ভিল্লু পাট্টু (তামিল: வில்லுப்பாட்டு), যেটি ভিল্লাদিচাম্পাতু নামেও পরিচিত, ভারতে সঙ্গীতের গল্প বলার একটি প্রাচীন রূপ যেখানে বর্ণনা সঙ্গীতের সাথে মিশে থাকে। এটি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুকেরালা এবং সেইসাথে উত্তর-পূর্ব শ্রীলঙ্কার একটি শিল্প।[১] পূর্বকালীন ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের নাদার এবং এজাভা বর্ণের মধ্যে এই শিল্পের রূপটি জনপ্রিয়।[২] গানের সহজ সুর এবং শ্লোক গল্পটিকে অনুসরণ করা সহজ করে তোলে। ভিল্লু (ধনুক) হল যোদ্ধাদের পুরনো অস্ত্র - এটি আপাত বিপরীতভাবে সঙ্গীতে ব্যবহার করা হয়, এটি ভিল্লু পাট্টু শিল্পীদের একটি প্রাথমিক বাদ্যযন্ত্র (একটি বাদ্যযন্ত্র ধনুক)।

ভিল্লু পাট্টু (তামিল: வில்லுப்பாட்டு), ভিল্লাদিচাম্পাতু এবং ভিলিসাই নামেও পরিচিত, সঙ্গীত সহযোগে গল্প বলার একটি প্রাচীন রূপ যেখানে বর্ণনা সঙ্গীতের সাথে মিশে থাকে।
১৯ শতকের এজাভা/চান্নার সঙ্গীতশিল্পী: ঐতিহ্যবাহী ভিল্লাদিচাম্পাতু পরিবেশন করছেন

সাধারণ বর্ণনা সম্পাদনা

 
তামিল লোকশিল্পীরা তিরুনেলবেলির কাছে একটি উৎসবের (পাঙ্গুনি উত্থিরাম) সময় একটি সুদালাই মদন মন্দিরে ভিল্লুপাট্টু উপস্থাপন করছেন।

তামিল গ্রামে, অভিনয়শিল্পীরা পৌরাণিক থেকে সামাজিক সব ধরনের গল্পই বর্ণনা করেন। মূল গল্পকার ধনুক বাজিয়ে গল্পটি বর্ণনা করেন। নীচের দিকে মুখ করে রাখা মাটির পাত্রের উপর ধনুকটি রাখা থাকে। একজন সহ-শিল্পী গান গাওয়ার সময় পাত্রটিতে আঘাত করেন। সাধারণত অন্য একজন সহ-গায়ক থাকেন যিনি বর্ণনায় সক্রিয় শ্রোতা হিসেবে কাজ করেন, তিনি গানের সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত মৌখিক প্রতিক্রিয়া দেন। স্থানীয় সরকার কখনও কখনও এটিকে সামাজিক বার্তা এবং প্রচারের বাহন হিসেবে ব্যবহার করে। ভিল্লু পাট্টু দলগুলি সাধারণত সুদালাই মদন, মুথারাম্মান, পেচিয়াম্মান, ইসাকিয়াম্মান ইত্যাদি দেবতার সাথে সম্পর্কিত উৎসবের জন্য অনুষ্ঠান করে। ভিলু পাট্টুর ঐতিহ্য দক্ষিণ তামিলনাড়ু, দক্ষিণ কেরালা এবং উত্তর-পূর্ব শ্রীলঙ্কার সংস্কৃতির সাথে জড়িত।

 
কেরালার লোক শিল্পীরা ভিলুপাট্টু পরিবেশন করছেন। তাঁদের গানের সাথে আছে একটি ভিল্লাদিবাদ্যম। যন্ত্রটি একটি "যৌগিক কম্পনস্বরী", যা একটি দীর্ঘ ধনুক দিয়ে তৈরি, এতে ঝোলানো আছে ব্রোঞ্জের ঘণ্টা, একটি টেরা-কোটা পাত্র এবং ঝুমঝুমি[৩]

এছাড়াও রয়েছে উদুক্কি (তামিল:உடுக்கை), কুড়াম (তামিল:குடம்), থালা, কাট্টাই (তামিল:கட்டை), যেগুলি প্রদর্শনের সময় সম্পূরক যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উদুক্কি হল একটি ছোট ড্রাম যার একটি পাতলা মাঝের অংশ থাকে, যেটি বাম হাতে ধরা হয় এবং বাদ্যযন্ত্রটি ডান হাতের আঙ্গুল দিয়ে বাজানো হয়। মাঝে মাঝে, ভিল্লু পাট্টু দল নিজেদেরকে দুটি দলে বিভক্ত করে, প্রত্যেক দল একে অপরের বিষয়ের বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করার চেষ্টা করে। একে বলে লাবণী পাট্টুভিল্লু পাট্টু শিল্পীদের ব্যবহৃত গানগুলি বেশিরভাগই ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীত। গ্রামে মন্দিরের উৎসবের সময় এগুলি বাজানো হয়। ভিল্লু পাট্টুর গানগুলি বেশিরভাগ সময়েই একটি দেবতার প্রশংসা করে গাওয়া হয়। আজকাল ভিল্লু পাট্টু পরিবেশনকারী শিল্পীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে কারণ এটি থেকে অর্জিত আয় এতই কম, যে তা জীবিকা নির্বাহ করার জন্য যথেষ্ট নয়।[৪]

পুস্তক সমূহ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Arts - Villu Paatu"। Tamilnadu.com। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  2. "Villu Paatu"। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  3. Alastair Dick (১৯৮৪)। "Villādivādyam"। Sadie, Stanley। The New Grove Dictionary of Musical Instruments। পৃষ্ঠা 727। Volume 3। 
  4. http://www.wiki.indianfolklore.org/images/a/a1/Villupattu_zWorkshop_.pdf[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা