মুনিরা থাবিত (অথবা মৌনিরা থাবেত) (আরবি: منيرة ثابت) (১৯০২ – ১৯৬৭) একজন মিশরীয় সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন, যিনি নারী ও পুরুষের সমতার দাবী করা প্রথম সাংবাদিকদের একজন হিসেবে পরিচিত। তিনি কায়রোর ফ্রেঞ্চ ল স্কুলে ভর্তি হওয়া প্রথম মহিলা এবং প্রথম লাইসেন্স এন ড্রয়েট (ফরাসি স্নাতক আইন ডিগ্রি) অর্জনকারী, যা তাকে মিশরের মিশ্র আদালতে আইন চর্চা করতে সক্ষম করেছিল। মিশরের প্রথম নারী আইনজীবী হিসেবে তার স্বাতন্ত্র্য সত্ত্বেও, একজন নারী হিসেবে আইন চর্চায় বাধা তাকে লেখালেখি পেশায় এগিয়ে নিয়ে যায়।

মুনিরা থাবিত

জীবনের প্রথমার্ধ সম্পাদনা

মুনিরা থাবিতের জন্ম ১৯০২ সালে,[১] [২] অথবা সম্ভবত ১৯০৬[৩] আলেকজান্দ্রিয়ায় একজন শিক্ষিত তুর্কী-মিশরীয় মা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী একজন পিতার সন্তান হিসাবে।[৩] তার জীবনের বিবরণ খুবই কম, কারণ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তার স্মৃতিচারণে ব্যক্তিগত উপাখ্যানগুলি অন্তর্ভুক্ত করেননি, যাতে পাবলিক এবং রাজনৈতিক সমস্যাগুলির দিকে মনোনিবেশ করা যায়। [১] তিনি কায়রোর ইতালীয় স্কুলে পড়াশোনা করেন, ইংরেজি ও ইতালিয়ান ভাষাগুলি শিখেছিলেন এবং তারপর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। [৪] ১৯২৪ সালে তার হাই স্কুল ডিপ্লোমা লাভ করেন। ১৯২৩ সালের সংবিধান, যেখানে মহিলাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ও প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়নি, তিনি তার বিরোধিতা করে সংসদে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। [৫] [৩] তিনি ১৯২৫ সালে কায়রোর ফরাসি আইন বিদ্যালয়ে প্রথম মহিলা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং পরবর্তীতে মিশরের প্রথম মহিলা আইনজীবী হিসাবে প্যারিসে তার লাইসেন্স এন ড্রয়েট লাভ করেন।[৩][৬] তাকে কেবল মিশরের মিশ্র আদালতে মামলা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, এবং মহিলাদের অংশগ্রহণে বাধার সম্মুখীন হয়ে তিনি সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পরেন।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

 
মুনিরা থাবিত

তিনি ১৯২৩ সাল থেকে ১৯৩৩ সালের মধ্যে মিশরীয় নারীবাদী ইউনিয়নে (ইএফইউ) (আরবি: الاتحاد النسائي المصري) অংশগ্রহণের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। যেহেতু তিনি একজন মধ্যবিত্ত এবং শ্রমিক শ্রেণীর পটভূমি থেকে এসেছিলেন, সেই জন্য অভিজাত মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ইএফইউ তাকে ও তার ধারনাকে তাদের সংগঠনে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করে।[৬] তিনি বিশ্বাস করতেন যে, শিক্ষা, বিয়ে ও কর্মসহ সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীরা সমান প্রাপ্য, সেইসাথে ওড়না পরা বা না পরা তাদের পছন্দ।[৭] মুনিরা ১৯২৫ সালে ফরাসি ভাষার পত্রিকা, এলস্পোয়ার প্রতিষ্ঠা করেন এবং এক বছর পরে সাংবাদিক আবদ আল-কাদির হামজার সহায়তায় আল-আমাল প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রথম ওয়াফডিস্ট মহিলাদের সাময়িকী। তিনি ও হামজা বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু বিয়েটি দ্রুত ভেঙে যায় এবং জার্নালদুটি তার স্কুলে পড়ার সময় বিক্ষিপ্ত মুদ্রণ করে। তিনি আন্তুন জুমায়িলের আমন্ত্রণে আল-আহরামের জন্য নিবন্ধ লেখা শুরু করেন, যা তিনি ১৯৪৮ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত অব্যাহত রাখেন।[৩] ফ্রান্সে তার বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নের সময়, তিনি মিশরের প্রতিনিধি হিসেবে ১৯২৮ সালে জার্মানির কোলনে একটি আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন, যেহেতু তাকে সে সময় মিশরের শীর্ষ নারী সাংবাদিক হিসেবে বিবেচনা করা হতো।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা