রাজী নারায়ণ হলেন একজন নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী এবং সুরকার। তিনি ভারতের মুম্বাইতে বাস করেন। তিনি 'নৃত্য গীতাঞ্জলি'র প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক। এটি মুম্বাইয়ের একটি নৃত্য বিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার্থীদের ভরতনাট্যম, কর্ণাটকী সংগীত এবং নাট্টুভঙ্গমে (নান্দনিক প্রভাব সহ নৃত্য উপস্থাপন) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও এখানে ভরতনাট্যমের জন্য মুখ সজ্জা এবং কেশ বিন্যাস শেখানো হয়। [১]

রাজী নারায়ণ
জন্ম (1931-08-19) ১৯ আগস্ট ১৯৩১ (বয়স ৯২)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশানৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী এবং সুরকার

গঠনমূলক বছরগুলি সম্পাদনা

রাজী নারায়ণ ১৯৩১ সালের ১৯শে আগস্ট চেন্নাইতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এস. নারায়ণ আয়ার ও গঙ্গাম্মলের একাদশতম সন্তান ছিলেন। শৈশবেই তিনি চারুকলা সম্বন্ধে অত্যন্ত স্বচ্ছন্দ ছিলেন। তাঁর বাবা চারুকলার ক্ষেত্রে একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি তাঁর নিজের প্রযোজনার মঞ্চায়ন করেছিলেন, এমনকি চলচ্চিত্র নির্মাণও করেছিলেন। তাঁর বড় পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য তার অধিকাংশ ভূমিকায় অভিনয় করতেন। মাত্র সাড়ে চার বছর বয়সী রাজী তেলুগু গান 'নেরামিঞ্চাকুরা' রেকর্ড করে ছিলেন। ১৯৩৭-৩৮-এর দিকে তিনি তাঁর বাবার প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলিতে অভিনয় করেছিলেন এবং গানও গেয়েছিলেন, এগুলির মধ্যে ছিল শক্তি মায়া, বাল ভক্তন, ও সন্ত একনাথ। এগুলিতে প্রধান ভূমিকা তাঁরই ছিল এবং গানগুলিও তিনি নিজেই গেয়েছিলেন।

রাজী তাঁর বড় দিদি নীলা বালসুব্রমণ্যম এবং কে ললিতার কাছে ৫ বছর বয়স থেকে ভরতনাট্যম শিখতে শুরু করেছিলেন। নীলা ছিলেন নটরাজ নাট্য নিকেতনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং ললিতা ছিলেন শ্রী সরস্বতী গণ নিলয়মের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক। [২] সাত বছর বয়সে রাজী কর্ণাটকী সংগীত শিখতে শুরু করেছিলেন তাঁর আর এক দিদি সুলচনা মহাদেবনের কাছ থেকে, এছাড়াও তুরাইউর রাজগোপাল সরমা এবং ভি.ভি. সাদগোপালান তাঁকে কর্ণাটকী সংগীত শিখিয়েছিলেন।[৩] নয় বছর বয়সে ভরতনাট্যমে তাঁর আরঙ্গেত্রম (প্রথম মঞ্চ প্রবেশ) হয় এবং কর্ণাটকী সংগীতে হয় চোদ্দ বছর বয়সে।[২]

কর্ম জীবন ও রচনাসমূহ সম্পাদনা

তিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ডের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। চারুকলার স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্সে (বিএফএ এবং এমএফএ)ডিগ্রি পরীক্ষার্থী এবং পিএইচডি জন্য গবেষণার পত্রের পরীক্ষক হিসাবে তিনি কাজ করেছেন।[৪] নারায়ণ ভরতনাট্যমের জন্য ২০০ টিরও বেশি গান রচনা করেছেন এবং এর কয়েকটি গ্রন্থ তাঁর নৃত্য গীতমালা (২ খণ্ড)তে প্রকাশ করেছেন। তিনি সংগীত শাস্ত্র মালা নামে কর্ণাটকী সংগীতের মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে একটি বইও প্রকাশ করেছেন। নাট্য শাস্ত্রের মূল বিষয়গুলি ব্যাখ্যা করে একটি বই নাট্যশাস্ত্র মালা তিনি লিখেছিলেন। শ্রীমতী রাজী নারায়ণ তাঁর কর্ম জীবনের শুরুতে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে যোগ দিয়েছিলেন এবং কর্ণাটকী সংগীতশিল্পী হিসাবে নাম অর্জন করেছিলেন। একই সাথে, তিনি একজন ভারতনাট্যম শিক্ষক হিসাবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, মুম্বইয়ে তাঁর বিদ্যালয় নৃত্য গীতঞ্জলিতে নৃত্যশিল্পীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এখানে তিনি ভরতনাট্যম এবং কর্ণাটকী সংগীতে কর্মশালা এবং বক্তৃতা-প্রদর্শনী পরিচালনা করেছেন, এবং তিরুমায়িলাই কুরাভানজী, তিরুমাল আঝাগর, ভাল্লিমালাই কুরাভানজি, রাধা কা শ্যাম, কুদরত, পারিজাতম, এবং কৃষ্ণ লীলাসহ অনেক নৃত্যনাট্যের নৃত্য পরিকল্পনা করেছেন। তিনি দেশ বিদেশে বিভিন্ন নৃত্যের উৎসব এবং সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।[৩]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তিনি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্মানিত বেশ কয়েকটি সম্মানের প্রাপক। শ্রীমতী রাজী নারায়ণ ভরতনাট্যমে তাঁর অবদানের জন্য সংগীত নাটক অকাদেমির ঠাকুর পুরস্কার পেয়েছেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "A balancing act"The Indian Express। ১২ জুন ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১০ 
  2. "Rajee Narayan"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Rajee Narayan"। ৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২০ 
  4. "Rajee Narayan"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা