ভুসুক পা

বৌদ্ধ পণ্ডিত

চর্যাগীতি রচনার সংখ্যাধিক্যে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী হলেন চর্যাপদের বাঙ্গালি কবি ভুসুক পা। তাঁর রচিত আটটি পদ চর্যাপদ গ্রন্থে সংগৃহীত হয়েছে। সৌরাষ্ট্রের রাজপুত্র শান্তিদেবেরও অপর নাম ভুসুকু ছিল তবে শান্তিদেব ভূসুকু আর কবি ভুসুকু এক ব্যক্তি কিনা সেই বিষয়ে পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী যথেষ্ট সংশয় প্রকাশ করেছেন। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে "কবি ভুসুকু" বাঙালি ছিলেন। শান্তিদেব ভুসুকু তার শেষ জীবনে নালন্দায় বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে নিঃসঙ্গ ভাবে অবস্থান করেন। সেজন্য ভুক্তির ভু, সুপ্তির সু এবং কুটিরের কু -এই তিন আদ্যক্ষর যোগে তাঁকে ভুসুক বলে পরিহাস করা হত। ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র মতে শান্তিদেব ভুসুক সাত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বর্তমান ছিলেন। রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে ভুসুকুর জীবিৎকালের শেষ সীমা ৮০০ খ্রিস্টাব্দ। বাংলায় মহারাজ ধর্ম পালের রাজত্বকালে (৭৭০-৮০৬ খ্রিস্টাব্দ) কবি ভুসুকু জীবিত ছিলেন। তিনি রাউত বা অশ্বারোহী সৈনিক ছিলেন। পরে ভিক্ষু ও সিদ্ধ হন। 'আজি ভুসুকু বঙ্গালী হইলী। নিঅ ঘরিণী চন্ডালে লেলী।' - কবি ভুসুকু স্বয়ং এই উক্তির মাধ্যমে নিজেকে বাঙ্গালী বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর স্বরচিত চর্যাগীতির এই উক্তিকে প্রমাণ স্বরূপ বিবেচনা করে তাঁকে বাঙ্গালী কবি হিসেবে গণ্য করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

সূত্রঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম