মনিপুরী ইলিশ
অস্টিয়োব্রামা বেলানগিরি বা মনিপুরী ইলিশ বা পেংবা মাছ হচ্ছে রশ্মি-পাখনা ধরনের, অস্টিয়োব্রামা গণের একটি মাছ। এটা ভারতের মনিপুর রাজ্যের একটি স্থানীয় মাছ। পূর্বে এটা শুধুমাত্র মনিপুর এবং মায়ানমারের জলসীমায় পাওয়া যেতো। এটা মনিপুরের মৎসখামার গুলোতে খাবার মাছ হিসেবে চাষ হতো। মায়ানমারের জলে বুনো পেংবা মাছ পাওয়া যেতো। যদিও বাঁধ নির্মাণ, জলাভূমি হ্রাস, বাসস্থানের পরিবেশ বদলে যাওয়া, বহিরাগত প্রজাতি আগমণ ইত্যাদি বিবিধ কারণে মাছটির প্রাপ্যতা কমে যেতে শুরু করে।
মনিপুরী ইলিশ | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | অ্যানিম্যালিয়া (Animalia) |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণি: | Actinopterygii |
বর্গ: | Cypriniformes |
পরিবার: | Cyprinidae |
গণ: | Osteobrama (Valenciennes, 1844) |
প্রজাতি: | O. belangeri |
দ্বিপদী নাম | |
Osteobrama belangeri (Valenciennes, 1844) | |
প্রতিশব্দ | |
বর্ণনা সম্পাদনা
মাছটির চেহারার সাথে ইলিশের সাদৃশ্য না থাকলেও এর স্বাদ ইলিশের কাছাকাছি হওয়ায় এটা মনিপুরী ইলিশ নামে পরিচিত। মণিপুরবাসীর অত্যন্ত প্রিয় এই মাছ। তাই প্রতি বছর মণিপুরে পেংবা দিবস পালিত হয়।[২]
বর্তমানে বাংলাদেশ[৩], ভারতের বিভিন্ন স্থানে মাছটি চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলায় বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে মনিপুরী ইলিশের চাষ শুরু হয়। মাছটি ৭-৮ মাসে ৪০০-৬০০ গ্রাম ওজনের হয়। পেংবা শাকাশি মাছ। দ্রুত বর্ধনশীল এই মাছচাষে তুলনামূলকভাবে বেশি খাবারের প্রয়োজন হয়।[৪] ভারতের বর্ধমানের ভাতারে এই ইলিশ চাষ শুরুও হয়েছে।[৫] লুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় থাকা এই মাছের কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে ওড়িশার সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার আ্যকোয়া কালচার বা সিফার মৎস বিজ্ঞানীরা সফলতা লাভ করেন।
রূপালী ইলিশের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা তথাকথিত ‘মনিপুরী ইলিশ’ মাছের পোনা উৎপাদন ও চাষে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ইলিশের অনন্যতা রক্ষা এবং ভেজাল রোধে সম্প্রতি দেশের সব জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। ভারতের মনিপুরী রাজ্যে এ মাছের চাষ হয় বলে একে মনিপুরী ইলিশ বা পেংবা বলা হয়।
সম্প্রতি ময়মনসিংহ জেলা মৎস্য দপ্তর থেকে এ জাতের মাছের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয় বলে কর্মকর্তারা জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মনিপুরী ইলিশের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা সম্পাদনা
মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মৎস্যচাষ) আজিজুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, তথাকথিত ‘মনিপুরী ইলিশ’ নামক একটি মাছের প্রজাতি অন্য দেশ থেকে অবৈধভাবে এদেশে প্রবেশ করেছে ও হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন করে চাষ হচ্ছে বলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ময়মনসিংহ জেলা মৎস্য দপ্তর এরই মধ্যে একটি বেসরকারি হ্যাচারিকে অবৈধভাবে এ মাছের পোনা উৎপাদনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করেছে।
অধিদপ্তরের চিঠিতে আরো বলা হয়, হ্যাচারি আইন, ২০১০ এর ৮ ও ৯ নম্বর ধারা মোতাবেক মহাপরিচালক বা তার কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীত কোনো জীবিত মৎস্য, রেণু পোনা আমদানি এবং পোনা উৎপাদন করা যাবে না। তাছাড়া, মৎস্য সঙ্গনিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৯ নম্বর ধারা মোতাবেক আমদানি অনুমতিপত্র ছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো মৎস্য, মৎস্য পণ্য, উপকারী জীবাণু বা প্যাকিং দ্রব্যাদি আমদানি করা যাবে না।
এ অবস্থায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের আওতাধীন কোনো হ্যাচারিতে এ মাছের পোনা উৎপাদন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া এবং কোনো পুকুরে বা খামারে এ মাছের চাষ যেন সম্প্রসারিত না হয় সে বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।[৬]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ Vishwanath, W. (২০১০)। "Osteobrama belangeri"। The IUCN Red List of Threatened Species। 2010: e.T168218A6467894। ডিওআই:10.2305/IUCN.UK.2010-4.RLTS.T168218A6467894.en। Downloaded on 24 December 2017.
- ↑ "ভোজনরসিক বাঙালির জন্য সুখবর, এবার রাজ্যে শুরু হবে মণিপুরী ইলিশ চাষ | sangbadpratidin"। m.sangbadpratidin.in। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "ঝিনাইদহে এবার মনিপুরি ইলিশ মাছের চাষ! | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "দেশেই চাষ হচ্ছে মনিপুরি ইলিশ"। বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "ইলিশের জন্যে অপেক্ষার দিন শেষ, গ্রাম বাংলার পুকুরেই এবার শুরু ইলিশ চাষ | national - News18 Bangla, Today's Latest Bengali News"। bengali.news18.com। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২০।
- ↑ "চাষে নিষেধাজ্ঞা"। ১৯ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 19-10-2020। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)
- ফ্রয়েসে, রেইনের এবং পাউলি, ড্যানিয়েল, এডস। (২০০৬)। "Osteobrama belangeri" ফিশবেজে এপ্রিল ২০০৬ সংস্করণ।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |