মন্মথ রায়
মন্মথ রায় (১৬ জুন ১৮৯৯ - ২৬ আগস্ট ১৯৮৮) হলেন একজন বাঙালি সাহিত্যিক।
মন্মথ রায় | |
---|---|
জন্ম | গালা গ্রাম, টাঙ্গাইল, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা বাংলাদেশ) | ১৬ জুন ১৮৯৯
মৃত্যু | ২৬ আগস্ট ১৯৮৮ কলকাতা, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) | (বয়স ৮৯)
পেশা | নাট্যকার |
সময়কাল | বাংলার নবজাগরণ |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | দীনবন্ধু পুরস্কার (১৯৮৩) |
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
সম্পাদনা১৮৯৯ সালের ১৬ জুন টাঙ্গাইল জেলার গালা গ্রামে তার জন্ম। তাদের স্থায়ী নিবাস ছিল পশ্চিম দিনাজপুরের বালুর ঘাট। সেখানেই তার বাল্যজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি পশ্চিম দিনাজপুর স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএ (১৯২২) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ পাস করেন। ১৯২৫ সালে বিএল পাস করে তিনি বালুর ঘাটে ওকালতি শুরু করেন এবং একই সঙ্গে সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মন্মথ রায় নাট্যচর্চাও করতেন।
সাহিত্য কীর্তি
সম্পাদনাপেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মন্মথ রায় নাট্যচর্চাও করতেন। স্বদেশপ্রীতি তার নাট্য রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য নাটকের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ। সেগুলির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে মুক্তির ডাক (১৯২৩)। ১৯২৭ সালে পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত তার প্রথম নাটক চাঁদ সওদাগর প্রকাশিত হয়। নাটকটি পৌরাণিক হলেও এতে আধুনিক জীবন-সমস্যা প্রতিফলিত হয়েছে। পরে তিনি মহুয়া (১৯২৯), কারাগার (১৯৩০) ও সাবিত্রী (১৯৩১) নাটকত্রয় লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মন্মথ রায় ধর্মঘট (১৯৫৩), সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৯৫৮), অমৃত অতীত (১৯৬০), লালন ফকির (১৯৬৯) ইত্যাদি নাটক রচনা করেন। পাবলিক থিয়েটারে মঞ্চস্থ তার নাটকগুলির মধ্যে অশোক (১৯৩৩), খনা (১৯৩৫), মীর কাশিম (১৯৩৮) ও জীবনটাই নাটক (১৯৫৩) উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালে তিনি রচনা করেন আমি মুজিব নই। তিনি বহু সংখ্যক একাঙ্ক নাটকও রচনা করেন। বাংলা ভাষায় যথার্থ একাঙ্ক নাটক রচনার কৃতিত্ব তারই।
উল্লেখযোগ্য নাটকঃ
সম্পাদনা- মুক্তির ডাক (১৯২৩)
- সেমিরেমিস (১৯২৫)
- কাজল রেখা (১৯২৬)
- চাঁদ সদাগর (১৯২৭)
- দেবাসুর (১৯২৮)
- মহুয়া (১৯২৯)
- কারাগার (১৯৩০)
- একাঙ্কিকা (১৯৩১)
- সাবিত্রী (১৯৩১)
- অশোক (১৯৩৩)
- খনা (১৯৩৫)
- বিদ্যুপর্না (১৯৩৭)
- সতী (১৯৩৭)
- মীরকাশিম (১৯৩৮)
- রূপকথা (১৯৩৮)
- রাজনটী (১৯৩৮)
- ভাঙাগড়া (১৯৫০)
- মহাভারতী (১৯৫০)
- মমতাময়ী হাসপাতাল (১৯৫২)
- উর্ব্বশী (১৯৫৩)
- নিরুদ্দেশ (১৯৫৩)
- পথে বিপথ (১৯৫৩)
- মীরাবাঈ (১৯৫৪)
- গুপ্তধন (১৯৫৫)
- জীবন মরন (১৯৫৫)
- লাঙ্গল (১৯৫৫)
- জটাগঙ্গাধর বাঁদ (১৯৫৫)
- রঘু ডাকাত (১৯৫৫)
- শ্রীশ্রী মা (১৯৫৫)
- ছোটোদের একাঙ্কিকা (১৯৫৬)
- মরা হাতি লাখ টাকা (১৯৫৭)
- নব একাঙ্কিকা (১৯৫৮)
- সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৯৫৮)
- কোটিপতি নিরুদ্দেশ (১৯৫৯)
- ফকিরের পাথার ও নাট্যগুচ্ছ (১৯৫৯)
- বন্দিতা (১৯৫৯)
- মহাপ্রেম (১৯৫৯)
- অমৃত অতীত (১৯৬০)
- কৃষাণ (১৯৬১)
- দুই আঙিনাঃ এক আকাশ (১৯৬১
- বিচিত্র একাঙ্ক (১৯৬১)
- স্বর্ণকীট ও জওয়ান (১৯৬২)
- মহা উদ্বোধন (১৯৬৩)
- মহা অভিসার (১৯৬৩)
- দুর্গেশনন্দিনীর জন্ম (১৯৬৫)
- তারাস শেভচেঙ্কা (১৯৬৫)
- দিগ্বিজয় (১৯৬৯)
- দ্বিচারিণী (১৯৭০)
- লালন ফকির (১৯৭০)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- বাংলা সাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত - ড.অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
- বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাস - তপন কুমার চট্টোপাধ্যায়
- বাংলা সাহিত্যের ইতিকথা - ভূদেব চৌধুরী