লা বাত্তালিয়া দি আলজেরি

লা বাত্তালিয়া দি আলজেরি (আলজেরির যুদ্ধ) ১৯৬৬ সালে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র। জিল্লো পন্তেকোর্ভো ছবিটির পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন জঁ মার্তেসাদি ইয়াসেফআলজেরীয় যুদ্ধে উত্তর আফ্রিকায় ফরাসি সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সংগ্রামের চিত্রই এখানে ফুটে ওঠেছে। আলজিয়ার্সের যুদ্ধ এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আলজিয়ার্স আলজেরিয়ার রাজধানী। আলজিয়ার্সেই ছবিটির চলচ্চিত্রায়ন হয়। এন্নিও মোরিকোনে এর আবহসংগীত রচনা করেন। রোবার্তো রোসেলিনির কাজ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিউজরিল শৈলী অনুযায়ী ছবিটি নির্মিত হয়। ঐতিহাসিকভাবে ছবিটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার অংশ হিসেবে ডকুমেন্টারির মত করে নির্মাণ করা হয়। এর অভিনেতারাও অনেকক্ষেত্রে পেশাদার অভিনেতা ছিলেন না। ইতালীয় নব্যবাস্তবতাবাদী ধারার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে ছবিটি বিবেচিত হয়।[২]

লা বাত্তালিয়া দি আলজেরি
পরিচালকজিল্লো পন্তেকোর্ভো
প্রযোজকআন্তোনিও মুসু
সাদি ইয়াসেফ
রচয়িতাজিল্লো পন্তেকোর্ভো
ফ্রাঙ্কো সোলিনাস
শ্রেষ্ঠাংশেজঁ মার্তে
সাদি ইয়াসেফ
ব্রাহিম হাগিয়াগ
টমমাসো নেরি
সুরকারএন্নিও মোরিকোনে
জিল্লো পন্তেকোর্ভো
চিত্রগ্রাহকমারচেল্লো গাত্তি
সম্পাদকমারিও মোররা
মারিও সেরান্দ্রেই
পরিবেশকরিজ্জোলি, রিয়াল্তো পিকচার্স
মুক্তি
  • ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬ (1966-09-08) (আলজেরিয়া)
স্থিতিকাল১২০ মিনিট
দেশইতালি
আলজেরিয়া
ভাষাআরবি
ফরাসি
নির্মাণব্যয়$৮০০,০০০
আয়$৮৭৯,৭৯৪ (ঘরোয়া)[১]

১৯৫৪-১৯৫৭ সালে স্বাধীনতাসংগ্রামে বিপ্লবী নেতা আলি লা পোঁতের আখ্যানই প্রধানত এ ছবিতে চিত্রিত হয়েছে। জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টের (এফএনএল) রাজনৈতিক নেতারা পুনর্গঠিত হয়ে কাসবাহ-তে রাজনৈতিক কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ঘটান। কিন্তু ফরাসি ছত্রীসেনারা তাদের উপর আক্রমণ করে। এটি একটি অত্যন্ত নাটকীয় চলচ্চিত্র, যাতে গেরিলা আন্দোলন ও একে দমন করতে ঔপনিবেশিক শক্তি- অবৈধ পদ্ধতি, যেমন নির্যাতনের প্রয়োগ বর্ণিত হয়েছে। আলজেরিয়া ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করতে সক্ষম হয়। পন্তেকোর্ভো ছবির উপসংহারে এটি উল্লেখ করেছেন।[৩]

ছবিটি সমালোচকদের কাছে নন্দিত হয়েছে। বিদ্রোহী দল ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ একে নগরভিত্তিক গেরিলা যুদ্ধের উপর গুরুত্বপূর্ণ ধারাভাষ্য হিসেবে আখ্যা দেয়। সাইট অ্যান্ড সাউন্ডের জরিপ অনুযায়ী বিশ্বের সেরা ২৫০টি ছবির মধ্যে ৪৮তম।[৪]এম্পায়ার ম্যাগাজিনের সেরা ৫০০ চলচ্চিত্রের তালিকায় এটি ১২০তম স্থান দখল করেছে।[৫] ১০০টি সংরক্ষণীয় ইতালীয় ছবির ১টি হিসেবেও এটি তালিকাভুক্ত হয়েছে।

সামাজিক ও রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু চলচ্চিত্রটি মুক্তির পাঁচ বছর পরেও দেখানো হয়নি। অবশেষে ১৯৭১ সালে ছবিটি মুক্তি পায়।[৬]

কাহিনীসংক্ষেপ সম্পাদনা

১৯৫৪ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৫৭ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন ফরাসি আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে স্বাধীনতাযুদ্ধের যেসব ঘটনা সংঘটিত হয়, সেগুলোই এ চলচ্চিত্রের উপজীব্য। কাসবাহ শহরে বিপ্লবীরা তাদের সংগঠনের শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ও পিয়েদ-নোয়াঁ (আলজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি) পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ফরাসি সেনাবাহিনী এফএনএলকে দমন করার চেষ্টা করে। গুপ্তহত্যা কিংবা গ্রেপ্তার/নির্যাতনের মাধ্যমে এফএনএল নেতৃত্বকে ফরাসি ছত্রীসেনারা প্রতিহত করে। চলচ্চিত্রের সমাপ্তিতে দেখানো হয়, চারদিকে জাতীয়তাবাদী দাঙ্গা ও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এর অর্থ হলো- ফ্রান্স আলজিয়ার্সের যুদ্ধ জিতেছে ঠিকই, কিন্তু আলজেরিয়ার স্বাধীনতাযুদ্ধে জয়লাভ করতে পারেনি।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "The Battle of Algiers (1967) - Box Office Mojo"www.boxofficemojo.com 
  2. Shapiro, Michael J. (১ আগস্ট ২০০৮)। "Slow Looking: The Ethics and Politics of Aesthetics: Jill Bennett, Empathic Vision: Affect, Trauma, and Contemporary Art (Stanford, CA: Stanford University Press, 2005) Mark Reinhardt, Holly Edwards, and Erina Duganne, Beautiful Suffering: Photography and the Traffic in Pain (Chicago, IL: University of Chicago Press, 2007) Gillo Pontecorvo, director, The Battle of Algiers (Criterion: Special Three-Disc Edition, 2004):"Millenniumডিওআই:10.1177/0305829808093770 – journals.sagepub.com-এর মাধ্যমে। 
  3. "The Battle of Algiers | Film | The Guardian"the Guardian 
  4. "Sight & Sound 2012 critics top 250 films | BFI | British Film Institute"web.archive.org। ১৯ আগস্ট ২০১২। ১৯ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০২০ 
  5. http://www.empireonline.com/500/76.asp
  6. Caillé, Patricia (১ নভেম্বর ২০০৭)। "The Illegitimate Legitimacy of the Battle of Algiers in French Film Culture"Interventions9 (3): 371–388। ডিওআই:10.1080/13698010701618604 – Taylor and Francis+NEJM-এর মাধ্যমে। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা