লিভার নীতি
লিভার রুল হচ্ছে এমন একটি নিয়ম যার মাধ্যমে সাম্যাবস্থায় বাইনারি ফেজ ডায়াগ্রাম এর প্রতিটি ফেজ বা দশার মোল ভগ্নাংশ (xi) অথবা ভর ভগ্নাংশ (wi) বের করা হয়। এই নিয়মের মাধ্যমে প্রদত্ত কোন বাইনারি সংযুতি (কম্পোজিশন) ও তাপমাত্রা যা লিকুইডাস ও সলিডাস রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত, তার কঠিন এবং তরল দশার পরিমাণ বের করা যায়।
লিভার রুল যা বিপরীত লিভার রুল নামেও পরিচিত, এভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে- কোন সংকরে নির্দিষ্ট দশার আপেক্ষিক পরিমাণ ঐ সংকরের বিপরীত দিকে অবস্থিত টাই লাইনের দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক।[১]
α এবং β দুটি দশা সংবলিত একটি সংকর বা মিশ্রণ যেখানে প্রতিটি দশা নিজেরা দুটি উপাদান A এবং B দ্বারা গঠিত, সেক্ষেত্রে লিভার নিয়ম অনুযায়ী α দশার ভর ভগ্নাংশের পরিমাণ
যেখানে
- হচ্ছে α দশায় উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশ
- হচ্ছে β দশায় উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশ
- হচ্ছে সম্পূর্ণ সংকর বা মিশ্রণে উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশ
সবগুলো রাশি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বা চাপে হিসাবকৃত।
উপপাদনসম্পাদনা
ধরা যাক T তাপমাত্রার একটি সংকর ধাতু সাম্যাবস্থায় আছে যা উপাদান B এর পরিমাণ ভর ভগ্নাংশ নিয়ে গঠিত। আরো ধরা যাক T তাপমাত্রায় সংকরটি দুটি দশা α এবং β সমন্বয়ে গঠিত যেখানে α দশার পরিমাণ , এবং β দশার পরিমাণ । সংকরে α দশার ভর হলে β দশার ভর হয় , যেখানে সংকরটির মোট ভর।
সংজ্ঞা অনুসারে, α দশায় B উপাদানের ভর , এবং β দশায় B উপাদানের ভর । এই দুটি পরিমাণ একসাথে যোগ করা হলে সংকরে উপাদান B এর সম্পূর্ণ ভরের পরিমাণ পাওয়া যায় যা । অতএব,
পুনঃবিন্যাস করে পাওয়া যায়
এই ভগ্নাংশটিই সংকরে α দশার ভর ভগ্নাংশ।
হিসাবসম্পাদনা
বাইনারি ফেজ ডায়াগ্রামসম্পাদনা
প্রতিটি উপাদানের ভর ভগ্নাংশ বের করার জন্য শুরুতে ফেজ ডায়াগ্রামে একটি টাই লাইন টানা হয়; যা ডানের ফেজ ডায়াগ্রামে রেখাংশ LS দ্বারা নির্দেশিত হচ্ছে। এই টাই লাইনটি নির্দিষ্ট সংযুতির (কম্পোজিশন) জন্য নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় অনুভূমিক ভাবে এক দশা থেকে অন্য দশা পর্যন্ত টানা হয় (এক্ষেত্রে তরল থেকে কঠিন পর্যন্ত)। লিকুইডাস রেখার উপর উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশের পরিমাণ wBl (চিত্রে wl দ্বারা দেখানো হয়েছে) এবং সলিডাস রেখার উপর উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশ wBs (চিত্রে ws দ্বারা দেখানো হয়েছে)। কঠিন এবং তরলের ভর ভগ্নাংশ নিম্নের লিভার রুল সমীকরণ ব্যবহার করে হিসাব করা যেতে পারে:[২]
যেখানে wB প্রদত্ত সংযুতির (কম্পোজিশন) জন্য উপাদান B এর ভর ভগ্নাংশ (চিত্রে wo দ্বারা দেখানো হয়েছে)।
ভগ্নাংশটির লব কোন সংযুতির জন্য (কম্পোজিশন) লিভারের বিপরীত বাহু দিয়ে নির্দেশিত হয়। উদাহরণ হিসেবে যদি কঠিন দশার ভর ভগ্নাংশ বের করতে বলা হয়, তাহলে সংকরের প্রকৃত সংযুতি (কম্পোজিশন) ও তরলের সংযুতির (কম্পোজিশন) বিয়োগফল কে লিভারের সম্পূর্ণ বাহুর দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করার মাধ্যমে পাওয়া যায়। যদি বুঝতে সমস্যা হয় কেন এমনটা হয় তাহলে এভাবে চিন্তা করা যেতে পারে, যখন wo যত wl এর দিকে অগ্রসর হয় সংকরে তরলের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
ইউটেকটিক ফেজ ডায়াগ্রামসম্পাদনা
এই ধরনের ফেজ ডায়াগ্রামে একাধিক দ্বি-দশা অঞ্চল থাকে। টাই লাইনটি আলফা সলিড দশা থেকে থেকে তরল পর্যন্ত আঁকা হয়েছে। এই রেখার কোন নির্দিষ্ট বিন্দুতে একটি উল্লম্ব রেখা এঁকে সরাসরি লেখচিত্র থেকে x অক্ষের উপাদানের ভর ভগ্নাংশ বের করা যায়। একই সমীকরণ ব্যবহার করে কোন দশায় সংকরের ভর ভগ্নাংশ বের করা যায়, যেমন wl তরল দশায় সম্পূর্ণ নমুনার ভর ভগ্নাংশ নির্দেশ করে।[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ F.C. Campbell (২০১২)। Phase Diagrams: Understanding the Basics। United States: ASM International। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 978-1-61503-835-0।
- ↑ Smith.h, William F. halkias; Hashemi, Javad (২০০৬)। Foundations of Materials Science and Engineering (4th ed.)। McGraw-Hill। পৃষ্ঠা 318–320। আইএসবিএন 0-07-295358-6।
- ↑ Callister, William D., Rethwisch, David (২০০৯)। Materials Science and Engineering An Introduction (8th ed.)। Wiley। পৃষ্ঠা 298–303। আইএসবিএন 978-0-470-41997-7।