ব্যবহারকারী:Farhana Zaman Liza/সরকারী করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা

সরকারী করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি সরকারি বিদ্যালয়। এটি ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলটি দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভাগীয় শহর খুলনার প্রাণকেন্দ্র আহসান আহমেদ সড়কে অবস্থিত। এর ইনিস্টিটিউট কোড (EIIN) নম্বর 117138.

১.৭ একর জমির উপর স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত। এরমধ্যে ১.২০ একরের উপর একাডেমিক ভবন সমূহ এবং ০.০৩ একর জমির উপর ছাত্রী নিবাস অবস্থিত। স্কুলটিতে ০.৪০ একরের একটি বড় মাঠ রয়েছে। [১]

ইতিহাস

শিল্পনগরী খুলনায় ১৯১২ সালে সরকারী করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।


একাডেমিক কার্যক্রম

কার্যক্রম দুইটি বিভাগে বিভক্ত। প্রাতঃ বিভাগ ও দিবা বিভাগ। স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক, তিনজন সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অতিরিক্ত তিনজন প্রেষণে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া দুই জন উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক, দুই জন অফিস সহকারী ও ১০ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদ রয়েছে। প্রাতঃ এবং দিবা শাখার জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকা। প্রাতঃকালীন শাখার কার্যক্রম চলে সকাল ৭ টা ১৫ মিনিট থেকে ১১ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। দিবা শাখার কার্যক্রম চলে ১২ টা থেকে ৪ টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। স্কুলে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৩২ টি শাখা রয়েছে। এদের ১৬ টি প্রাতঃ শাখার এবং ১৬ টি দিবা শাখার। সাধারণত একটি শাখায় ছাত্রী সংখ্যা ৬০ থেকে সবোচ্চ ৮০ জন। সব মিলিয়ে স্কুলের মোট ছাত্রী সংখ্যা ২৩২০ জন।


সহশিক্ষা কার্যক্রম

  • বুলেটকৃত তালিকা আইটেম
  • বিতর্ক ক্লাব
  • স্কাউট দল
  • বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র
  • বিজ্ঞান ক্লাব
  • গণিত ক্লাব
  • সাংস্কৃতিক ক্লাব

এছাড়া খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে যা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরিচালনা করে থাকে।


খেলাধুলা

এই স্কুলে বিশাল ১ টি খেলার মাঠ রয়েছে। এতে ব্যাডমিন্টন, হ্যান্ডবল, ফুটবল, ক্রিকেট ছাড়াও অন্যান্য খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই স্কুলের ছাত্রীরা বিভিন্ন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে এবং প্রায়ই বিজয়ী হয়ে স্কুলের জন্য সুনাম বয়ে আনে। প্রতি বছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।


স্কুলের নতুন ভবন

স্কুলের মূল ভবনটি ৩তলা দালান। এছাড়া আরও ৫ টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। মূল ভবনে রয়েছে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন, শিক্ষিকা মিলনায়তন, অফিস কক্ষ, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কক্ষ, শ্রেণীকক্ষ ও সম্মেলন কক্ষ। গ্রন্থাগার, গবেষণাগার, ক্রীড়া কক্ষ, স্কাউট ড্রেন ইত্যাদি মূল ভবনের চতুর্দিকে অবস্থিত। এছাড়াও রয়েছে বিশাল প্রধান শিক্ষকের বাসভবন।


গবেষণাগার

পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, কম্পিউটার, কৃষি ইত্যাদি গবেষণাগার রয়েছে। এসব গবেষণাগারে বহু মূল্যবান যন্ত্রপাতি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যাবহারিক বিষয়ে জ্ঞান লাভের জন্য এসব উপকরন নিয়মিত ব্যবহারিত হয়।


গ্রন্থাগার

স্কুলে রয়েছে বিশাল একটি লাইব্রেরী। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের নামী দামী কয়েক হাজার বই। শিক্ষার্থীরা এখানে সচ্ছন্দে বসে পড়তে পারে এবং তাদের পছন্দের বই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাড়ি নিয়ে যেতে পারে।


হল রুম

এই স্কুলের ২তলার একটি বিশাল বড় হল রুম রয়েছে। স্কুলের বিভিন্ন অনুস্ঠান সমূহ এই হল রুমে অনুস্ঠিত হয়।


বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বছরের বার মাস স্কুলে নানা রকম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পালন করা হয়। আর্ন্তজাতিক ভাষা আন্দোলন দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতির জনকের জন্মদিন ও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হয়। ঈদে-মিলুদুন-নবী, বর্ষবরণ, বাসন্তী উৎসব ইত্যাদি নানা রকম অনুষ্ঠান ছাত্রী-শিক্ষক-শিক্ষিকারা সম্মিলিতভাবে পালন করে। এছাড়াও প্রতি বছরই আয়োজিত হয় বার্ষিক বনভোজন, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিদ্যালয় দিবস, বার্ষিক পুরষ্কার বিতরণীসহ সারা বছর বিভিন্ন আয়োজনে মুখর থাকে স্কুল ক্যাম্পাস।[৩]


স্কুল ম্যাগাজিন

শুকতারা নামে স্কুল ম্যাগাজিন টি প্রকাশিত হয় স্কুলের মেধাবী, সাহিত্য প্রিয় ছাত্রীদের লেখায়। থাকে শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের লেখাও।


শিক্ষক-অভিভাবকের মতবিনিময় সভা

বছরে তিন বার ছাত্রদের অগ্রগতি, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও নানাবিধ সমস্যা-সমাধান ইত্যাদি ব্যাপারে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।


বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল

১৯১২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এর ফলাফল সকলের দৃষ্টি আর্কষণ করে। বিগত ১০৮ বছর ধরেই স্কুলটির ফলাফল বরাবরই চোখে পড়ার মত। ২০০১ সালে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হবার আগে স্কুলটির ছাত্রীরা যশোর বোর্ডে ও সম্মিলিতভাবে স্ট্যান্ড করে এসছে। প্রায় শতভাগ পাশসহ প্রতিবছর স্কুলটি বোর্ড সেরা অথবা দ্বিতীয় অবস্থানে থেকেছে। মেধা তালিকায় স্থানসহ অধিকাংশ ছাত্রী বেশ কয়েক বিষয়ে স্টার মার্ক সহ প্রথম বিভগে পাশ করতো। ২০০১ সালে গ্রেডিং পদ্ধতি আসার পর থেকে স্কুলটির ছাত্রীরা জিপিএ ৫+ পেয়ে আবারো বোর্ড সেরার স্থান অক্ষুন্ন রাখে। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায়ও ছাত্রীরা জিপিএ ৫+ পেয়ে স্কুলের সুনাম বজায় রেখেছে। ২০১৯ সালে স্কুলটির এসএসসিতে পাশের হার ছিল ৯৯.১১% এবং জেএসসির পাশের হার ছিল ৯৯.৮১%।

এর মধ্যে বেশ কয়েকবার বোর্ড সেরা হওয়ারও গৌরব অর্জন করেছে স্কুলটি। এছাড়া সারাদেশের সরকারি স্কুলের মধ্যে টানা কয়েকবার সেরা স্কুল হিসেবে ঘোষিত হয়। স্কুলটি শুধু খুলনাতেই নয় বরং যশোর বোর্ডের অন্যতম সেরা স্কুল। স্কুলের নাম, যশ, ব্যপ্তি এবং এর শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনকাল থেকে এটিকে দেশের অন্যতম সেরা স্কুল বলা যায়।


কৃতী শিক্ষার্থী


তথ্যসূত্র [১] https://www.sohopathi.com/govt-cornation-secondary-girls-high-school/