লীলা হাসান হোয়ে (জন্ম ১৩ই জুন ১৯৪৮) একজন ব্রিটিশ সম্পাদক এবং কর্মী, যিনি ১৯৭৩ সালে রেস টুডে কালেক্টিভের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং এর আগে রেস রিলেশনস ইনস্টিটিউটের জন্য কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৬ সালে রেস টুডে জার্নালের সম্পাদক হন। লীলা হাসান ব্ল্যাক ইউনিটি অ্যাণ্ড ফ্রিডম পার্টির সদস্যও ছিলেন। তিনি রেস টুডে -তে প্রকাশিত কিছু লেখার একটি সংগ্রহের সহ-সম্পাদক, সংগ্রহটি ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়।

লীলা হাসান
জন্ম
লীলা রামধন হাসান

(1948-06-13) ১৩ জুন ১৯৪৮ (বয়স ৭৫)
অন্যান্য নামলীলা হোয়ে,
লীলা হাসান হোয়ে
নাগরিকত্বব্রিটিশ
পেশাসম্পাদক ও কর্মী
পরিচিতির কারণরেস টুডের সম্পাদক
দাম্পত্য সঙ্গীডার্কাস হোয়ে

কর্মজীবন সম্পাদনা

লীলা হাসান ১৯৭৩ সালে রেস টুডে কালেকটিভের সূচনা থেকেই এর সদস্য ছিলেন,[১][২] এবং অবশেষে ১৯৮৬ সালে রেস টুডে পত্রিকার সম্পাদক হন।[৩][৪] তিনি ১৯৭৩ সাল থেকে জার্নালের সহ সম্পাদক ছিলেন এবং ডার্কাস হোয়ে সম্পাদক ছিলেন।[৫] তিনি এই জার্নালের নিয়মিত লেখক ছিলেন। তাঁর লেখার বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্ল্যাক পাওয়ার আন্দোলন থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের জীবন।[৬]

১৯৭০-এর দশকে, রেস টুডে কালেক্টিভের সাথে তিনি মিডল্যাণ্ডসে এশিয়ান কারখানার শ্রমিকদের সংগ্রামের পক্ষে প্রচারণা চালান। সেই সময়, ১৯৭৪ সালে, লেস্টারের ইম্পেরিয়াল টাইপরাইটার ফ্যাক্টরিতে একটি ধর্মঘট হয়েছিল, লীলা হাসান হোয়ে সেটিকে "এই সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ধর্মঘটগুলির মধ্যে একটি" বলেছেন। এই ধর্মঘট কোন ইউনিয়নের সমর্থন পায়নি।[৭][৮]

১৯৮০-এর দশকে, তিনি অলিভ মরিসের সাথে রেলটন রোডে রেস টুডে -র"বেসমেন্ট সেশনস" চালানোর কাজ করেছিলেন, যেখানে শিল্প, সংস্কৃতি এবং রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করা হত।[৩][৯][১০] রেস টুডে কালেকটিভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং সংগঠিত করেছিলেন লীলা হাসান সহ বেশ কয়েকজন মহিলা। ডার্কাস হোয়ের জীবনীকার রবিন বান্স এবং পল ফিল্ডের মতে সংগঠনের দিক নির্দেশনায় লীলার প্রভাবকে আরও স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন।[১১] সংগঠনের সাথে জড়িত নারীদের মধ্যে ছিলেন আলথিয়া জোন্স-লেকয়েন্টে, বারবারা বিস এবং মালা ধোণ্ডি[১২] ১৯৮৪ সালে, ধর্মঘটী কয়লা খনি শ্রমিকদের স্ত্রীদের লন্ডনে এসে তাদের গল্পগুলি জার্নালে বলার জন্য লীলা হাসান ব্যবস্থা করেছিলেন।[৫] তিনি নটিং হিল কার্নিভালকে একটি শিল্পরূপ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আর্ট কাউন্সিল ইংল্যান্ডের পক্ষে প্রচারণা চালান।[১৩] ১৯৮১ সালের জানুয়ারিতে নিউ ক্রস ফায়ারে ১৩ জন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক মারা যায়, হাসান ২০,০০০-ব্যক্তিকে নিয়ে লন্ডনের মধ্যে দিয়ে ব্ল্যাক পিপলস ডে অফ অ্যাকশন মার্চের সহ-সংগঠক ছিলেন।[১৪] এটির ২রা মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এখন এটি "কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিটিশ পরিচয়ের একটি ঘুরে দাঁড়ানো" হিসেবে বিবেচিত। [১৫]

