মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা

মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল (এমএ) মাদ্রাসা বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার একটি উল্লেখযোগ্য আলিয়া মাদ্রাসা[][] এখানে আলিয়া মাদ্রাসার সর্বোচ্চ শ্রেণি কামিল পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। এটি ফাজিল (পাস ও অনার্স ) এবং কামিল (হাদিস ও ফিকহ) ডিগ্রির জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রয়েছে এবং দাখিল ও আলিম শ্রেণির জন্য বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধিভুক্ত রয়েছে। ফলাফলের দিক থেকে মাদ্রাসাটি মানিকগঞ্জ জেলার শীর্ষে অবস্থান করে।

মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা
মাদ্রাসার লোগো
ধরনএমপিও ভুক্ত
স্থাপিত১ জানুয়ারি ১৯৫৩; ৭১ বছর আগে (1953-01-01)
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (২০০৬- ২০১৬)
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় (২০১৬- বর্তমান)
মাধ্যমিক অন্তর্ভুক্তিবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড
ঠিকানা
খালাদাপানিয়া
, , ,
ইআইআইএন১১০৯৮৯
ওয়েবসাইট110989.ebmeb.gov.bd

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৫৩ সালে স্থানীয় ইসলামি শিক্ষাবিদগণের উদ্যোগে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মধ্যে মরহুম মোঃ জহির উদ্দীন, মরহুম মোঃ হিরণ আলী বেপারী, মরহুম চুন্নু মিয়া উল্লেখযোগ্য। মাদ্রাসাটি প্রথমে ছোট্ট পরিসরে ইবতেদায়ি শাখা দিয়ে শুরু হলেও ধীরে ধীরে মাদ্রাসাটির কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়।

১ জুন, ১৯৫৯ তারিখে মাদ্রাসাটি দাখিল হিসেবে প্রাথমিক পাঠদান অনুমতি ও একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। ১ জুলাই, ১৯৬৮ তারিখে মাদ্রাসাটি আলিম প্রাথমিক পাঠদান অনুমতি এবং ১ জুলাই ১৯৬৮ তারিখে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটি ধারাবাহিক সাফল্য বজায় রেখে ৩ জানুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ফাজিল প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি এবং ১ জুলাই ১৯৭৮ তারিখে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। মাদরাসাটি সর্বোচ্চ স্তর কামিল শ্রেণির প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি লাভ করে ১ জুলাই, ১৯৯৮ তারিখে এবং একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে ১ জুলাই, ২০০১ তারিখে। অন্যদিকে মাদ্রাসাটি ফাজিল স্তর পর্যন্ত ০১/০১/১৯৮০ সালে এবং কামিল স্তর ০১/০৫/২০০৪ সালে এমপিওভূক্তি হয়। এটি বর্তমানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক এফেলিয়েটেড রয়েছে।

২০০৬ সালে মাদ্রাসাটি ফাজিল (পাস) ও কামিল (হাদিস) ডিগ্রিকে সাধারণ শিক্ষার মানে উন্নিত করতে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত লাভ করে।[] এরফলে ফাজিল ও কামিল পরীক্ষা উভয় মিলিয়ে সাধারণ শিক্ষার পূর্ণ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সমমান লাভ করে। এরপর ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়, এটি সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়।[]

২০২৩ সালে মাদ্রাসাটিতে নূরানী ও হিফজুল কুরআন বিভাগ চালু করা হয়। এ বছরেই ফাজিল (অনার্স) ও কামিল (ফিকহ) বিভাগ খোলার প্রাথমিক অনুমতি লাভ করে।

শিক্ষা কার্যক্রম

সম্পাদনা

মাদ্রাসাটিতে নূরানী মক্তব, নাজেরা ও হিফজুল কুরআন বিভাগ এবং ইবতেদায়ি শিশু শ্রেণি থেকে শুরু করে আলিয়া মাদ্রাসার সর্বোচ্চ পর্যায় কামিল শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে। এই মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক উভয় শাখা রয়েছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য মাদ্রাসাটিতে ফাজিল স্নাতক পর্যায় পাস ও উলুমুল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অনার্স কোর্স চালু আছে। কামিল স্নাতকোত্তর পর্যায়ে আল হাদিস ও আল ফিকহ বিভাগে নিয়ে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।

সুযোগ-সুবিধা

মাদ্রাসাটিতে আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি মাদ্রাসা। ছাত্রদের খেলার মাঠ, পড়াশোনার জন্য লাইব্রেরী, মেয়েদের অবসর কাটানোর জন্য কমন রুম সহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।

ছাত্রাবাস

মাদ্রাসাটিতে একটি ছাত্রাবাস রয়েছে। ছাত্রাবাসে ফাজিল ও কামিল শ্রেণীর ছাত্ররা অবস্থান করে থাকে। তবে এখানে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা কম খরচে থাকা ও খাওয়ার সুবিধা পেয়ে থাকে। হোস্টেলের আংশিক খরচ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বহন করে থাকে।

খেলার মাঠ

মাদ্রাসার চারিদিকে দেয়ালের মাঝখানে শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য সুবিশাল মাঠ রয়েছে। এখানে অবসর সময়ে ও পাঠদান শেষে মাদ্রাসার ছাত্ররা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখানে খেলা-ধুলা করে থাকে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণও করে থাকে।

গ্রন্থাগার

মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত লাইব্রেরী রয়েছে। দাখিল থেকে শুরু করে কামিল পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থীরা এখান থেকে বই ধার নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে। ফাজিল ও কামিল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উচ্চতর গবেষণাধর্মী বই রয়েছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "মাদ্রাসার তালিকা, মানিকগঞ্জ জেলা"www.manikganj.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৮ 
  2. "Manikgonj Islamia Kamil Madrasha - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৮ 
  3. "আলিয়া মাদরাসার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ"lekhapora24.net। ২০২১-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-১৭ 
  4. "মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে প্রত্যাশা"SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১০ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা