কমরেড আছদ্দর আলী সম্পাদনা

কমরেড আছদ্দর আলীর[১] জন্ম ১৯২৫[২] সালে সিলেটের ওসমানীনগর থানার তাজপুর গ্রামে। বাবা মরম আলী, মা জুলেখা খাতুন।

তিনি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। বৃটিশ আমলের শেষ দিকে এবং ১৯৪৭ সালের ভারত পাকিস্তান ভাগ এবং তার পরবর্তী পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময় এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র তৈরি হওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে যুক্ত ছিলেন আসদ্দর আলী।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে সিলেটের রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন আসদ্দর আলী।  এর পর ৬৬'র ছয় দফা, উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান,  সত্তুরের নির্বাচনে নেতৃত্ব দিয়েছেন আছদ্দর আলী।  তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।  

বাম মতাদর্শের হওয়ার কারণে রাশিয়া ও চীনের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। তিনি বেশ কয়েক বার চীন, রাশিয়া সহ অন্যান্য দেশ সফর করেছেন।

সমাজতান্ত্রিক মতবাদে বিশ্বাসী আছদ্দর আলী ১৯৪৯ সালের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ গ্রহন করেন। পরবর্তীতে মুসলিম লীগ,আওয়ামী মুসলিম লীগ,যুবলীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী) এর রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তার সর্বশেষ রাজনৈতিক দল "বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল। আমৃত্যু তিনি সাম্যবাদী দলের সভাপতি ছিলেন। তাজপুর ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা ছিলেন কমরেড আছদ্দর আলী। ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম প্রধান সংগঠক হিসেবে তিনি সুপরিচিত। তিনি বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অল্পের জন্য হেরে যান।

শিক্ষা সম্পাদনা

তিনি মদন মোহন কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন।

বিয়ে ও সংসার সম্পাদনা

তিনি ১৯৭৮ সালে বিয়ে করেন।  তার স্ত্রীর নাম শহীদুন্নেসা শান্তি।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

কমরেড আছদ্দর আলী সমাজতন্ত্রীক মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৯৪৯ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য হন। তিনি মুসলিম লীগ,আওয়ামী মুসলিম লীগ,যুবলীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পাট্টি (ভাসানী)    বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে অল্পের জন্য হেরে যান। জননেতা আসাদ্দর আলী ছিলেন নানামুখী প্রতিভার সমন্বিত বহিঃপ্রকাশ। তিনি বহু প্রতিভাধর ব্যক্তিত্বের বাহক যদিও রাজনীতিবিদই হচ্ছে তাঁর মুখ্য পরিচয়। কমরেড আসাদ্দর আলী অসাধারণ কাব্যগুণের অধিকারী ছিলেন। সিলেটে ১৯৪৮ এবং ১৯৫২ সালে আন্দোলনের দু’পর্যায়ে যে কয়েকজন ভাষাসংগ্রামী অনবদ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অগ্রবর্তী।

পেশা সম্পাদনা

১৯৫১ সালে ফরেস্টার পদে যোগদান করলেও কয়েক মাসের মধ্যেই চাকুরীতে ইস্তফা দিয়ে সার্বক্ষণিক রাজনীতি চালিয়ে যান। কমরেড আছদ্দর আলীর মূল পেশা ছিলো রাজনীতি। তবে তার পাশাপাশি তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা, সাংবাদিকতা, প্রেস ও প্রিন্টিং  ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন[৩]

বিদেশ সফর সম্পাদনা

চীন,গ্রেট ব্রিটেন,ইন্ডিয়া, রাশিয়া সহ অনেক দেশ সফর করেছেন।

মৃত্যু সম্পাদনা

২ ফেব্রুয়ারী ১৯৯০, তিনি ক্যান্সারে আক্রন্ত হয়ে মারা যান।


সম্পাদনা

  1. Media, Rainbow। "কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ : জীবন বৃত্তান্ত: কমরেড আসাদ্দর আলী"কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৫ 
  2. Media, Rainbow। "কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ : জীবন বৃত্তান্ত: কমরেড আসাদ্দর আলী"কমরেড আসাদ্দর আলী স্মৃতি পরিষদ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৫ 
  3. Today 24, Sylhet; ইসলাম, এমাদ উল্লাহ শহিদুল। "কমরেড আসাদ্দর আলী, মৃত্যু নেই যাঁর"sylhettoday24.news (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৫