মালতী চৌধুরী
মালতী চৌধুরী (২৬ জুলাই,১৯০৪ - ১৫ মার্চ, ১৯৯৮) ছিলেন মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বিশিষ্ট সর্বোদয় নেত্রী ও সমাজসেবী। [১]
মালতী চৌধুরী | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ২৬ জুলাই ১৯০৪ |
মৃত্যু | ১৫ মার্চ, ১৯৯৮ |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | মহিলা সমাজকর্মী |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
মালতী চৌধুরীর জন্ম বৃটিশ ভারতের কলকাতার এক অবস্থাপন্ন ব্রাহ্মপরিবারে। পিতা কুমুদনাথ সেন ছিলেন ব্যারিস্টার। মাতা স্নেহলতা সেন। তাঁদের পৈতৃক নিবাস ছিল অধুনা বাংলাদেশের ঢাকা বিক্রমপুরের কামারখাড়ায়। তবে তাঁদের পরিবারের সকলে বিহারের শিমুলতলায় চলে আসেন। মাত্র আড়াই বৎসর বয়সে তাঁর পিতার মৃত্যু হয় এবং তাঁর মা-ই তাঁকে প্রতিপালন করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ১৬ বছর বয়েসে মালতি চৌধুরী শান্তিনিকেতনে আসেন। সেখানে পড়াকালীন সরাসরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংস্পর্শে এসেছিলেন। ওড়িষ্যার একদা মুখ্যমন্ত্রী নবকৃষ্ণ চৌধুরীর সাথে তার বিবাহ হয় ১৯২৭ সালে শান্তিনিকেতনে।[২]
অহিংস আন্দোলনসম্পাদনা
মহাত্মা গান্ধীর প্রভাবে তিনি ১৯৩০-এ অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং গ্রেপ্তার হয়ে ভাগলপুর সেন্ট্রাল জেলে প্রেরিত হন। ১৯৩২ খৃষ্টাব্দে হাজারিবাগ জেলে ছিলেন। ৪২ এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও অংশ নিয়ে কারাবাস করেছেন।[২]
সামাজিক কাজসম্পাদনা
সর্বোদয় নেত্রী হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। স্বাধীনতার পর দরিদ্র, দলিত, আদিবাসী হরিজন ছেলেমেয়েদের সেবাকার্যে আত্মনিয়োগ করেন। উৎকল কংগ্রেস শ্রমজীবী কর্মী সংঘ গঠন করেন তিনি। গ্রামের কৃষকদের উন্নতির স্বার্থে, সংস্কার ও জনকল্যাণকর কর্মসূচি নিয়েছেন, সংগঠন তৈরি করেছিলেন। গান্ধীজীর পদযাত্রাতে উড়িষ্যা রাজ্যে সঙ্গী হন। ১৯৪৭ সালে কিছুকালের জন্যে উড়িষ্যার প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী হয়েছিলেন। ১৯৭৫ খৃষ্টাব্দে দেশজোড়া জরুরী অবস্থা জারী হলে তার বিরুদ্ধে পথে নামেন এবং ৭১ বছর বয়েসে তাকে ছয় মাসের জন্যে কারারুদ্ধ হতে হয়। আচার্য বিনোবা ভাবের ভূদান আন্দোলনেও তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।[২]
সম্মানসম্পাদনা
উড়িষ্যা সরকার তাকে 'উৎকল রত্ন' সম্মানে ভূষিত করে। ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার, দেশিকোত্তম, শিশু কল্যাণমূলক কাজে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। সমাজসেবামূলক কাজের জন্যে তিনি ১৯৮৮ সালে যমুনালাল বাজাজ পুরস্কারে সম্মানিত হলেও তা নিতে অস্বীকার করেছিলেন।
মৃত্যুসম্পাদনা
১৫ মার্চ ১৯৯৮ সালে ৯৩ বছর বয়েসে তার মৃত্যু হয়।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯, পৃষ্ঠা ৩১২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ ক খ গ দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ২৬৭। আইএসবিএন 81-86806-99-7।