মধুমিতা রাউত, ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য ওড়িশির একজন নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিকল্পক। তিনি মমতা খুন্তিয়া এবং মায়াধর রাউতের কন্যা, যিনি ১৯৫০ এর দশকে শাস্ত্রভিত্তিক জ্ঞান দিয়ে ওড়িশিকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। তিনি দিল্লিতে থাকেন এবং জয়ন্তিকা সমিতির ''মায়াধর রাউত ওড়িশি নৃত্য বিদ্যালয়ে'' শিক্ষকতা করেন। [১]

মধুমিতা রাউত
কোনার্ক সূর্য মন্দিরে ওডিসির ভঙ্গিতে মধুমিতা রাউত
জাতীয়তাভারতীয়
পেশানৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিকল্পক

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

মধুমিতা রাউতের পরিবার দিল্লি আসে যখন রাউতের বয়স মাত্র এক বছর। [২] তাঁর বাবা, মায়াধর রাউত, ওড়িশি নৃত্যের একজন বিখ্যাত নৃতশিল্পী, নৃত্য পরিকল্পনাকারী এবং গুরু। মধুমিতা রাউতের জন্ম দিল্লিতে না হলেও বেড়ে উঠেন দিল্লিতেই, নৃত্য ও সংগীতের পরিবেশে। তাঁর পিতার তত্বাবধানেই তাঁর নৃত্যের হাতেখড়ি হয় ছোট্টবেলাতেই, ওড়িয়া আদিবাসী লোকনৃত্য দিয়ে। যখন তাঁর বয়স প্রায় ৪, তখন তাঁর আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। মধুমিতা রাউত এক সাক্ষাৎকারে বলেন ''তবে আমি কখনও ক্লাসে একা শিখিনি। সর্বদা একটি বড় গ্রুপের সাথে এবং প্রচুর বরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের সাথে। আমি সবচেয়ে ছোট ছিলাম।'' [৩] মধুমিতা রাউত তাঁর লেখাপড়া করেছেন ভারতীয় বিদ্যা ভবনের স্কুলে এবং দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ কলেজে[৪] তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর এবং পরিবেশন শিল্পকলায় ডিপ্লোমা অর্জন করেছেন।

পেশা সম্পাদনা

মধুমিতা রাউত ওড়িশার মায়াধর ঘরানায় তাঁর পিতা, মায়াধর রাউতের উত্তরসূরী। এই ঘরানা মাধুর্য, অভিব্যক্তির গভীরতা এবং ধ্রুপদী 'শাস্ত্র' ভিত্তিক প্রযুক্তিগত নিখুঁত ভঙ্গির জন্য পরিচিত।

তাঁর প্রবর্তনের মধ্যে আছে হাঙ্গেরীয় কবিতার ওপর নৃত্য গঠন, গ্যোটের কবিতার উপর নৃত্য পরিকল্পনা, নেদারল্যান্ডের বালিনিয় নৃত্যশিল্পী দিয়া তন্ত্রির সাথে ফিউশন নৃত্য। তিনি সামাজিক প্রয়োজনে কার্যকরভাবে নৃত্য মাধ্যমটি ব্যবহার করেছেন। তিনি ভারতের ক্যান্সার সমিতিতে সাহায্যের জন্য নৃত্য পরিবেশন করেছেন, দিল্লি, ডাব্লুডাব্লুএফ (ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড) তহবিল বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছেন, ভারত, ভারতে ব্যাপকভাবে ঘটা কন্যা ভ্রূণ হত্যা নির্মূলের প্রচারকার্যে তিনি নৃত্যকে বেছে নিয়েছিলেন।

নেদারল্যান্ডের চ্যানেল আই তাঁর উপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। স্টুটগার্ট (জার্মানি) এবং হাঙ্গেরিয়ান টেলিভিশনগুলি তাদের তথ্যচিত্রগুলিতে রাউতের ভারতীয় নৃত্য প্রদর্শন করেছে। ওলন্দাজ টেলিভিশন প্রযোজিত একটি ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন রাউত। ভারতীয় মূল্যবোধকে চিত্রিত করা ছবিটি সমগ্র পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে খুব প্রশংসিত হয়েছিল।

মধুমিতা রাউত ভারতে এবং আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, স্পেন, মরোক্কো, ফ্রান্স, পর্তুগাল, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি দেশের বড় নৃত্য উৎসবে নৃত্য পরিবেশন করেছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, জাপান এবং জার্মানিতে ওড়িশি পড়ান। [৫]

তিনি ওড়িশা রাজ্য ঘুঙুর সম্মান, উৎকল কন্যা পুরস্কার, মহিলা শক্তি সম্মান, ভারত নির্মাণ পুরস্কার, ওড়িশা জীবন্ত কিংবদন্তি পুরস্কার ২০১১ সহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।

মধুমিতা রাউত লিখেছিলেন "ওড়িশি: কি, কেন এবং কীভাবে: বিবর্তন, পুনরুদ্ধার এবং কৌশল", বইটি বি আর রাইমস কর্তৃক ২০০৭ সালে, দিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। [৬]

পুরস্কার সম্পাদনা

রাউত নিম্নলিখিত পুরস্কার পেয়েছেন:

  • ওড়িশা রাজ্য ঘুঙুর সম্মান, ২০১০ [৭]
  • উৎকল কন্যা পুরস্কার, ২০১০
  • মহিলা শক্তি সম্মান, ২০১০
  • ভারত নির্মান পুরস্কার, ১৯৯৭ [৮]
  • ওড়িশা জীবন্ত কিংবদন্তি পুরস্কার, ২০১১ [৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "DANCE diaries"The Hindu। ২০১৪-১০-০৯। 
  2. "MADHUMITA RAUT, AN ODISSI DANCER AND TEACHER"anandfoundation dot com। ২৪ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২০ 
  3. "MADHUMITA RAUT, AN ODISSI DANCER AND TEACHER"anandfoundation.com। ২৪ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২০ 
  4. "Grand welcome awaits fuchchas"Times of India। ২০০৭-০৭-০৮। 
  5. "Odissi Workshop in Germany"Orissa Diary। ১৬ মে ২০১১। ৩ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১১ 
  6. Odissi: What, Why and How: Evolution, Revival & Technique by Madhumita Raut, Published B.R.Rhythms, Delhi,2007.আইএসবিএন ৮১-৮৮৮২৭-১০-X.
  7. "Annual awards of 'Ghungur' cultural organisation presented"The Hindu। ১৪ এপ্রিল ২০১১। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২০ 
  8. "Bharat Nirman Awards" 
  9. "Archived copy"। ২০১৩-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-২৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা