রজওয়েলের ঘটনাটি ঘটেছিলো রজওয়েলের (নিউ মেক্সিকো, আমেরিকার) শহরে, ৮ জুলাই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে। নিউ মেক্সিকো, রজওয়েলের মরুভূমিতে একটি অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তুর (UFO) ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী এবং সরকার এই ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায় যে, এগুলো একটি পরীক্ষামূলক বস্তুর ধ্বংসাবশেষ এবং একে উচ্চ সতর্ককারী বেলুনে শ্রেণীকৃত করে, এই প্রোগ্রামটি "মুগুল"[] নামকরণ করা হয়েছিলো। সেখানে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিলো তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। অনেক ইউএফও (UFO) বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ জনগণ মনে করেন যে, এটি একটি ভিনগ্রহী মহাশূন্যযান যা এখানে ধ্বংস হবার পরে এর পাইলটের (এলিয়েন) দেহ পুনরুদ্ধার করে সামরিক বাহিনী তা লুকিয়ে ফেলেছে।

রজওয়েলের ইউএফও-এর ঘটনা
রজওয়েল ডেইলি রেকর্ড, জুলাই ৮, ১৯৪৭, একটি "উড়ন্ত বস্তু" "আটকের" ঘোষণা
তারিখ১৯৪৭
অবস্থানলিঙ্কন কাউন্টি, নিউ মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
স্থানাঙ্ক৩৩°৫৮.১′ উত্তর ১০৫°১৪.৬′ পশ্চিম / ৩৩.৯৬৮৩° উত্তর ১০৫.২৪৩৩° পশ্চিম / 33.9683; -105.2433
"রোসওয়েল UFO জাদুঘর, যেটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক গন্তব্য।"

উইএফও'র ঘটনাটি একটি বিস্তির্ণভাবে পরিচিত জনসংস্কৃতি হয়ে যায় এবং রজওয়েল নাম পরিবর্তন হয়ে একে ইউএফও রজওয়েল বলা হয়। ভিনগ্রহী প্রাণী ধরার ব্যাপারটা তখন মিডিয়া এবং গবেষকদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো।[] রজওয়েলের ঘটনাকে "বিশ্বের সর্বাধিক বিখ্যাত, সবচেয়ে নিখুঁতভাবে তদন্ত করা হয়েছে, এবং ইউএফও প্রত্যক্ষনের দাবির সর্বাধিক প্রমাণ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়।

প্রেক্ষাপট

সম্পাদনা

রজওয়েল, নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে একটি শহর, ১ জুলাই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে, রাত্রিতে একটি প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতের সময় "৫০৯তম বোমারু দল"-এর বিমান ঘাঁটির রাডারে একটি অদ্ভুত ঘটনা ধরা পড়েছিলো। রাডারে পর্দার এক কোণায় বার বার একটি বস্তু দেখা যাচ্ছিলো। এটি এমন গতিতে যাচ্ছিলো যে, ওই সময়ের সেনাবাহিনীর বিমানগুলোও (বর্তমান গতিরোধক বিমানগুলোও) সেই গতিতে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারতো না। রাডারের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বজ্রপাতের মতো দিক পরিবর্তন করতে দেখা যায়। এটি ছিলো ব্যাখ্যাতীত বিষয়, তারা রাডারের দ্বারা উৎ‍পাদিত তড়িৎ-চুম্বকীয় সমস্যার জন্য রাডার পরীক্ষা করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে রাডারে একি জিনিস লক্ষ করা হলো যে, এটি আগের মতোই বজ্রপাতের মতো দিক পরিবর্তন করছে। তারা ভেবেছিলো যে, কোনো সত্যিকার বস্তু, বিপদজনকভাবে অজানা এবং সম্ভবত যুদ্ধপ্রিয় যা তাদের আকাশসীমা পার করছিলো। পরে ৮ জুলাই তারিখে, রজওয়েল দৈনিক রেকর্ড নামে একটি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় প্রকাশ[] করেছিলো যে, "রজওয়েলের খামার অঞ্চলে আরএএএফ উড়ন্ত বস্তু ধরা পড়েছে"। ঘটনাটি অন্যান্য স্থানীয় সংবাদপত্রতেও দেখা গিয়েছিলো। ঐ বছর ৮ জুলাইতে, বিমান বাহিনীর রেডিও এবং সংবাদপত্রতে ঘোষণা করা হয়েছিলো যে, রহস্যময় দূর্ঘটনাটি একটি উড়ন্ত বস্তুর দ্বারা ঘটেছিলো। এই ঘটনাটির জন্য রজওয়েল শহরে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI) এসেছিলো ব্যাপারটি পরীক্ষা করার জন্য। বিতর্কের কিছু দিন পরে, রজওয়েল সামরিক বাহিনীরা একটি বেলুনের ছিন্নাংশ দেখিয়েছিলো, যেটি মুগুল নামের প্রোগ্রামটির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো। এ সিস্টেমটি পারমাণবিক ক্ষেত্রের ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। কতিপয় বছরগুলোতে রজওয়েলের বাসিন্দাদের থেকে বিভিন্ন সংবাদ এসেছে বিমান বাহিনী এবং ফেডারেলের সম্বন্ধে। কিছু লোক বলেছিল যে, "কখনও কখনও বিমান বাহিনীর কমর্চারীরা ধ্বংসাবশেষ এবং ফেডারেলের ট্রাকে দেহ (মানুষের না) বহন করে"। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের দ্বারা এগুলো সব অস্বীকার করা হয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের বয়ান:

