্রিষ্টাব্দে চেঙ্গিজ খানের মোঙ্গল সেনা বামিয়ান উপত্যকায় প্রবেশ করলে তাদের হাতেই এই দুর্গের পতন ঘটে।[৩][৪] অবরোধ চলাকালীন দুর্গ থেকে ছোঁড়া একটি তীরে চেঙ্গিজ খানের নাতি মুতুকানের মৃত্যু ঘটলে[১], আক্রোশবশত মোঙ্গলরা সমস্ত উপত্যকা জুড়েই গণহত্যা চালায়।[৪] এই দুর্গে এইসময় প্রায় ৩০০০ মানুষ ছিল। তারাও কেউ এই হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পায়নি। আজ এই দুর্গের ধ্বংসাবশেষের 'রক্ত নগরী' নামটিও সম্ভবত এই গণহত্যার নারকীয়তা থেকেই উদ্ভূত। এই নারকীয়তা ছিল এত ভয়াবহ যে অন্তত চার দশক এই শহরে আর কোনও বসতি স্থাপন হয়নি।[৫] পরবর্তীকালেও যখন শহরটি আবার গড়ে ওঠে, এই দুর্গটি কিন্তু তার অতীতের সাক্ষ্য বয়ে একইভাবে পড়ে থাকে। কোনও দিনই তার ধ্বংসস্তূপের উপর আর কোনও পুনর্নির্মাণ চালানো হয়নি।[১]

বিখ্যাত বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমৃদ্ধ বামিয়ানের ঐতিহাসিক পর্বতগাত্রটি থেকে পূর্বদিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে এই দুর্গটির ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত।[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Harold, Frank. BAMIYAN AND BUDDHIST AFGHANISTAN. সংগৃহীত ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪।
  2. Tarzi, Z.. BĀMĪĀN. "ii. History and Monuments". 15 December, 1988. Encyclopædia Iranica. সংগৃহীত ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪।
  3. Romano, Amy. A Historical Atlas of Afghanistan. NY: Rosen, 2003. P.25. আইএসবিএন ০-৮২৩৯-৩৮৬৩-৮
  4. Kohn, George C.. Dictionary of Wars. 1986. 3rd. ed. NY, 2007. P.55. আইএসবিএন ০-৮১৬০-৬৫৭৭-২
  5. de Planhol, X.. BĀMĪĀN. "iii. Modern Town and District". 15 December, 1988. Encyclopædia Iranica. সংগৃহীত ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪।
  6. Cultural Landscape and Archaeological Remains of the Bamiyan Valley. সংগৃহীত ১২ জানুয়ারি, ২০১৫।