শার্লেমেন (জন্ম ৭৪২, মৃত্যু ২৮ জানুয়ারি ৮১৪ আখেন) ছিলেন ক্যারোলিঞ্জিয়ান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা, যিনি চার্লস দা গ্রেট বা প্রথম চার্লস হিসেবেও পরিচিত। পশ্চিমা রোমান সাম্রাজ্যের পতনের তিন শতাব্দী পর, শার্লেমেন ছিলেন পশ্চিম ইউরোপের প্রথম সম্রাট।[১] তার পিতা ছিলেন পেপিন দা শর্ট এবং মাতা বার্ট্রাডা অফ লাওন।

৭৬৮ খৃষ্টাব্দে পেপিন দ্য শর্ট এর মৃত্যুর পর শার্লেমেন তার ভাই প্রথম কার্লোমান এর সাথে ফ্রাঙ্কদের রাজা হন। ৭৭১ সালে প্রথম কার্লোমানের হঠাৎ মৃত্যুর পর তিনি ফ্রাঙ্কিয় রাজ্যের (বর্তমানকালের বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড এবং পশ্চিম জার্মানি) নিরঙ্কুশ আধিপত্য গ্রহন করেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত রাজত্ব করেন। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তিনি রাজ্যকে সাম্রাজ্যে পরিনত করেন, যা ছিল পশ্চিম এবং মধ্য ইউরোপের অধিকাংশ এলাকা নিয়ে বিস্তৃত।

ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে শার্লেমেন ব্যস্ত ছিলেন সকল জার্মানিক জনগণকে এক রাজত্বের আওতায় আনতে এবং তার প্রজাদের খৃষ্ট ধর্মে দিক্ষিত করতে।[২] তিনি পোপের প্রতি তার পিতার নীতি অব্যহত রাখেন এবং লম্বার্ডদের কিংডম অফ লম্বার্ড (বর্তমান উত্তর ইতালি) থেকে উৎখাত করে পোপের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুসলিম স্পেনের দিকে অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি পূর্ব দিকে অবস্থিত রাজ্যেও আক্রমন করেন এবং তাদের (উল্লেখযোগ্য: স্যাক্সন) বলপূর্বক খৃস্ট ধর্মগ্রহনে বাধ্য করেন। শার্লেমেন তার ক্ষমতার শীর্ষে পৌছান যখন, ৮০০ খৃষ্টাব্দের ক্রিসমাস দিবসে পোপ তৃতীয় লিও তাকে সম্রাট উপাধিতে ভূষিত করে।[৩]

রোমান সাম্রাজ্যের পর তিনি প্রথমবারের মত পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ এলাকা একত্রিত করেন। কেউ কেউ তাকে "ইউরোপের জনক"[৪] বলেও সম্বোধন করে। তার শাসন ক্যাথলিক চার্চের মাধ্যমে শিল্পকলা, সংস্কৃতি এবং ধর্মের ক্ষেত্রে নবজাগরনের ('ক্যারোলিঞ্জিয়ান রেনেসাঁ') সূচনা করে। আভ্যন্তরীন সংস্কার এবং সামরিক অভিযানের মাধ্যমে শার্লেমেন একটি সাধারণ ইউরোপীয় পরিচয় তৈরী করায় উৎসাহ প্রদান করেন।

৮১৪ সালে তিনি তার সাম্রাজ্যের রাজধানী আখেন (বর্তমান জার্মানীতে অবস্থিত) এ মারা যান। তার মৃত্যুর পর সন্তান লুই দ্য পায়াস (ধার্মিক লুই) তার সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্রাটের আসনে বসেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা