লীনা মোহান্তি

ভারতীয় নৃত্য বিশারদ

লীনা মোহান্তি হলেন একজন শীর্ষস্থানীয় ওড়িশি নৃত্য বিশারদ। তিনি অনেকগুলি পুরস্কার জিতেছেন, এর মধ্যে আছে, ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান যুব পুরস্কার, মাহারী পুরস্কার, সংযুক্তা পানিগ্রাহী পুরস্কার ইত্যাদি। তিনি সারা বিশ্ব জুড়ে অনেক মঞ্চে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন। তিনি অনেক নৃত্যের অংশ এবং সম্পূর্ণ নৃত্য পরিকল্পনা করেছেন।[১] সারা বিশ্বজুড়ে তাঁর ছাত্র ছাত্রী বর্তমান। ভারতে তাঁর প্রধান শিক্ষা কেন্দ্র আছে ওড়িশা জেলার ভুবনেশ্বরে। এছাড়াও কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া এবং নিউ ইয়র্ক শহরেও তাঁর শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। তিনি এই স্থানগুলি ছাড়াও পৃথিবীর আরও অনেক অংশে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন।

লীনা মোহান্তি
জন্ম
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাওড়িশি নৃত্যশিল্পী

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

লীনা মোহান্তি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বর শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেড়ে উঠেছিলেন। তাঁর পিতার নাম রবি নারায়ণ মোহান্তি (গুরুদাস)। তিনি ছিলেন একজন শিল্পোদ্যোগী। তাঁর মা স্বর্ণা মোহান্তি একজন কবি ছিলেন। তাঁর পিতা দৃষ্টিভঙ্গি ও চেতনায় মূলত ছিলেন আধ্যাত্মিক। শুরু থেকেই তাই লীনা শিল্প, সংগীত এবং আধ্যাত্মিকতার একটি পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছিলেন। তাই, চার বছর বয়স হতেই তাঁর ওড়িশি নৃত্যের সাথে পরিচয় হয়। তিনি প্রথমে একজন বিখ্যাত ওড়িশি নৃত্যশিল্পী দেব প্রসাদ দাসের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে ছিলেন। দেব প্রসাদ দাস অত্যন্ত উদ্ভাবনী, মৌলিক ও সৃজনশীল ছিলেন এবং একটি শিশুর সূক্ষ্ম, মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোর গঠনে তিনি বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। লীনা প্রতিবছর বৃন্দাবনে আসতেন এবং অবশ্যই মন্দিরগুলিতে নৃত্য প্রদর্শন করতেন। এই ভাবে তিনি বৈষ্ণবের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন যা তাঁর নৃত্য শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আরও অনুপ্রেরণা প্রদান করেছিল। তাঁর গুরুর দুঃখজনক মৃত্যুর পরে লীনা গুরু দুর্গা চরণ রণবীরের অধীনে তার নৃত্য প্রশিক্ষণ চালিয়ে যান। তিনি এখনও ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করেন এবং ছাত্র ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেন।[২]

এগারো থেকে বারো বছর বয়সে, তিনি ওড়িয়া ভাষার "বসন্ত রস" চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটির নির্দেশক ছিলেন গুরুদাস। লীনা এখানে শ্রীমতী রাধার বিশ্বস্ত বন্ধু ললিতার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।[১]

নৃত্য পরিকল্পনা সম্পাদনা

লীনা তাঁর প্রথম গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে একটি নৃত্য পরিকল্পনা করেছিলেন, যার নাম ছিল 'অঞ্জলি-গুরু দেব প্রসাদ দাসুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি'। তিনি এর শৈল্পিক পরিচালকও ছিলেন। এটি ২০০৯ সালের ১৭ই থেকে ১৯শে এপ্রিল মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মঞ্চস্থ হয়েছিল। তিনি শ্রীমদ্ভাগবতম থেকে ভ্রমর গীত নৃত্য পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে কোনার্ক উৎসবের জন্য একটি দলগত নৃত্য 'সূর্য উপাসনা'র নৃত্য পরিকল্পনা করেছিলেন। এটি বিশেষজ্ঞদের এবং সমালোচকদের কাছ থেকে অতি উচ্চ প্রশংশামূলক সমালোচনা অর্জন করেছিল। তিনি ওড়িশি শৈলীতে 'মহারাস' নৃত্য পরিকল্পনা করেছিলেন। ভুবনেশ্বরের দূরদর্শন কেন্দ্রের জন্য তিনি মিলন মাধুরী নামে একটি ছবির নৃত্য পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি 'মধুর মিলন', 'স্বপ্ন বিলাস', 'বসন্ত রাস', 'হোরি লীলা' এবং 'শ্রী কৃষ্ণ বাল্যলীলা'র মতো অনেক দলগত নৃত্যের পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সারা বিশ্বের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন।

প্রতিষ্ঠান সম্পাদনা

বর্তমানে লীনা তাঁর নিজস্ব প্রতিষ্ঠান 'বংশী বিলাস' এর সাথে জড়িত রয়েছেন এবং সেখানে তিনি শিশুদের সাথে কাজ করেন, তাদের দেহ এবং মন গঠনের জন্য। তিনি তাদের ওড়িশি নৃত্যের স্নিগ্ধতা বোঝানোর জন্য কাজ করেন। তিনি সমসাময়িক নাট্যদল 'মুক্তি' - কে প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন।[২]

পুরস্কার সম্পাদনা

লীনা মোহান্তির অর্জন করা পুরস্কারগুলি হল নিম্নলিখিত:

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "LEENA MOHANTY"। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 
  2. "Leena Mohanty."। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০২০ 

আরো দেখুন সম্পাদনা