মোন্তে আগিলা

চিলিতে শহর

মোন্তে আগিলা (স্পেনীয়: Monte Águila "বাজপাখির পর্বত") চিলির একটি এলাকা; এই এলাকা বিওবিও অঞ্চলের বিওবিও প্রদেশের কাব্রেরো কমিউনে অবস্থিত; কাব্রেরো শহর থেকে দক্ষিণদিকে এই এলাকার দূরত্ব ৫ কিলোমিটার[৩][৪] ও রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে এর দূরত্ব ৪৬৬ কিলোমিটার। ২০১২ সালের হিসেব অনুযায়ী মোন্তে আগিলার জনসংখ্যা ৬,০৯০ জন।[৫]। বর্তমানে পরিত্যক্ত রেলপথ মোন্তে আগিলা-পোলকুরার একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল এই এলাকা।

মোন্তে আগিলা, চিলি
নিয়ানকোমাউইদা
Ñancomahuida
মোন্তে আগিলা অবস্থান
মোন্তে আগিলা অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩৩°২৭′০″ দক্ষিণ ৭২°২৬′২৪″ পশ্চিম / ৩৩.৪৫০০০° দক্ষিণ ৭২.৪৪০০০° পশ্চিম / -33.45000; -72.44000
সরকার
 • Alcalde de Cabrero (কাব্রেরোর মেয়র)মারিও গিয়েরকে কেবেদো
জনসংখ্যা (২০১৭)
 • মোট৬.৫৭৪
সময় অঞ্চলচিলি সময় (CLT)[১] (ইউটিসি-৪)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)চিলি গ্রীষ্মকালীন সময় (CLST)[২] (ইউটিসি-৩)
ওয়েবসাইট[১]

নামকরণ সম্পাদনা

স্পেনীয় ভাষায় মোন্তে আগিলা শব্দদ্বয়ের অর্থ 'বাজপাখির পর্বত'। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ঐ অঞ্চলে বসবাসকারী স্থানীয় মানুষের বক্তব্য অনুযায়ী নামটি আসলে এসেছে স্থানীয় মাপুচে জনগোষ্টীর ব্যবহৃত মাপুদুগুন ভাষার শব্দ নিয়ানকোমাউইদা থেকে, যার অর্থ ঐ 'বাজপাখির পর্বত'।[৬]

ইতিহাস সম্পাদনা

আদি ইতিহাস ও প্রাক-কলম্বীয় যুগ সম্পাদনা

আজ যে অঞ্চলের নাম মোন্তে আগিলা সেখানকার আদি অধিবাসী ছিল দক্ষিণ আমেরিকার চিলির মধ্য ও দক্ষিণ অংশ ও আর্জেন্তিনার লাগোয়া অঞ্চলের বাসিন্দা মাপুচে জনগোষ্ঠীর মানুষ। এই অঞ্চলের রুক্ষ ও অনুর্বর ভূমিরূপের সাথে নিজেদের জীবনযাত্রাকে খাপ খাইয়ে এরাই এই অঞ্চলে বাস করত। এই অঞ্চলে বাস করত মাপুচেদের যে উপজাতি, তাদের পরিচয় ছিল কোইউঞ্চেস, যার অর্থ স্পেনীয় ভাষায় দাঁড়ায় - লা খেন্তে দে লোস আরেনালেস, অর্থাৎ 'বালিতে বসবাসকারী মানুষেরা'।[৬]

ঊনবিংশ শতাব্দীর ইতিহাস সম্পাদনা

১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে এই এলাকায় বংশ পরম্পরায় বহুযুগ ধরে বসবাসকারী আদি বাসিন্দারা তাদের বসত থেকে উৎখাত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। এর কারণ ছিল চিলির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মানুয়েল বুলনেস প্রিয়েতোর জারি করা একটি ডিক্রি; ১৮৪১ থেকে জারি হওয়া ঐ ডিক্রিতে মাপুচেদের এলাকায় বাইরে থেকে আসা উপনিবেশকারীদের নতুন নতুন উপনিবেশ গড়ে তুলতে উৎসাহ দেওয়া হয়। এর ফলে সেই সময় মাপুচেদের উৎখাত করে একের পর এক জার্মান, ফরাসি ও ইতালীয় উপনিবেশ গড়ে ওঠে। ফলে এইসময় তাদের বেহাত হয়ে যাওয়া এলাকা উদ্ধারের উদ্দেশ্যে মাপুচেরা একাধিকবার বিদ্রোহ করে। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের চিলির ইতিহাসে আমরা এইধরনের একাধিক বিদ্রোহের সাক্ষাত পেয়ে থাকি।

বিংশ শতাব্দীর ইতিহাস সম্পাদনা

১৮৭৯ - ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে চিলির সাথে বলিভিয়াপেরুর যৌথবাহিনীর যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়, তারপর থেকেই মোন্তে আগিলা যুদ্ধের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে ও অন্যত্র সৈন্য চলাচলেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবেও তা ব্যবহৃত হতে শুরু করে। ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই মোন্তে আগিলার সাথে আর্জেন্তিনীয় শহর নেউকেন'এর একটি রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যায়, যার ফলে এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত হয়। এরপর মোন্তে আগিলা ও আর্জেন্তিনীয় শহর পোলকুরার মধ্যে রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে; সাধারণভাবে এই রেলপথ রামাল নামে পরিচিত। মোন্তে আগিলার ইতিহাসে এই রেলপথের প্রতিষ্ঠা একটি অন্যতম মাইলস্টোন। এর ফলেই একটি আলাদা শহর হিসেবে মোন্তে আগিলার অস্তিত্ব সংহত হয়ে ওঠে। এর সাথে যোগ হয় ১৯০৫ সালে শুরু হওয়া চিলি-আর্জেন্তিনার মধ্যে বিস্তৃত ফেরাকারিল ত্রাসানদিনো নামক ২৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ আরও একটি রেলপথ, যার ফলে মোন্তে আগিলা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে খুবই উপকৃত হয়।

কিন্তু বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে যোগাযোগব্যবস্থার কেন্দ্র হিসেবে মোন্তে আগিলা তার একদা গুরুত্ব হারাতে শুরু করে। নেউকেন'এর সাথে সংযোগকারী রেলপথটি ১৯৬৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ৮০'এর দশকে রামালও পরিত্যক্ত হয়। এর ছাপ শহরের অর্থনীতির উপরও অনিবার্যভাবেই এসে পড়ে।

মোন্তে আগিলার আকর্ষণীয় স্থান সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Chile Time"। World Time Zones .org। ২০১০-০৭-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৫ 
  2. "Chile Summer Time"। World Time Zones .org। ২০০৭-০৯-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-০৫ 
  3. "UBICACIÓN - Monte Aguila - CHILE, ciudad de la VIII región del Bío Bio :::::::" (স্পেনীয় ভাষায়)। ২০১৬-০৩-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-৩০ 
  4. www.masternet.cl। "DESCUBRE BIO BIO"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-৩০ 
  5. "Censos de Población y Vivienda"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-৩০ 
  6. Raúl Caces Torres: Historia de Monte Águila. 2014.