" Roswell UFO Crash ( রজওয়েল ইউএফও ঘটনা )" শীর্ষক আর্টিকেলে প্যান্টাগনের কাউন্টার-ইনটেলিজেন্স অফিসার ল্যু এলিজোন্ডোর সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত গ্রন্থে তাঁর সাথে সিআইএ বিজ্ঞানী Dr. Hal Puthoff (ড. হাল পুথফ)-এর কথোপকথন লেখক (ইশতিয়াক) অনুবাদ করেছেন , যা নিম্নরূপ: [][]

ড. হাল: "বেশ, সবকিছুর শুরু ১৯৪৭ সালে রসওয়েল থেকে।"

এলিজোন্ডো: " দাঁড়ান, রসওয়েল কাহিনীটা সত্য? "

ড. হাল কিছুক্ষণ চিন্তাভাবনা করে বললেন: " হ্যাঁ, ওটা আসল ছিল ।"

এলিজোন্ডো: " আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আসলেই একটা UFO ক্র্যাশ হয়েছিল এবং সেটা লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল? "

ড. হাল: " এটা আসলেই সংঘটিত হয়েছিল। " হাল আরো বললেন: " 4 টি Non-human বডি ১৯৪৭ সালের রসওয়েল ক্র্যাশ হতে উদ্ধার করা হয়েছিল।"

ড. হাল একজন কোয়ান্টাম পদার্থবিদ। উক্ত কথোপকথন এমাজনের বেস্ট সেলার গ্রন্থ " ইমিনেন্ট " হতে নেওয়া, যা ২০২৪ সালে প্রকাশিত, ল্যু এলিজোন্ডো ২০২৪ সালের নভেম্বরে ইউএফও শুনানির অন্যতম সাক্ষী।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. United States Air Force (Col. Richard L. Weaver, USAF; 1st LT. James McAndrew, USAFR), The Roswell Report: Fact versus Fiction in the New Mexico Desert (1995)
  2. B.D. Gildenberg. "A Roswell Requiem". Skeptic 10-1 (2003).
  3. "RAAF CAPTURES FLYING SAUCER ON RANCH IN ROSWELL REGION" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ জুন ২০০৪ তারিখে, এটি শিরোনাম ছিলো।
  4. RID, IŠTIYĀQ MAHMŪD (২০২৪-১১-০৬)। রসওয়েল ইউএফও ক্র্যাশ , রজওয়েল ইউএফও UFO , Istiak Mahmud 
  5. Elizondo, Luis (২০২৪-০৮-২০)। Imminent: Inside the Pentagon's Hunt for UFOs (ইংরেজি ভাষায়)। Kings Road Publishing। আইএসবিএন 978-1-78946-605-8 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা