রবার্ট ব্রাউন (উদ্ভিদবিজ্ঞানী)
রবার্ট ব্রাউন এফআরএসই এফআরএস এফএলএস এমডব্লিউএস (২১ ডিসেম্বর ১৭৭৩ - ১০ জুন ১৮৫৮) ছিলেন একজন স্কটিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও জীবাশ্মবিজ্ঞানী। তিনি কোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমীয় প্রবাহের বিস্তৃত বর্ণনা প্রদান করেন। তিনি ব্রাউনীয় গতি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি উদ্ভিদের পরাগায়ন ও বংশবৃদ্ধি সম্পর্কে বিস্তারিত অধ্যয়ন করেন। ব্রাউন শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যায়ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি অনেক নতুন গোত্রের ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও ব্রাউন অনেক অস্ট্রেলীয় উদ্ভিদ গণ ও প্রজাতির নামকরণ করেন। ম্যাথু ফ্লিন্ডার্সের সঙ্গে ব্রাউন ওশেনীয় মহাদেশ গমন করেন।
রবার্ট ব্রাউন | |
---|---|
![]() হেনরি উইলিয়াম পিকার্সগিল অঙ্কিত প্রতিকৃতি | |
জন্ম | মন্টরোজ, স্কটল্যান্ড | ২১ ডিসেম্বর ১৭৭৩
মৃত্যু | ১০ জুন ১৮৫৮ | (বয়স ৮৪)
জাতীয়তা | স্কটিশ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয় এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | ব্রাউনীয় গতি |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | উদ্ভিদবিজ্ঞান |
Author abbrev. (botany) | R.Br. |
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
ব্রাউন ১৭৭৩ সালের ২১ ডিসেম্বর মন্ট্রোজে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি যেখানে অবস্থিত, বর্তমানে সেখানে মন্ট্রোজ গ্রন্থাগার অবস্থিত। তার বাবা জেমস ব্রাউন স্কটিশ এপিস্কোপাল চার্চের একজন পুরোহিত ছিলেন। ১৭৮৮ সালে জেমস রাজা দ্বিতীয় জর্জের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান। শৈশবে রবার্ট ব্রাউন স্থানীয় ব্যাকরণ স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি এবারডিনের মারিশাল কলেজে ভর্তি হন। ১৭৯০ সালে ব্রাউনের পরিবার এডিনবরা গমন করলে তার পড়ালেখায় আংশিক ছেদ পড়ে। পরের বছরই তার বাবা পরলোকগমন করেন। [২]
রবার্ট ব্রাউন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে ভর্তি হলেও ক্রমশই উদ্ভিদবিজ্ঞান অধ্যয়নে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি জন ওয়াকারের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে প্রদত্ত বক্তৃতা শ্রবণ করেন এবং স্কটল্যান্ডের উচ্চভূমিতে অভিযান পরিচালনা করেন। একসময় ব্রাউন ও খ্যাতনামা ব্রিটিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী উইলিয়াম উদারিংয়ের সাক্ষাৎ হয়। এ সময় ব্রাউন ঘাসের নতুন প্রজাতি Alopecurus alpinus আবিষ্কার করেন। তিনি অ্যাঙ্গাসের উদ্ভিদবৈজ্ঞানিক ইতিহাস সম্বন্ধে ১৭৯২ সালে এডিনবরা প্রাকৃতিক ইতিহাস সমিতির সম্মুখে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তবে তার জীবদ্দশায় এটি প্রকাশিত হয়নি।
১৭৯৩ সালে ব্রাউন চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন ছেড়ে দেন। ১৭৯৪ সালে তিনি ফায়ারসাইফ ফেন্সিবল-এ যোগদান করেন এবং ১৭৯৫ সালের জুনে সার্জনস মেট নিযুক্ত হন।
ব্রাউন পরবর্তীতে ক্রিপ্টোগ্রাম সম্বন্ধে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। জেমস ডিকসনকে পত্রালাপের মাধ্যমে তিনি মসের নমুনা ও বর্ণনা প্রদান করেন। ডিকসন ১৭৯৬ সালে ব্রাউনের নামোল্লেখ ব্যতিরেকেই (যদিও অনুমতি গ্রহণ করেছিলেন) ফাসকুলি প্লান্টারাম ক্রিপ্টোগামিকারাম ব্রিটানিয়াম গ্রন্থে এসব ফলাফল লিপিবদ্ধ করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় গমনসম্পাদনা
১৭৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে একটি বৈজ্ঞানিক অভিযাত্রার সূচনা হয়। প্রকৃতিবিদ ম্যাঙ্গো পার্ক সেখানে যোগদান করার সম্মতি দিলেও পরবর্তীতে তিনি অস্ট্রেলিয়া গমনে অস্বীকৃতি জানান। তাই একজন প্রকৃতিবিদের দরকার অনুভূত হয়। ব্রাউন তার শূন্যপদে নিয়োগ পান।
যে জাহাজে করে অভিযাত্রা সম্পন্ন হয়, তার নাম ছিল দ্য ইনভেস্টিগেটর। ১৮০১ সালের ১৮ জুলাই এটি লন্ডন থেকে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ১৬ অক্টোবর এটি উত্তমাশা অন্তরীপে এসে থামে এবং দুই সপ্তাহ সেখানে অবস্থান করে। সেখানে ব্রাউনের সঙ্গে উদ্ভিদবিজ্ঞানী উইলিয়াম হেনরি হার্ভের দেখা হয়।
১৮০১ সালের ডিসেম্বরে জাহাজটি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় এসে পৌঁছায়। সাড়ে তিন বছর যাবৎ ব্রাউন অস্ট্রেলিয়ায় ৩৪০০ প্রজাতির উদ্ভিদ সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে ২০০০ প্রজাতির অস্তিত্ব পূর্বে জানা ছিল না। ১৮০৫ সালের মে মাস পর্যন্ত ব্রাউন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করেন। তিনি সংগৃহীত হাজারো উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করেন।
পরবর্তী জীবনসম্পাদনা
ব্রাউন ১৮৪৯ থেকে ১৮৫৩ সাল পর্যন্ত লিনীয় সমিতির সভাপতি ছিলেন। ১৮৫৮ সালের ১০ জুন তিনি লন্ডনের সোহো সরণির ১৭ ডিন স্ট্রিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি লন্ডনের কেনসাল গ্রিন কবরস্থানে সমাহিত রয়েছেন।
ব্রাউনীয় গতিসম্পাদনা
ক্লারকিয়া পুলচেলা উদ্ভিদে ১৮২৭ সালে ব্রাউন অবিচ্ছিন্ন কম্পনরত দশা পর্যবেক্ষণ করেন। অজৈব পদার্থেও ব্রাউন একই রকম গতি লক্ষ্য করেন। এটি ব্রাউনীয় গতি নামে পরিচিত।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
জীবনী বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |