মাসিক মদীনা
মাসিক মদীনা ঢাকার বাংলাবাজার থেকে প্রকাশিত একটি মাসিক ইসলামি পত্রিকা। এটি বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত মাসিক পত্রিকা।[১] ১৯৬১ সালে মুহিউদ্দীন খান এটি প্রতিষ্ঠা করেন। পত্রিকাটির উদ্ভোদনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ইবরাহীম খাঁ, গোলাম মোস্তফা, মোশাররফ হোসেন, তালিম হোসেন, চৌধুরী শামসুর রহমান, খান বাহাদুর জসিমুদ্দিন, দেওয়ান আবদুল হামিদ প্রমুখ বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমৃত্যু পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন মুহিউদ্দীন খান, তার মৃত্যুর পর তার ছেলে আহমদ বদরুদ্দীন খান সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করছেন।
ভাষা | বাংলা |
---|---|
সম্পাদক | আহমদ বদরুদ্দীন খান |
প্রকাশনা বিবরণ | |
প্রকাশক | মদীনা পাবলিকেশন্স |
লাইসেন্স | রেজি. নংঃ ডি.এ. ১৬১ |
সংযোগ | |
পত্রিকাটিকে মুহিউদ্দীন খানের অমর কীর্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর মাধ্যমে তিনি ইসলামি পত্রিকার এক নতুন ধারার সূচনা করেন। যার অনুকরণে পরবর্তীতে দেশের বিখ্যাত মাদ্রাসা ও বিভিন্ন জায়গা থেকে মাসিক পত্রিকা বের হয়। মাসিক মদিনাকে কেন্দ্র করে তিনি এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন। আলেম থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বাংলা ভাষায় ইসলামের আদর্শ ফুটিয়ে তোলার এক অনন্ত প্রেরণা জুগিয়েছেন।[২] মাসিক মদীনা বাংলাদেশে একটি ইসলামি চিন্তা চেতনার লেখক বলয় সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।[৩] ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরেও পত্রিকাটির অসংখ্য পাঠক রয়েছে।[৪]
বর্ণনা
সম্পাদনা১৯৬১ সালের ১লা মার্চ ৫৫/৩ ইংলিশ রোড, ঢাকায় অবস্থিত মদীনা কার্যালয়ের সম্মুখস্থ খালি জায়গায় পত্রিকাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। খান বাহাদুর জসিমুদ্দিন একশ টাকায় পত্রিকাটির প্রথম কপি কিনে নেন এবং দ্বিতীয় কপি কিনেন ভাষা বিজ্ঞানী মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পরদিন দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক প্রভৃতি বিখ্যাত বাংলা পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় মাসিক মদীনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের খবর ফলাও করে প্রকাশিত হয়।[৫] ধারাবাহিক প্রকাশনার দশ বছরের মাথায় ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে ১৯৭৩ সালের দুর্ভিক্ষের শেষ পর্যন্ত এর ধারাবাহিক প্রকাশনা বন্ধ থাকে। তারপর থেকে এখনও পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।[৪] মাঝখানে পত্রিকাটির সম্পাদক মুহিউদ্দীন খানের নামে একাধিক ষড়যন্ত্র মূলক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে শুনানী শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হান্নান এক আদেশ বলে সম্পাদককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।[৫] পত্রিকাটির সমসাময়িক আয়োজনের মধ্যে প্রশ্নোত্তর পর্বটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। ইতোমধ্যে পত্রিকাটির দীর্ঘ ৫০ বছরের সম্পাদকীয়গুলো একত্রে সন্নিবেশ করে ‘কালের কণ্ঠ’ নামে প্রকাশ করা হয়েছে।[৪]
নিয়মিত আয়োজন
সম্পাদনাপত্রিকাটির নিয়মিত আয়োজনের মধ্যে রয়েছে:[৬]
- সম্পাদকীয়
- আলোকময় কুরআন
- হাদিসে রাসূল সা.
- কুড়ানো মানিক
- প্রবন্ধ
- কবিতাগুচ্ছ
- প্রশ্নোত্তর
- আপনাদের কথা
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ "প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ৪৩০"। প্রথম আলো। ৫ মে ২০১৬।
- ↑ আমির, তানজিল (১ জুলাই ২০১৬)। "মদিনা প্রেমিক মাওলানা মহিউদ্দিন খান"। যুগান্তর।
- ↑ হায়দার, আবুল কাসেম (৯ ডিসেম্বর ২০২১)। "মাওলানা মহিউদ্দীন খান (রহ:)-এর অমর কীর্তি কী"। ইনকিলাব।
- ↑ ক খ গ করীম, আনওয়ারুল (৩০ জুন ২০১৬)। "বৈপ্লবিক চেতনার পথিকৃৎ মাওলানা মুহিউদ্দীন ও তাঁর 'মদীনা'"। ইনকিলাব।
- ↑ ক খ নগরী, রুহুল আমীন (১৪ জুলাই ২০১৬)। "আউলিয়াদের জীবন আলেমেদ্বীন সাংবাদিক-সাহ্যিতিক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (র.)"। ইনকিলাব।
- ↑ সূচীপত্র থেকে সংগৃহীত।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- হায়দার, আবুল কাসেম (২ ডিসেম্বর ২০২১)। "মাওলানা মহিউদ্দীন খান (রহ:)-এর অমর কীর্তি কী"। ইনকিলাব।
- খান, আহমদ বদরুদ্দীন (১৭ জুন ২০১৭)। "মাসিক মদীনা ও এক অনন্য মাওলানা"। ইনকিলাব। ১ম পর্ব।
- খান, আহমদ বদরুদ্দীন (১৮ জুন ২০১৭)। "মাসিক মদীনা ও এক অনন্য মাওলানা"। ইনকিলাব। ২য় পর্ব।
- শরীফ মুহাম্মাদ, মাওলানা (আগস্ট ২০১৬)। "আমাদের যুগের প্রধান নাবিক"। আল কাউসার।
- আইনী, আবদুস সাত্তার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "আলেম সমাজের বাংলা সাহিত্যচর্চা"। কালের কণ্ঠ।
- কাইয়ূম, হাসান আবদুল (২২ জুলাই ২০১৬)। "মওলানা মুহিউদ্দীন খান স্মরণে"। ইত্তেফাক। ১১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২২।
- করীম, আনওয়ারুল (২২ জুলাই ২০১৬)। "মওলানা মুহিউদ্দীন খান ও তাঁর মাসিক মদীনা"। ইত্তেফাক। ১০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২২।
- গোলাম ছরোয়ার, মুহাম্মদ (নভেম্বর ২০১৩)। বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার (ফিকহ চর্চায় পত্র-পত্রিকা) (পিডিএফ) (গবেষণাপত্র)। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৩৬১। ১৫ মে ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০২১।