রাম চেত চৌধুরী হলেন একজন ভারতীয় কৃষি বিজ্ঞানী[১][২] তিনি বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, জাতিসংঘ খাদ্য কর্মসূচী প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন।[৩]

রাম চেত চৌধুরী
জন্ম
মাতৃশিক্ষায়তনদীন দয়াল উপাধ্যায় গোরাখপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (বি.এগ.)
আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় (এম.এগ./পিএইচডি)
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি মিউনিখ (পোস্টডক্টরাল)
পরিচিতির কারণধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রকৃষি
প্রতিষ্ঠানসমূহফাও, জাতিসংঘ
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম (১৯৭০)

জন্ম ও শিক্ষাজীবনী সম্পাদনা

রাম চেত চৌধুরী ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরাখপুরে জন্মগ্রহণ করেন এবং এখানেই শিক্ষা লাভ করেন।[৩] চৌধুরী ১৯৫৯ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা সমাপ্ত করে দীন দয়াল উপাধ্যায় গোরাখপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং এখান থেকে ১৯৬৩ সালে কৃষি বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[৩] এরপর তিনি আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭০ সালে জেনেটিক্স এবং প্লান্ট ব্লিডিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৩] এরপর তিনি ১৯৭৫ সালে জার্মানির মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি হতে এবং ১৯৮০ সালে ফিলিপাইনের আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে পোস্টডক্টরাল সম্পন্ন করেন।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৬৯ সালে গোবিন্দ বল্লভ পান্ত ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং একাদিক্রমে ১০ বছর এখানে সহযোগী অধ্যাপক ও সহযোগী পরিচালক পদে কর্মরত থেকে ১৯৭৯ সালে ড: রাজেন্দ্র প্রসাদ সেন্ট্রাল এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটি, পুসা, বিহারে প্রধান বিজ্ঞানী হিসাবে যোগদান করে প্রফেসর ও আঞ্চলিক পরিচালক হন।[৩] এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ফাও-এ কাজ করে ২০০৬ সালে অবসরগ্রহণ করেন।[৩]

তিনি ভারতের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করাকালীন কৃষি বিষয়ক তার কাজগুলি বিশ্বের বিভিন্ন জার্নাল জুড়ে প্রকাশিত হয়েছে এবং তার লেখা বহু ভারতীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যক্রমের অংশ। তিনি নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, মায়ানমারের পাশাপাশি ভারতে ধান ও অন্যান্য ফসলের উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি উদ্ভিদ প্রজননের উপর একটি পাঠ্যপুস্তক লিখেছেন, যা ১৯৮২ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস হতে প্রকাশিত হয়েছিল এবং ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ৪ বার পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। ২০০১ সালে ফাও (FAO) ধানের জাতগুলোর উপর তার করা একটি বিস্তৃত কাজ প্রকাশ করে।

তিনি ১৯৯৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অংশগ্রহণমূলক পল্লী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (Participatory Rural Development Foundation (PRDF - পিআরডিএফ) প্রতিষ্ঠা করেন এবং বর্তমানে এর চেয়ারম্যান। পূর্বে তিনি ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক ফর দ্য জেনেটিক ইভালুয়েশন অফ রাইস (INGER)-এর সমন্বয়কারী ছিলেন।[৪]

পুরস্কার ও সম্মননা সম্পাদনা

ভারতের উত্তর প্রদেশের ভূমিতে উত্পাদন উপযোগী চমৎকার ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য রাম চেত চৌধুরীকে ১৯৭৪ সালে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড: রাজেন্দ্র প্রসাদের নামানুসারে প্রবর্তিত "ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ সম্মননা" প্রদান করা হয়। ২০০০ সালে বিশ্বের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় ধান বিশেষজ্ঞদের সাথে রাম চেত চৌধুরীকেও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন কর্তৃক "বিশিষ্ট সহযোগিতা সম্মননা" প্রদান করা হয়।[৫] ২০১৭ সালে ড. এম.এস. স্বামীনাথন, ড. আর.এস. পরোদা ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ রাম চেত চৌধুরীকে "আইএসপিজিআর ফেলো" সম্মাননা দেন। ২০১৮ সালে ডাঃ রাম চেত চৌধুরীকে ইন্দো-নেপাল সাম্রাস্তা সংস্থা প্রধানমন্ত্রী মিঃ অলি, উপ-প্রধানমন্ত্রী মিঃ যাদব এবং অন্যান্যদের উপস্থিতিতে কাঠমান্ডুতে "কারম রত্ন পুরস্কার" প্রদান করে।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. International Rice Research Institute (২০০২)। Rice today, Volume 1। পৃষ্ঠা 16। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১১ 
  2. Tyagi, B. K.; R. C. Chaudhary (জুলাই ১৯৯৭)। "Outbreak offalciparummalaria in the Thar Desert (India), with particular emphasis on physiographic changes brought about by extensive canalization and their impact on vector density and dissemination"। Journal of Arid Environments36 (3): 541–555। ডিওআই:10.1006/jare.1996.0188বিবকোড:1997JArEn..36..541T 
  3. "Dr. Ram Chet Chaudhary" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ 
  4. "Participatory Rural Development Foundation (PRDF)"। ৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২৪ 
  5. International Rice Research Notes Vol. 25, No. 3, December 2000 (p42) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৭-০৭-১৩ তারিখে
  6. [Indo-Nepal Samrasta News 2018]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা