মার্বেল, হল একটি গোলকার ক্রিড়ার বস্তু বা খেলনা বল যা সাধারণত কাঁচ, কাদামাটি, ইস্পাত, প্লাস্টিক বা মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি হয়। এই গোলাকার বল বা মার্বেল বিভিন্ন আকারের হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এগুলি প্রায় ১৩ মিমি (১⁄২২ ইঞ্চি) ব্যাসের হয় তবে কখনো কখনো এদের আকার ১ মিমি থেকে কম (১⁄৩০ ইঞ্চি) এবং ৮ সেন্টিমিটার (৩ ইঞ্চি) থেকে বেশি হতে পারে। প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কিছু কাচের মার্বেলগুলি ৩০ সেন্টিমিটারের (১২ ইঞ্চির) বেশি প্রশস্ত হয়।

বিভিন্ন আকার ও প্রকারের মার্বেল

ইতিহাস সম্পাদনা

বিংশ শতকের প্রথম দিকে প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার মহেঞ্জদারোর পুরাতাত্ত্বিক স্থল উৎখনন করে ২৫০০ খ্রীঃ পূঃ সময়কালের কিছু গোলাকার বস্তু পাওয়া গেছে যাদের বিশেষজ্ঞরা প্রাচীন মার্বেল হিসাবে চিহ্নিত করেছে।[১]:৫৫৩ প্রাচীন রোমান সভ্যতার কিছু লিখনে মার্বেলের উল্লেখ আছে। এছারাও প্রাচীন মেসোপটেমিয়া ও মিশরের উৎখনন স্থল থেকে মার্বেল খুজে পাওয়া গেছে। মধ্যযুগীয় সময়কালে উত্তরপূর্ব ইউরোপের উপকূল অঞ্চল থেকে ব্রিটেনে মার্বেল আমদানি হয়। [২]:১৯ ১৫০৩ সালে জার্মানির নুয়েম্বার্গ‌ শহরের শাসকদল শহরের বাইরের একটি বিশেষ ছায়াছন্ন অঞ্চলকে মার্বেল খেলার জন্য সুনির্দিষ্ট করে দেয়।[৩] মার্বেলের উতপত্তি কোথায় তা সঠিকভাবে এখনও জানা যায়নি।[৪] ১৮৪৬ সালে একজন জার্মান কাঁচশিল্পী মার্বেল উতপাদনের জন্য মার্বেল সিসর নামক একটি যন্ত্র তৈরি করে।[৫]:১৪৮ ১৮৭০ সালে সেরামিক মার্বেলের বহুল উৎপাদন শুরু হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

খেলাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশগুলিতে বেশ জনপ্রিয়।[৬] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্রথম ভর খেলনা মার্বেলগুলি (কাদামাটি) ১৮৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে ওহাইও, আক্র‌নে তৈরি হয়েছিল। এই আক্রনেই জেমস হার্ভা লেইটন নামধারী এক ব্যক্তি আমেরিকায় উৎপাদিত কাঁচের মার্বেল তৈরি করেছিলেন। ১৯০৩ সালে, ওহাইওর আকরনের অধিবাসী মার্টিন ফ্রেডরিক ক্রিস্টেনসেন তার পেটেন্টযুক্ত মেশিনে প্রথম মেশিনের তৈরি গ্লাস মার্বেল তৈরি করেছিলেন। তাঁর সংস্থা, দ্য এম. এফ. ক্রিস্টেনসেন অ্যান্ড সন ১৯১৭ সাল অবধি লক্ষ লক্ষ খেলনা এবং শিল্প কাঁচের মার্বেল তৈরি করেছিল। এরপর কাঁচের মার্বেল উতপাদনের বাজারে মার্কিন সংস্থা আক্রো আগাতের উদয় ঘটে। এই সংস্থাটি ১৯১১ সালে আক্রোনাইটসে দ্বারা শুরু করা হয়েছিল, তবে পরে তা পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ক্লার্কসবার্গে স্থানান্তরিত হয়। আধুনিককালের আমেরিকার খেলনা মার্বেল উত্পাদনকারী সংস্থাগুলি হল: ওহাইওর রেনোতে স্থিত জাবো ভিট্রো এবং পশ্চিম ভার্জিনিয়ার পাডেন শহরের মার্বেল কিং। [৭]

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পাদনা

১৯৩৩ সাল থেকে প্রতি বছর ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট সাসেক্সের টিনসলে গ্রিনে ব্রিটিশ ও ওয়ার্ল্ড মার্বেল চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।[৮][৯][১০] টিনসলে গ্রিন এবং আশেপাশের অঞ্চলে মার্বেল খেলা বহু শতাব্দী ধরে খেলে চলেছে।[৮][১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Marshall, John, সম্পাদক (১৯৩১)। Mohenjo-Daro and the Indus Civilization: Being an Official Account of Archaeological Excavations Carried out by the Government of India between the Years 1922 and 1927। New Delhi: Asian Educational Services। আইএসবিএন 978-812061179-5 
  2. Joy, Jody; Gunn, Imogen; Harknett, Sarah-Jane; Wilkinson, Eleanor (২০১৬)। Hide and Seek: Looking for Children in the Past। Cambridge: Museum of Archaeology and Anthropology, University of Cambridge। আইএসবিএন 978-0-947595-23-4 
  3. "History of Marbles - Corner Cafe Message Board"The baby corner। ৩০ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ 
  4. Abernethy, Francis Edward (১২ নভেম্বর ১৯৯৭)। Texas Toys and Games। University of North Texas Press। আইএসবিএন 978-1-57441037-2। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  5. Acton, Johnny; Adams, Tania; Packer, Matt (২০০৬)। Origin of Everyday Things। Barnes & Noble। 
  6. "Marble History"Thinkquest। ২০১৩-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "Marbles"WV Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৭ 
  8. "Losing your Marbles"BBC Inside Out programmeBBC। ৯ জুন ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০ 
  9. Collins 2007, পৃ. 88.
  10. Aitch, Iain (৪ এপ্রিল ২০০৯)। "Event preview: British And World Marbles Championship, Tinsley Green"The Guardian। London: Guardian News and Media Ltd। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০ 
  11. Sandy, Matt (৭ এপ্রিল ২০০৭)। "Village rolls out a welcome for a World Marbles Championships"The Times। London: Times Newspapers Ltd। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১০