মাল্টিমিটার(Multimeter) বা মাল্টিটেস্টার(Multitester), অ্যাভোমিটার (AVO{Ampere-Volt-Ohm} meter) নামেও পরিচিত। এটি একটি ইলেকট্রনিক পরিমাপ যন্ত্র, যেখানে বিভিন্ন পরিমাপের কাজ একটি ইউনিটে একত্রিত থাকে। একটি সাধারণ মাল্টিমিটার বিভব(Voltage), তড়িৎ প্রবাহ(Current) এবং রোধ(Resistance) পরিমাপ করতে পারে। অ্যানালগ মাল্টিমিটার একটি গ্যালভানোমিটারের সাথে চলমান নির্দেশক ব্যবহার করে পাঠ প্রদর্শন করে। ডিজিটাল মাল্টিমিটারে একটি সাংখ্যিক প্রদর্শক(Numeric display)/ডিজিটাল ডিসপ্লে(Digital display) বা এলসিডি ডিসপ্লে(LCD display) থাকে এবং পরিমাপের মান ডিজিটাল সংখ্যায় প্রদর্শিত হয়। নির্ভুলতার জন্য ডিজিটাল মাল্টিমিটার এখন বহুল প্রচলিত, কিন্তু এখনও কিছু ক্ষেত্রে অ্যানালগ মাল্টিমিটার অগ্রাধিকারযোগ্য, উদাহরণসরূপ যখন একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল মানের নিরীক্ষণ প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক ত্রুটি খোঁজা এবং বাইরের মেরামতের কাজের জন্য মাল্টিমিটার হাতের কাছের প্রয়োজনীয় যন্ত্র বা বেঞ্চ(Bench) যন্ত্র হতে পারে, যা খুব উচ্চ স্তরের সঠিকতা পরিমাপ করতে পারে। এটি বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহার করা যেতে পারে শিল্পকারখানার বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধানে এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্র, মোটর নিয়ন্ত্রণ, গৃহস্থ জিনিসপত্র, বৈদ্যুতিক সরবরাহ এবং ওয়্যারিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে। বর্তমানে বিভিন্ন রকম এবং দামের মাল্টিমিটার সহজলভ্য। সস্তা দামের মাল্টিমিটারের জন্য খরচ হতে পারে ১০ ইউএস ডলার বা প্রায় ৮০০ টাকার নিচে, আর সার্টিফাইড ক্রমাঙ্কিত সহ ল্যাবরেটরি-গ্রেড মডেলের জন্য ৫০০০ ইউএস ডলার এরও বেশি খরচ হতে পারে।

একটি অ্যানালগ মাল্টিমিটার, Sanwa YX360TRF
একটি ডিজিটাল মাল্টিমিটার, UNITY DT830D

ইতিহাস সম্পাদনা

 
১৯২০ সালের পকেট মাল্টিমিটার
 
অ্যাভোমিটার, মডেল ৮

প্রথম চলমান নির্দেশকসহ তড়িৎ প্রবাহ সনাক্তকরণ যন্ত্রটি ছিল ১৮২০ সালের গ্যালভানোমিটার। এটি ব্যবহৃত হতো হুইটস্টোন ব্রীজ ব্যবহার করে রোধ এবং বিভব পার্থক্য পরিমাপের জন্য এবং অজানা সংখ্যক বিভব পার্থক্য অথবা রোধ তুলনা করার জন্য। যখন ল্যাবে এটি প্রয়োজনীয় হলো, তখন যন্ত্রগুলি ছিল খুব ধীর এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে অচল। সেই গ্যালভানোমিটারগুলি ছিল ভারী এবং সূক্ষ্ম। প্রাথমিক চলমান কয়েলের মিটার শুধুমাত্র ডিসি তড়িৎ প্রবাহ পরিমাপের জন্য উপযুক্ত ছিল এবং সাধারণত এগুলির পরিমাপের পরিসীমা ছিল ১০ মাইক্রো অ্যাম্পিয়ার থেকে ১০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত। পরিবর্তনশীল তড়িৎ প্রবাহ অথবা বিভব পার্থক্য পাঠের জন্য রেক্টিফায়ার প্রয়োজন ছিল। প্রথম উপযুক্ত রেক্টিফায়ার ছিল কপার অক্সাইড রেক্টিফায়ার, যেটি তৈরি এবং উন্নয়ন করেছিল ইউনিয়ন সুইচ অ্যান্ড সিগন্যাল কোম্পানি, সুইচভেল, পেনসিলভানিয়া, সেটি ১৯২৭ সাল থেকে ওয়েস্টিংহাউজ ব্রেক এবং সিগন্যাল কোম্পানির পরের অংশ।[১] মাল্টিমিটার আবিষ্কার হয়েছিল ১৯২০ সালের প্রথম দিকে, যখন রেডিও রিসিভার এবং অন্যান্য ভ্যাকুয়াম টিউব ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ব্যবহার খুব সাধারণ হয়ে ওঠে। প্রথম মাল্টিমিটার আবিষ্কারে অবদান রাখেন ব্রিটিশ পোস্ট অফিস প্রকৌশলী ডোনাল্ড ম্যাকাদি, যিনি টেলিযোগাযোগ বর্তনী মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক রকমের যন্ত্রপাতি বহনে অসন্তুষ্ট ছিলেন।[২] ম্যাকাদি একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যা অ্যাম্পিয়ার, বিভব পার্থক্য এবং রোধ পরিমাপ করতে পারতো। সেই মাল্টিফাংশনাল মিটারটির নাম ছিল অ্যাভোমিটার।[৩] ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত অটোমেটিক কয়েল ওয়্যাইন্ডার অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইকুইপমেন্ট কোম্পানি (ACWEECO), ম্যাকাদি দ্বারা ডিজাইন এবং পেটেন্ট এর মত অ্যাভোমিটার এবং কয়েল ওয়্যান্ডিং মেশিন তৈরি করেছিল। যদিও তিনি ACWEECO এর একজন শেয়ারহোল্ডার ছিলেন, তবুও ম্যাকাদি ১৯৩৩ সালে অবসর গ্রহণের পূর্বপর্যন্ত পোস্ট অফিসের কাজ চালিয়ে গেছেন। তার ছেলে হিউ এস. ম্যাকাদি ১৯২৭ সালে ACWEECO তে যোগদান করেন এবং কারিগরি পরিচালক হয়েছিলেন।[৩][৪][৫] প্রথম অ্যাভোমিটার ১৯২৩ সালে বিক্রি করা হয়েছিল এবং এর বেশিরভাগ বৈশিষ্ট্যগুলি সর্বশেষ মডেল ৮ এ অপরিবর্তিত ছিল।

মাল্টিমিটারের সাধারণ বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

কার্যপ্রণালী সম্পাদনা

মান পরিমাপ সম্পাদনা

অ্যানালগ মাল্টিমিটার সম্পাদনা

ডিজিটাল মাল্টিমিটার সম্পাদনা

নিরাপত্তা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. “A New Electronic Rectifier”, L.O Grondahl & P.H. Geiger, Transactions, American Institution of Electrical Engineers, February 1927 pp. 358 – 366
  2. "Greater London Industrial Archaeology Society"glias.org.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০২ 
  3. "AVO" (MediaWiki)gracesguide.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১১-০২ 
  4. Imperial College Library Archives – Papers of Donald Macadie 1871 -1956 MS2015/21
  5. The Electrician June 15, 1923, p 666 and