ব্যাঙ্কিং ন্যায়পাল প্রকল্প

ব্যাঙ্কিং ন্যায়পাল প্রকল্প  (ইংরেজি: Banking Ombudsman Scheme) হল ২০০৬ সালে ভারত সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে সৃষ্ট  আপাতদৃষ্টিতে একটি আইনি সংস্থা, যার দ্বারা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ও গ্রাহকের ঐকমত্যে ভারতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় উদ্ভূত গ্রাহকদের অসন্তোষ ও অভিযোগের নিষ্পত্তি  ও সমাধান করার পন্থা। ভারতে ১৯৯৫ সালের ১৪ই জুন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দেশে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সম্পর্কিত “ব্যাঙ্কিং ন্যায়পাল প্রকল্প” প্রথম চালু করে। ২০০২ সালে সেটি প্রথম সংশোধিত হয়। বর্তমানে প্রচলিত পরিকল্পনাটি ২০০২ সালের পরিকল্পনার পরিবর্তিত রূপ। বর্তমানে ব্যাংকিং ওম্বডসম্যান প্রকল্প ২০০৬,অনুসারে ১লা জানুয়ারি হতে বলবৎ হয়েছে (২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ১লা জুলাই তারিখে প্রশংসিত) [১]

ভারতে ব্যাঙ্ক ন্যায়পাল ২০০২ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৩৬,০০০ অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে। সারা দেশে বাইশটি আঞ্চলিক দপ্তরে ব্যাঙ্ক ন্যায়পাল নিযুক্ত আছেন। সম্প্রতি জম্মু, রায়পুর, মুম্বই-এ দ্বিতীয় এবং নতুন দিল্লি তে তৃতীয় ন্যায়পালের দপ্তর খোলা হয়েছে।

ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় অভিযোগের ধরন ও বিস্তার ব্যাপক। সেই মত ব্যাঙ্কিং ন্যায়পালের বিচার্য বিষয়ের আওতা ও ক্ষমতা অনেক বিস্তৃত। নিচে দেওয়া যে কোন একটির ভিত্তিতে ব্যাঙ্কিং ন্যায়পালের কাছে অভিযোগ জানান যায়-

  • চেক, ড্রাফ্ট, বিল ইত্যাদির অর্থ না দিলে অথবা অর্থ দিতে অযধা দেরি করলে বা অর্থ সংগ্রহে দেরি করলে;
  • ছোট বা কম মূল্যের নোট যদি নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া গ্রহণযোগ্য না হয় এবং তারজন্য যদি কোন কমিশন নেওয়া হয়;
  • কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া যদি কয়েন (মুদ্রা) নিতে অস্বীকার করা হয় এবং তার জন্য যদি কোন কমিশন নেওয়া হয়;
  • প্রেরিত টাকা যদি না দেওয়া হয় অথবা দিতে দেরি করা হয়;
  • ড্রাফ্ট, পে-অর্ডার অথবা ব্যাঙ্কার্স চেক দিতে না পারে অথবা দিতে দেরি করা হয়;
  • নির্দিষ্ট সময় কাজ না করা হয়;
  • গ্যারান্টি বা লেটার অফ ক্রেডিটের উপর টাকা দিতে না পারলে;
  • ব্যাঙ্কের অথবা তার প্রতিনিধির দ্বারা লিখিত পরিষেবার (ঋণ ব্যতীত) কোন অঙ্গীকার রাখা না হয় অথবা এ ব্যাপারে দেরি করা হয়;
  • গ্রাহকের খাতায় অর্থ জমা না দেওয়া অথবা দিতে দেরি করা, আমানতের অর্থ ফেরত না দেওয়া অথবা সঞ্চয়, চালু অথবা অন্য ধরনের অ্যাকাউন্টের উপর সুদের হার সংক্রান্ত ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের নির্দেশিকা না মানা হয়;
  • রপ্তানিকারদের জন্য রপ্তানির অর্থ পেতে দেরি হওয়া, রপ্তানির বিল ভাঙাতে দেরি হওয়া ইত্যাদি অভিযোগগুলি যদি ভারতে ব্যবসা করছে এমন ব্যাঙ্কের সম্বন্ধে হয়;
  • যদি কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া আমানত খাতার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে অস্বীকার করা হয়;
  • আগে থেকে না জানিয়ে যদি গ্রাহকের উপর অযথা আর্থিক ভার চাপানো হয়;
  • এটিএম, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দ্বারা জারি করা নির্দেশাবলি যদি কোন ব্যাঙ্ক অথবা তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমান্য করে;
  • পেনশন ভাতা না দেওয়া অথবা দেরি করা হয় (সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক দায়ী হবে, অধস্তন কোন কর্মচারী নয়)
  • ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক অথবা সরকারের প্রয়োজনে তোলা রাজস্ব যদি গ্রহণ না করা হয় অথবা নিতে দেরি করা হয়;
  • সরকারি অর্থপত্র ছাড়তে অস্বীকার করা অথবা ছাড়তে দেরি করা অথবা ভাঙাতে দেরি করা বা না পারা;
  • কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অথবা কোন পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়া কোন জমা আমানত খাতা বন্ধ করা হয়;
  • গ্রাহকের সম্মতি ব্যতিরেকে খাতা বন্ধ করা হয়;
  • যদি চলতি আমানত বন্ধ করতে রাজি না হয় অথবা বন্ধ করতে অযথা দেরি হয়;
  • ব্যাঙ্ক দ্বারা মান্য বিধিসম্মত কাজের নিয়মাবলী অমান্য করা হয় এবং
  • ব্যাঙ্কের আধিকারিক কর্তৃক ভুল তথ্য প্রদানে গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতি হলে;
  • ব্যাঙ্ক অথবা তার পরিষেবা সংক্রান্ত যে নির্দেশ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দিয়েছেন তা যদি অমান্য করা হয়;
  • ভারতে অনাবাসী ভারতীয়দের খাতায় বিদেশের অর্থ, সঞ্চিত অর্থ এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে কোন অভিযোগ;[২]

তাদের বিজ্ঞপ্তি নং CSD দেখুন। BOS.4638 / 13.01.01 / 2006-07 ২৪ মে, ২০০৭ তারিখে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক তাদের ব্যাংকিং ওম্বডসম্যান প্রকল্প, ২০০৬ সংশোধন করেছে এবং এই প্রকল্পটি সংশোধিত কার্যকরভাবে কার্যকর হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://m.rbi.org.in/Scripts/FAQView.aspx?Id=24
  2. "Archived copy"। ২০১২-০১-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০৭