ব্যবহারকারী:রিজওয়ান আহমেদ/বনু কুরায়জা আক্রমণ

৬২৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে ৬ষ্ঠ হিজরির যিলকদ মাসে বনু কুরায়জা আক্রমণ সংঘটিত হয়। এই আক্রমণটি খন্দকের যুদ্ধের পরপরই হয়েছিল।

পটভূমি সম্পাদনা

বনু কুরায়জা ছিল মদিনার একটি ইহুদি গোত্র। তারা ছিল মদিনার অন্য দুই ইহুদি গোত্র, বনু আউফ এবং বনু খাজরাজের মিত্র। ৬২২ সালে মুহাম্মাদ মদিনায় হিজরত করেন এবং মদিনা সনদ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত করেন, যা মদিনার সমস্ত গোত্রের মধ্যে শান্তি ও সহাবস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রদান করে। এই চুক্তির অধীনে, বনু কুরায়জা মুসলিমদের সাথে মিত্র ছিল এবং তাদের সাথে যুদ্ধের সময় তাদের সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

খন্দকের যুদ্ধ সম্পাদনা

৬২৭ সালে, মক্কার কুরাইশরা মদিনার বিরুদ্ধে একটি বড় আক্রমণ চালায়। মুসলমানরা মদিনার চারপাশে একটি পরিখা খনন করে নিজেদের রক্ষা করে। বনু কুরায়জা এই যুদ্ধে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সুযোগ পেয়েও তা করেনি। মুহাম্মাদ বিশ্বাস করতেন যে তারা এই যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজিত করতে চায়।

বনু কুরায়জার আত্মসমর্পণ সম্পাদনা

খন্দকের যুদ্ধের পর, মুহাম্মাদ বনু কুরায়জার বিরুদ্ধে একটি সামরিক অভিযান শুরু করেন। বনু কুরায়জা আত্মসমর্পণ করে এবং মুহাম্মাদের কাছে বিচারের জন্য নিজেদের সমর্পণ করে।

বিচার সম্পাদনা

মুহাম্মাদ বনু কুরায়জার নেতাদের একটি বিচারিক কাউন্সিলের কাছে বিচারের জন্য পাঠিয়েছিলেন। কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বনু কুরায়জার পুরুষদের হত্যা করা হবে এবং নারী ও শিশুদের দাসত্বে বিক্রি করা হবে।

নিহতদের সংখ্যা সম্পাদনা

বনু কুরায়জার পুরুষদের সংখ্যা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে নিহতদের সংখ্যা ছিল ৬০০ থেকে ৯০০ এর মধ্যে, অন্যরা বিশ্বাস করেন যে এটি ছিল প্রায় ৭০০।

প্রভাব সম্পাদনা

বনু কুরায়জা আক্রমণ মুসলিম-ইহুদি সম্পর্কের উপর একটি গভীর প্রভাব ফেলেছিল। অনেক ইহুদি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষী হয়ে ওঠে এবং তারা মুসলিমদের সাথে সহাবস্থান করতে অনিচ্ছুক হয়ে ওঠে।

ব্যাখ্যা সম্পাদনা

বনু কুরায়জা আক্রমণ একটি জটিল ঘটনা যা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিছু ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে এটি একটি ন্যায্য বিচার ছিল, অন্যরা বিশ্বাস করেন যে এটি ছিল একটি বড় ত্রুটি।

ন্যায্য বিচারের যুক্তি সম্পাদনা

ন্যায্য বিচারের যুক্তি হল যে বনু কুরায়জা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তারা মদিনা সনদের শর্তাবলী লঙ্ঘন করেছিল এবং খন্দকের যুদ্ধে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সুযোগ পেয়েও তা করেনি।

ত্রুটির যুক্তি সম্পাদনা

ত্রুটির যুক্তি হল যে বনু কুরায়জা আত্মসমর্পণ করেছিল এবং তাই তাদের ক্ষমা করা উচিত ছিল। তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে আর কোনও হুমকি ছিল না।

উপসংহার সম্পাদনা

বনু কুরায়জা আক্রমণ একটি বিতর্কিত ঘটনা যা আজও আলোচনার বিষয়।