লীলা হাসান ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে ব্ল্যাক পাওয়ার আন্দোলনে জড়িত হন।[৩] তিনি ১৯৭০ থেকে ইনস্টিটিউট অফ রেস রিলেশনস (আইআরআর)-এর জন্য তথ্য অফিসার হিসাবে কাজ করেন।[৬][১৬] সেখানে থাকাকালীন তিনি আইআরআর-এর পিতৃতান্ত্রিক সংগঠনকে উৎখাত করতে সাহায্য করেছিলেন, এই সংগঠনকে তিনি রক্ষণশীল থেকে আরও উগ্র রাজনৈতিক অবস্থানে নিয়ে যান।[৫] আইআরআর-এর এই পরিবর্তনটি সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে ঘটেছিল, যেখানে লীলা হাসান সংগঠনের প্রস্তাবিত নতুন দিকনির্দেশের প্রতি সহানুভূতিশীল আরও সদস্য নিয়োগে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন।[১৭] সমষ্টিতে যুক্ত হওয়ার আগে তিনি ব্ল্যাক ইউনিটি অ্যাণ্ড ফ্রিডম পার্টির সদস্য ছিলেন।[১৬]

ব্রিক্সটনের ফটোফিউশন গ্যালারিতে ব্রিটিশ ব্ল্যাক প্যান্থারদের সম্পর্কে ২০১৩ সালের একটি প্রদর্শনীতে হাসান হোয়ের একটি সাক্ষাৎকার দেখানো হয়েছে।[১৮] অন্যান্য প্রাক্তন প্যান্থারদের পাশাপাশি, তিনি জন রিডলির ২০১৭ টেলিভিশন ধারাবাহিক গেরিলার চিত্রনাট্য উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছিলেন।[১৯][২০][৩]

২০১৯ সালে, লীলা হাসান হোয়ে রেস টুডে থেকে লেখার একটি সংগ্রহ এবং প্লুটো প্রেস দ্বারা প্রকাশিত, হেয়ার টু স্টে, হেয়ার টু ফাইট -এর সহ-সম্পাদনা করেছিলেন। এই বইয়ের লক্ষ্য ছিল ব্রিটেনের কৃষ্ণাঙ্গ মৌলবাদী রাজনীতির সাথে নতুন দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া।[২১][১৫]

২০২৩ সালে, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ডস্মিথস থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রদত্ত একটি সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রাপক হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল।[২২][২৩][২৪]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

লীলা রামধন হাসান ১৯৪৮ সালের ১৩ জুন জানজিবারে জন্মগ্রহণ করেন;[২৫] তাঁর পরিবার ছিল মুসলিম এবং তিনি সেই বিশ্বাসের একজন নিষ্ঠাবান সদস্য হিসেবে বড় হয়ে ওঠেন।[৩][২৬][২৭]

লীলা হাসান নাগরিক অধিকার কর্মী ডার্কাস হোয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, ডার্কাস রেস টুডে -এর সম্পাদক হিসাবে তাঁর পূর্বসূরি ছিলেন।[২৮][২৯]

নির্বাচিত কাজ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Race Today"। Working Class Movement Library। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  2. Jones, Feminista, 1979– (২০১৯)। Reclaiming our space : how Black feminists are changing the world from the tweets to the streets। পৃষ্ঠা 161। আইএসবিএন 978-0-8070-5537-3ওসিএলসি 1035440566 
  3. Dalilah, Zahra (২১ এপ্রিল ২০১৭)। "5 British Black Panther women whose names you should know"gal-dem (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  4. "Social activist and broadcaster who stood up for black Britain – Obituary: Darcus Howe"The Irish Times (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  5. Hassan, Leila; Robin Bunce (৩১ অক্টোবর ২০১৯)। "Here to Stay, Here to Fight: On the history, and legacy, of 'Race Today' | Ceasefire Magazine"ceasefiremagazine.co.uk। ১১ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  6. "Leila Hassan"Pluto Press (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  7. Vaughan, Tabatha (২৮ আগস্ট ২০২১)। Tribune https://tribunemag.co.uk/2021/08/beyond-journalism-the-radicalism-of-race-today। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  8. "Leila Hassan Howe—race, class and struggle"। ১৭ ডিসেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  9. "Stories from Railton Road"Brixton Advice Centre (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ জুলাই ২০১৫। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  10. W, Perri (৯ মার্চ ২০১৯)। "A tribute to Olive Morris"Brits + Pieces (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  11. Austin, David (২০১৫)। "Review of Darcus Howe: A Political Biography": 278–280। আইএসএসএন 0700-3862জেস্টোর 44123114। ৮ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  12. The Race Today Review (ইংরেজি ভাষায়)। RT Publications। ১৯৮৭। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  13. "Revolutionary Black British Women – London Architecture Diary"London Architecture Diary (ইংরেজি ভাষায়)। New London Architecture। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  14. White, Nadine (২ মার্চ ২০২০)। "Black People's Day Of Action: Inside The 1981 New Cross Fire March That Brought Britain To A Standstill"Huff Post। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  15. Andrews, Kehinde (৮ অক্টোবর ২০২০)। "Leila Hassan Howe: 'My life was made hell. You'd just hear a tirade against immigrants'"The Guardian 
  16. Labour and the left in the 1980s। ১১ ডিসেম্বর ২০১৭। আইএসবিএন 978-1-5261-0645-2ওসিএলসি 1021146767 
  17. Bunce, R. E. R. (Robin E. R.) (২৬ মার্চ ২০১৫)। Darcus Howe : a political biography। Field, Paul, 1971–। পৃষ্ঠা 143। আইএসবিএন 978-1-4742-1845-0ওসিএলসি 897447030। ১৫ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  18. Chan, Bart (১১ অক্টোবর ২০১৩)। "Exhibition to tell story of British Black Panthers"The Voice Online। ৩০ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২০ 
  19. "London lends its authenticity to Guerrilla – the capital's overlooked tale of the Black Panthers"FilmFixer। ১১ এপ্রিল ২০১৭। ১ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০২০ 
  20. Hughes, Sarah (৯ এপ্রিল ২০১৭)। "The story of the British Black Panthers through race, politics, love and power"The Observer (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0029-7712। ৩০ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২০ 
  21. Mackreath, Helen (১২ ডিসেম্বর ২০১৯)। "Book Review: Here to Stay, Here to Fight: A 'Race Today' Anthology edited by Paul Field, Robin Bunce, Leila Hassan and Margaret Peacock"LSE Review of Books। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  22. "Leila Hassan Howe"। Goldsmiths University of London। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  23. "Goldsmiths, University of London Honorary Fellows Announced"FE News। ১৫ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  24. "Goldsmiths graduation | Leila Hassan Howe on the origins and importance of the Black Power movement in Britain"। Goldsmiths University of London। জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ – TikTok-এর মাধ্যমে। 
  25. "Leila Hassan"IMDb। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  26. "Darcus Howe papers, 1965–2008"www.columbia.edu। Columbia University Libraries। ৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  27. Howe, Darcus (১ আগস্ট ২০০৫)। "Darcus Howe finds frenzy at the mosque"New Statesman (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  28. "Civil rights activist Darcus Howe dies"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ২ এপ্রিল ২০১৭। ১০ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 
  29. Bunce, Robin; Field, Paul (৩ এপ্রিল ২০১৭)। "Darcus Howe obituary"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। ৪ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা