ব্যবহারকারী:অরণ্য/ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী

ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী ছিল ভাওয়াল রাজ জমিদার পরিবারের সদস্যদের শবদাহ, সৌধ নির্মাণ ও নামফলক স্থান। প্রাচীন একটি মন্দির ছাড়াও এখানে একটি সমাধিসৌধ আছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্নঐতিহ্যের (Bangladesh Heritage) অংশ ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী।

ইতিহাস সম্পাদনা

ইতিহাস থেকে জানা যায় ভাওয়াল এলাকার জমিদারদের পূর্বপুরুষ বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এই গ্রামেরই বাসিন্দা বলরাম রায় ১৮ শতকের চল্লিশ দশকে গাজীপুরের ভাওয়াল পরগনার জমিদার দৌলত গাজীর দেওয়ান হিসেবে কাজ করতেন। দৌলত গাজীর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘদিন খাজনা প্রদান বাকি পড়ে যাওয়ায় ভাওয়াল জমিদারি নিলামে ওঠে। মুর্শিদকুলী খানের সঙ্গে সখ্য থাকায় বলরাম রায় কৌশলে এই জমিদারি হস্তগত করে ফেলতে সক্ষম হন। রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে মুর্শিদকুলী খান মুসলমান জমিদারদের স্থলে পূর্ববঙ্গে হিন্দু জমিদারদের নিযুক্ত করতেন। বলরাম রায়ের মৃত্যুর (১৭৪৩) পর তার সুযোগ্য পুত্র কৃষ্ণরায় জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব পান। তিনি ভাওয়াল জমিদারিকে স্থায়ীরূপ দেন। কৃষ্ণ রায়ের মৃত্যুর (১৭৫০) পর তার পুত্র জয়দেব রায় ভাওয়াল জমিদারির উত্তরাধিকার নির্বাচিত হন এবং দক্ষতার সঙ্গে জমিদারি পরিচালনা করেন। এ সময় তার নামানুসারে ভাওয়াল এলাকার নামকরণ হয় জয়দেবপুর

জয়দেব রায় ১৭৫৬ সালে মারা যান। পরবর্তীতে ভাওয়াল জমিদারি এস্টেট পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করেন তার ছেলে ইন্দ্রনারায়ণ রায় । ইন্দ্রনারায়ণ রায়ের মৃত্যুর পর ধারাবাহিকভাবে তাদের উত্তরাধিকারীরা ভাওয়াল জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে যান। ১৮৫৬ সালে উত্তরাধিকারীদের একজন গোলক নারায়ণের মৃত্যুর পর তার পুত্র কালী নারায়ণ রায় জমিদারি পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন। বস্তুত তার সময়ই ভাওয়াল জমিদারির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। জমিদার নিজেই জমিদারি পরিচালনা করতেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কাচারিতে বসতেন। কৃতিত্বের সঙ্গে জমিদারি পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকার কালী নারায়ণ রায়কে বংশানুক্রমে ব্যবহারের জন্য রায় চৌধুরী এবং রাজা উপাধি প্রদান করেন। কালী নারায়ণের সময়ই ভাওয়াল রাজবাড়ী এবং ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী নির্মিত হয়। কথিত আছে ভারতের পুরী থেকে বিখ্যাত স্থপতি কামাক্ষ্যা রায়কে নিয়েআসা হয় শ্মশানেশ্বরী নির্মাণের জন্য।

স্থাপত্যশৈলী সম্পাদনা