যুগ্ম শব্দ বা জোড়া শব্দ হলে দুটো আলাদা শব্দ একসঙ্গে পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় বিশেষ অর্থ বোঝাবার জন্যে অথবা কোনো অর্থের ওপরে জোর দেবার জন্যে। শুক-সারি হলো যুগ্ম শব্দ বা জোড়া শব্দ। এখানে দুটো শব্দেরই আলাদা অর্থ বর্তমান থেকে পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় বিশেষ অর্থে। শুক ও সারি হলো শুক-সারি, কিন্তু এরা সমাসবদ্ধ নয়।

উদাহরণ সম্পাদনা

আকাশ পাতাল, আপদ বিপদ, আসমান জমিন, আসা যাওয়া, উত্থান পতন, কচি কাঁচা, কথা বার্তা, কাঁচা মিঠে, কামিনী কাঞ্চন, গ্রহ তারা , চন্দ্র - সূর্য , জোয়ার ভাটা, জীবন মরণ, জীবন মৃত্যু, ঝড়-বৃষ্টি, টাকা পয়সা, ডাকিনি যোগিনী, তাল তমাল, নদী নালা, নন্দী ভৃঙ্গী, নয় ছয়, নাওয়া খাওয়া , বাদ প্রতিবাদ, বিকি কিনি, বেলা অবেলা, ভাঙ্গা গড়া, মান অপমান, মেরে কেটে, মৌন মুখর, রাক্ষস খোক্ষস, রাগ অনুরাগ, রাগ রাগিনী, রাত দিন, লাফ ঝাপ, হংস মিথুন, শাল পিয়াল, শুক সারি , সাঁঝ সকাল, সুখ দুক্ষ, সুর অসুর।

যুগ্ম শব্দ নয় সম্পাদনা

দুটো শব্দ সমাস বদ্ধ হবার পরে একক পদ হিসেবে ব্যবহার করে এবং সেক্ষেত্রে সেই পদ একটা তৃতীয় অর্থ বহন করে যেখানে সমাস বদ্ধ হবার আগের শব্দ দুটোর আলাদা মানে আর বর্তমান থাকে না। সেই মত রবি-কিরণ হলো রবির কিরণ যেখানে সমাস বদ্ধ হবার পরে রবি আর কিরণ এর আলাদা অর্থ বর্তমান থাকে না। সেই ভাবেই বিধূ-মুখী, সূর্য-সাক্ষী, তুষার-ধবল এই ধরনের শব্দগুলো যুগ্ম শব্দ হবে না কারণ এগুলো সমাস বদ্ধ পদ।

বিপরীত লিঙ্গ অর্থে দ্বন্দ্ব সমাস বদ্ধ পদ হলো জায়া ও পতি মিলে দম্পতি। সমাস বদ্ধ হয়ে যাবার পরে দম্পতির একটা তৃতীয় অর্থ দাড়ায় এবং একক পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নট ও নটী মিলে হলো নট-নটী যেটা যুগ্ম শব্দ বা নন্দী ও ভৃঙ্গী মিলে নন্দী-ভৃঙ্গী। কিন্তু যিনি রাম তিনি ই কৃষ্ণ সমাস বদ্ধ হবার পরে রামকৃষ্ণ হলে আর যুগ্ম শব্দ থাকে না. কারণ এখানে রামকৃষ্ণ তৃতীয় একজনকে নির্দেশ করছে। জোড়া শব্দ পাশাপাশি ব্যবহৃত কিন্তু সমাস ই বদ্ধ হয় না।

উদাহরণ সম্পাদনা

অদল-বদল, জল-টল, খাওয়া-দাওয়া, আদার-বাদার এই ধরনের শব্দ গুলো যুগ্ম শব্দ নয়। এক্ষেত্রে একটা শব্দের কোনো অর্থ থাকে না কিন্তু ধ্বনি গত মিল থাকার জন্যে অন্য অর্থ যুক্ত শব্দ টির সঙ্গে একসঙ্গে ব্যবহৃত হয় বা উচ্চারিত হয়। এগুলোকে অনুকারী শব্দ বলে।

মেঘে