একটি ভূতুরে বাড়ি বা পোড়া বাড়ি হলো সেই সকল বাড়ি বা ভবন, যা সেই সম্পত্তির সাথে পরিচিত বা কোন সাবেক বাসিন্দাদের মৃত আত্মা বা ভূত দ্বারা অধ্যুষিত বলে মনে করা হয়। এক্ষেত্রে মৃতের আত্মাতে পূর্বের কোন মানসিকতা এবং আত্মার মধ্যে পূর্বের কোন হিংসাত্মক বা বিয়োগান্তক ঘটনা যা অতীতে উক্ত ভবনে সম্পন্ন হয়েছিল; যেমন, খুন, দূর্ঘটনায় মৃত্যু, বা আত্মহত্যা ইত্যাদি যুক্ত হয়।[১] এসব ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানীক ব্যখ্যা হলো, পুরাতন বাড়িগুলোতে বিষাক্ত কিছু পদার্থ থাকে যা থেকে মানুষ তার অবচেতন মনে বিভিন্ন শব্দ শুনতে পেয়েছে বলে মনে করে, স্বপ্নের মধ্যে হাটাহাটি করে বা কোন কোন সময় হ্যালোসিনেশনে ভোগে।

ইংল্যান্ডের বোরলি রেকটোরিকে ভূতুরে বাড়ি হিসেবে মনে করা হয়।

যাইহোক, ২০০৫ সালে গ্যালাপ কম্পানির একটি জড়িপে দেখা গেছে, ৩৭ শতাংশ আমেরিকান, ২৮ শতাংশ কানাডিয়ান ও ৪০ শতাংশ ব্রিটিশ বিশ্বাস করে ভূতুরে বাড়ির অস্তিত্ব রয়েছে এবং কোন ভবন বা বাড়ি ভূতুরে হতে পারে।[২][৩]

সম্ভাব্য কারণ সম্পাদনা

বিজ্ঞান লেখক টেরেন্স হিন্সের মতে, ঠান্ডা আবহাওয়া, মচমচ শব্দ ও অদ্ভুত শব্দ যে কোন বাড়িতেই থাকতে পারে, বিশেষ করে বাড়িটি যদি হয় পুরাতন এবং এই সকল শব্দকে খুব সহজেই মানুষ অস্বাভাবিক শব্দ বা বাড়িতে আত্না রয়েছে বলে ভুল করে।[৪]

সন্দেহপ্রবণ তদন্তকারী জো নিকেলে লিখেছেন যে, তিনি যে সকল তদন্ত করেছেন তার প্রায় সবগুলোতেই তিনি ভূতুরে ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে শারীরিক বিভ্রম, সপ্নের মধ্যে হাঁটা এবং মনের প্রভাব ইত্যাদি বিষয়াদি খুঁজে পেয়েছেন। নিকলের মতে, এসব ঘটনায় বিভিন্ন ধরনের উপদেশ ও বিভিন্ন বির্তক, ঘটনা হৃদয়ঙ্গম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিকেল আরো বলেন, মানুষ যখন কোন অস্বাভাবিক ঘটনা আশা করে এবং এটি সবসময় তার হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হয়, তখন সে ঘটনাস্থলে গিয়েও অবচেতন মনে তার আশানুরুপ ঘটনাই দেখতে পায়।[৫]

বিষবিদ্যায় পারদর্শী আলবার্ট ডোনে বিশ্বাস করেন যে, ভূতুরে বাড়ির ঘটনায় শিকারের দেহে কার্বন মনোক্সাইড, কীটনাশক ও ফর্মালডিহাইডের প্রভাবে সে হ্যালুসিনেশন ভূগতে পারে। ডোনে ভিক্টোরিয়া যুগের গ্যাস আলো প্রকোপ ও বিংশ শতাব্দীর ভূতুরে বাড়ির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে এটিকে, “ভূতুরে বাড়ি উপসর্গ” বলে উল্লেখ করেন।[৬] ডোনে আরো বলেন, ১৯২০-এর দশকের একটি ম্যাগাজিনে ভূতুরে বাড়ির একটি পরিবার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল যাতে কার্বন মনোক্সাইডের কথা উল্লেখ করা হয়। বাড়ির পরিবারের সদস্যরা মাথাব্যথা, ক্লান্তি ও হতাশায় ভূগতেন।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

পদটীকা

  1. Watts, Linda S. (২০০৭)। Encyclopedia of American Folklore। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 192–। আইএসবিএন 978-1-4381-2979-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১২ 
  2. Lyons, Linda (১ নভেম্বর ২০০৫)। "Paranormal Beliefs Come (Super)Naturally to Some"Gallup Poll। Gallup Organization। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  3. Moore, David W. (১৬ জুন ২০০৫)। "Three in Four Americans Believe in Paranormal"Gallup Poll। Gallup Organization। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  4. Hines, Terence (১৯৮৮)। Pseudoscience and the paranormal: a critical examination of the evidence। Prometheus Books। আইএসবিএন 978-0-87975-419-8 
  5. Nickell, Joe। "Catching Ghosts"June 2008। Committee for Skeptical Inquiry। ১২ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১২ 
  6. McKay Jenkins (১৯ এপ্রিল ২০১১)। What's Gotten Into Us?: Staying Healthy in a Toxic World। Random House Digital, Inc.। পৃষ্ঠা 61–। আইএসবিএন 978-1-4000-6803-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১২ 
  7. Glass, Ira। "And the Call Was Coming from the Basement"This American Life। Public Radio International। 

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা