গারােদের জীবন প্রক্রিয়ায় চু-এর প্রভাব ব্যাপক। শিশু জনের উপলক্ষ্যে এক প্রকার চ তৈরি করা থাকে যার নাম চু জাঙ্গি। মৃত্যুর কৃত্যাবলি পালনেও চু-এর প্রয়ােজন পড়ে। চু এক প্রকার পানীয়। যে-কোনাে সামাজিক অনুষ্ঠানে খাবার-দাবারের পর চু পানের রীতি গারাে সমাজে প্রচলন রয়েছে। সারাদিন খাটাখাটুনির পর কর্ম ক্লান্তি দূর করার জন্যেও গারােরা চু এর ব্যবহার করে থাকে। এটি সামাজিকভাবে স্বীকৃত বলে এটিকে ঢালাওভাবে তথাকথিত মদের সাথে তুলনা করা চলে না। কারণ পরিবারের সবাই মিলে অথবা সামাজিক কোনাে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর মুরুব্বি বা তার ভাগ্নে-ভাস্তে সম্পর্কীয়দের সাথে এক সাথে বসেই এই পানীয় পান করা হয়। ভাতের চাল থেকে চু প্রস্তুত হয়। প্রথমে ভাত রান্না করে ঠাণ্ডা করে নিতে হয়। তারপর সেই ভাতের সাথে বিভিন্ন একপ্রকার ওষধি দিয়ে তৈরি একপ্রকার ঔষধ যা চুমাছি বলে পরিচিত তা মিশিয়ে রেখে দিতে হয়। রাখার তিন-চার দিন পর পানি মিশিয়ে পানীয় চু তৈরি করা হয় । একেকজনের তৈরি প্রক্রিয়া একেকরকম, ওষধিও বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। এর সাথে পবিত্রতার সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে এবং সচরাচর চ| তৈরির প্রক্রিয়া গােপন থাকে। আতপ ও বিন্নি ধানের চাল দিয়ে উৎকৃষ্ট চু তৈরি হয়। তিন| চার মাস থেকে ছয় মাস পর্যন্ত এই চু রাখা যায় । তা থেকে যে চু বের হয় তার নাম চু বিচি বা চু-এর রস । চু পরিবেশনের সময় সম্মানিত ব্যক্তি এবং অতিথিবৃন্দকে আগে পরিবেশন করা হয়। পরবর্তীতে একে একে সবাইকে পরিবেশন করা হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা