শাবনম ফেরদৌসী (১৫ জানুয়ারি ১৯৭২) [১] একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার এবং অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার (২০০৯) অর্জন করেছেন । [২][৩] ১৪ তম রেনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রামাণ্যচিত্র বিষকাব্য-এর জন্য তিনি সেরা স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র পুরস্কার পান' । [১] ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, তিনি ১৮ টি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেন[৪]

শবনম ফেরদৌসী
চলচ্চিত্র নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী
জন্ম (1972-01-15) জানুয়ারি ১৫, ১৯৭২ (বয়স ৫২)
জাতীয়তা বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তনবদরুন্নেসা মহিলা কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅভিনেত্রী ও নির্মাতা
পরিচিতির কারণচলচ্চিত্র নির্মাতা
পুরস্কারঅনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

টাঙ্গাইলে বেড়ে ওঠা শবনম ফেরদৌসী এসএসসি উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই সত্যজিৎ রায়সহ বিখ্যাত অনেক পরিচালকের চলচ্চিত্র দেখা শুরু করেন। পাঠ্যবইয়ের বাইরে বিভিন্ন বই, পত্রপত্রিকা পড়ার একটা অভ্যাস ছিল তার। সে কারণে দেশ ও দেশের বাইরে কী ঘটছে, সেসব বিষয়ে দৃষ্টি রাখতেন সে বয়সেই। সত্যজিতের চলচ্চিত্রগুলো দেখে দেখেই মাথার ভেতর চলচ্চিত্রের ভাষা সম্পর্কে ধারণা তৈরি হতে থাকে। তাছাড়া ইউরোপিয়ান বা হলিউড চলচ্চিত্রে কী ঘটছে, সেসব সম্পর্কে জানার চেষ্টা ছিল ওই সময়গুলোতে। [৫]

শিক্ষা ও কর্ম সম্পাদনা

শবনম ফেরদৌসী টাঙ্গাইল থেকে এসএসসি পাসের পর ঢাকায় এসে ভর্তি হন বদরুন্নেসা মহিলা কলেজে। এ কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন [৪] তিনি প্রথমে মডেল অভিনেত্রী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। [২] ১৯৯৬ সালে জহির রায়হানের ফিল্ম সোসাইটিতে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে স্বল্পদৈর্ঘ একটি চলচ্চিত্রে অংশ নেন এবং ২০০০ সালে তিনি বাংলাদেশে প্রামান্য চিত্র প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। [২] ২০০৯ সালে ফেরদৌসীকে দুই বছরের মেয়াদে বাংলাদেশ ডকুমেন্টারি কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। [৬] ফেরদৌসী বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিতে একটি অনুষ্ঠানের সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। [১]

যুদ্ধশিশুদের নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র সম্পাদনা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের একটি মর্মস্পর্ষী অধ্যায় যুদ্ধশিশু। দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক যুদ্ধশিশুকেই দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, আবার কেউ জন্মপরিচয় গোপন রেখে বেড়ে ওঠেন এদেশেই। নিজের দেশে আত্মপরিচয় সংকটে জীবনযাপন করা এইসব মানুষের সন্ধান করে তাদের খুঁজে বের করেন নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী। তিনজন যুদ্ধশিশুকে খুঁজে বের করে তাদের তাদের পরিণতির গল্প শুনেন এবং সে গল্প থেকে তৈরি করেন ‘জন্মসাথী’ প্রামাণ্যচিত্র। এটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ এর আসরে সেরা প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে পুরস্কার পায়। এটি যৌথভাবে প্রযোজনা করে একাত্তর টেলিভিশনমুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর[৭] ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালে ১৫তম মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হয়। [৮]

নির্মিত চলচ্চিত্র সম্পাদনা

  • বিষকাব্য
  • অপেক্ষা থেকে
  • একটুখানি প্রাণের খোঁজে
  • ভুবন ভরা সুর (২০০৯) [৯]
  • 'দীপ হাতে রমণী (দ্য লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প) (২০১১) [১০]
  • ভাসোজয়োতি[২]
  • জন্ম সাথি (২০১৬) [১১]
  • ইচ্ছা বসন্ত (দ্য স্প্রিংস অফ ডিজায়ার) (২০১৬) [১২]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

পেশাদারিত্বের জন্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার, অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার এবং লন্ডনে ১৪ তম রেনবো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছেন। [২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Shabnam Ferdousi's 'Born Together' attempts to document lives of Bangladesh War children"bdnews24.com। ২০১৬-০৩-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  2. "Ten Things You Didn't Know About Shabnam Ferdousi"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১০-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  3. "Give due recognition to women's contribution"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৪-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  4. "Shabnam Ferdousi's 'Born Together' to be screened at Mumbai International Film Festival"bdnews24.com। ২০১৮-০১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  5. "এখনো নারী নির্মাতারা মিডিয়ার চোখে 'মেয়েলি'"। দৈনিক বণিক বার্তা। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৯ 
  6. "Documentary Council executives"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  7. "মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে 'জন্মসাথী'র প্রদর্শনী"জাগো নিউজ। ১১ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৯ 
  8. "মুম্বাই উৎসবে যাচ্ছে 'জন্মসাথী'"বাংলা ট্রিবিউন। ২০ জানুয়ারি ২০১৮। ৯ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১৯ 
  9. "Prof. Anisur Rahman: A lifetime of devotion to music"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-০৩-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  10. "Women's Movement in Focus"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-০৩-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  11. "Jonmo Sathi: A quest for identity"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৩-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭ 
  12. "Bistaar marks first anniversary"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১৭