ল্যাংড়ি "নন্দিয়াত্মম" হিসাবে পরিচিত পাণ্ড্য রাজবংশের সময়ের ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় মাঠের খেলা, এটি এক্কাদোক্কার অনুরূপ একটি খেলা ।[১] মারাঠি বৈশিষ্ট্যর সাথে মিল রেখে মারাঠিরা একে খেলা হিসাবে প্রচলন করেছে।[২]

বিদ্যালয়ের বাচ্চারা আন্তঃবিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় ল্যাংড়ি খেলছে

খেলাটি জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা সম্পাদনা

খো খো, ভলিবল এবং জিমন্যাস্টিক্সের মতো খেলাগুলির প্রশিক্ষণে ল্যাংড়ি দরকারী বলে মনে করা হয়।[৩] ভারতের জাতীয় ল্যাংড়ি ফেডারেশন ২০১০ সালে জাতীয় স্বীকৃতি লাভ করে।[৪]

মহারাষ্ট্রে ল্যাংড়ি শিশুদের একটি জনপ্রিয় খেলা, এটিকে সব খেলার ভিত্তি হিসাবে বর্ণনা করা হয়। ভারতের ল্যাংড়ি ফেডারেশন এর সম্পাদক সুরেশ গান্ধী স্বীকার করেন যে ল্যাংড়ি খেলা আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। অংশীদারদের নিজস্ব সংস্থান থেকে তহবিলের ব্যবস্থা করতে হয়।[২] মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় হলো কলেজ পর্যায়ে ল্যাংড়ি প্রবর্তনকারী প্রথম ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এইভাবে ঐতিহ্যবাহী খেলাটি পুনরুজ্জীবিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭০০ টি কলেজে পাঁচ লাখ মেয়ে পড়াশোনা করে ।[৫] আহমেদাবাদের একটি স্কুল সি. এন. বিদ্যামন্দির ল্যাংড়ির মতো ঐতিহ্যবাহী খেলায় অংশগ্রহণকে উৎসাহ দেয় কারণ এই খেলাগুলি খেলতে কম খরচ হয় এবং বৈদ্যুতিক গণমাধ্যম এবং গেমসে আসক্ত শিশুদেরকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সতেজ করে।[৬] মহারাষ্ট্র টাইমস এর মহেশ বিচারের মতে, মুম্বাইয়ের ধর্মনিরপেক্ষ এবং খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠান উভয় দ্বারা পরিচালিত ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলিতে ল্যাংড়ির মতো ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে অবহেলা করার প্রবণতা রয়েছে।[৭] ক্রীড়া ভারতীর জাতীয় সভাপতি চৌহান জোর দিয়ে বলেছেন, সুস্থ তরুণ-তরুণী তৈরি করতে সংগঠনটি ল্যাংড়ির মতো ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাকে পুনরজ্জীবিত করার চেষ্টা করবে।[৮] ক্রীড়া ভারতী এমন একটি সংস্থা যারা ভারতে খেলাধুলা সম্প্রসারণ করে।[৯] অরুণ দেশমুখের মতে এটি ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এর স্বীকৃতির পাইপলাইনে রয়েছে। এই স্বীকৃতির ফলে ছাড় দেওয়া রেলভ্রমণের মতো সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে ফলে খেলাটির বিকাশ নিশ্চিত হবে।[২]

প্রবাসী ভারতীয়রা থাইল্যান্ডের মতো অন্যান্য দেশে ল্যাংড়িকে জনপ্রিয় করার প্রয়াসে যুক্ত রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য খেলাটির ভিডিও চিত্র তৈরি করা হয়েছে।[২]

সংক্ষিপ্ত নিয়মাবলী সম্পাদনা

অখিল মহারাষ্ট্র শিররিক শিক্ষা মন্ডল এই খেলার নিয়মকে প্রমিত করেছে।[১০]

ল্যাংড়ি একটি দলগত খেলা। দুটি দলের মধ্যে খেলা হয়, প্রতিটি দলে ১২ জন খেলোয়াড় এবং তিনজন অতিরিক্ত খেলোয়াড় থাকে। একটি খেলা ৩৬ মিনিট স্থায়ী হয়। খেলাটি ৯ মিনিটের চারটি অর্ধে অনুষ্ঠিত হয়। টসে জয়ি দল প্রতিরোধ করে। আক্রমণকারী দলটি পশ্চাদ্ধাবক পাঠায় যারা এক পায়ে লাফিয়ে প্রতিরোধকারীদের পিছু নিয়ে ধরার বা ছোঁয়ার চেষ্টা করে। পশ্চাদ্ধাবকরা যতক্ষণ এক পায়ে থাকে ততক্ষণ তারা মাঠে চলতে পারে। যদি মাঠ থেকে সরে যায় বা কোনও লাইন অপরাধ করে তাহলে প্রতিরোধকারীদের আউট ঘোষণা করা হয়। যে দল সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধকারকে ধরতে পারে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।[২]

জাতীয় প্রতিযোগিতা সম্পাদনা

চতুর্থ জাতীয় পুরুষ ও মহিলা ল্যাংডি চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৩ সালের মে মাসে চণ্ডীগড়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।[১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃস্থ ভিডিও
  জি নিউজ ভিডিও, ল্যাংড়ি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে প্রস্তুত।
  চতুর্থ জাতীয় ল্যাংড়ি চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনাল ম্যাচ, played between পাঞ্জাব এবং কর্ণাটক এর মধ্যে খেলা হয়, পাঞ্জাব প্রতিরোধ এবং কর্ণাটক আক্রমণ করছে, ভারতের ল্যাংড়ি ফেডারেশন এর ওয়েবসাইটের ভিডিও।
  1. Awasthi, Shailendra (২০১০-০১-০১)। "Now officially a sport, Langdi takes giant leap"Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  2. Vishal Karule। लंगडी निघाली परदेशवारीला!Zee 24 Taas 
  3. Medhekar, Niranjan (২০১৩-০৫-১৪)। "PMC deals crippling blow to folk games in its sports policy"Mid Day। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  4. Phatak, Parag (২০১৩-০৬-৩০)। "मुंबईची लंगडी लवकरच ऑनलाइन!"Loksatta (Marathi ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  5. Andhale, Santosh (২০১৩-০৭-২৫)। "MU will be India's first university to introduce the traditional sport langdi to keep girls fit"Daily News and Analysis। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  6. "Changing the game plan"Times of India। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  7. Vichare, Mahesh (২০১২-০৮-১৯)। "खेळांची 'शाळा'...शाळांचे 'खेळ'"Maharashtra Times (Marathi ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  8. "क्रीडा भारतीसाठी झोकून द्या: चौहान"Tarun Bharat। ২০১৩-০৩-০৯। ৯ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  9. "Don't create fuss about 'winning WC for Sachin': Chauhan"Times of India। ২০১১-০২-০৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. "The people: Amusements"Ahmednagar district gazette। Government of Maharashtra। ২০ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩ 
  11. "महाराष्ट्राची अव्वल कामगिरी"Lokmat (Marathi ভাষায়)। ২০১৩-০৫-১৯। ২০১৩-০৮-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৩