বেগম আকতার কামাল
বেগম আকতার কামাল একজন বাংলাদেশী প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারপার্সন। প্রবন্ধ ও গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।[১][২] এছাড়া গবেষণা ও প্রবন্ধসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৬ সালে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।[৩]
বেগম আকতার কামাল | |
---|---|
জন্ম | চট্টগ্রাম জেলা, বাংলাদেশ |
পেশা | প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
ধরন | প্রবন্ধ, গবেষণা |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০২১) |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআকতার কামাল ১৯৫২ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মােহাম্মদ ইয়াকুব আলী একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং তার মাতা মজিদা বেগম। তিনি ১৯৬৭ সালে কামরুন্নেসা সরকারি স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৯ সালে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৭২ সালে স্নাতক এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯২ সালে "বিষ্ণু দে-র কবিমানস ও কাব্য" শীর্ষক গবেষণার জন্য পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৪]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআকতার কামাল ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিনের দায়িত্ব পালন করেন।[৫]
২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল সদস্য ছিলেন। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত এশিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকা এবং ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট পত্রিকার সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য।[৫]
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনা- বিষ্ণু দে-র কাব্য: পুরাণ প্রসঙ্গ (মুক্তাধারা, ১৯৭৭)
- মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা (জীবন ও সাহিত্যকৃতির মূল্যায়ন) (বাংলা একাডেমি, ১৯৮৭)
- বিষ্ণু দে-র কবিস্বভাব ও কাব্যরূপ (বাংলা একাডেমি, ১৯৯২)
- আধুনিক বাংলা কবিতা ও মিথ (মাওলা ব্রাদার্স, ১৯৯৯)
- বিশ্বযুদ্ধ জীবন ও কথাশিল্প (নিউএজ পাবলিকেশন্স, ২০০০)
- কবিতার নান্দনিকতা: প্রাচীন ও মধ্যযুগ (প্যাপিরাস, ২০০৫)
- কবির উপন্যাস (ঐতিহ্য, ২০০৭)
- মহাবিদ্রোহের আখ্যানতত্ত্ব ও কথাশিল্প (ধ্রুবপদ, ২০১০)
- কবির চেতনা চেতনার কথকতা (ধ্রুবপদ, ২০১৩)
- রবীন্দ্রনাথ যেথায় যত আলো (অবসর, ২০১৩)
- শামসুর রাহমানের কবিতা: অভিজ্ঞান ও সংবেদ (কথাপ্রকাশ, ২০১৪)
- জীবনানন্দ: কথার গর্বে কবিতা (কথাপ্রকাশ, ২০১৫)
- শতাব্দীসন্ধির কবিতা : দিশা ও বিদিশা (কথাপ্রকাশ, ফেব্রুয়ারি ২০২০)
- সম্পাদিত গ্রন্থ
- বুদ্ধদেব বসু, নির্বাচিত প্রবন্ধসমগ্র (অবসর, ২০১৩)
- বিশ শতকের প্রতীচ্য সাহিত্য ও সমালোচনাতত্ত্ব (অবসর, ২০১৪)
- জীবনানন্দ : কথার গর্বে কবিতা (কথাপ্রকাশ, ২০১৫)
- রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মভাবনা (কথাপ্রকাশ, ২০১৬)
- নজরুল : দৃষ্টি ও সৃষ্টি (অবসর, ২০১৭)
- শ্রেষ্ঠ শামসুর রাহমান, ১ম ও ২য় খণ্ড (অবসর, ২০১৭)
- শ্রেষ্ঠ মীর মশাররফ হোসেন, ১ম ও ২য় খণ্ড (কথাপ্রকাশ, ২০১৮)
- আত্মজৈবনিক রবীন্দ্রনা (অবসর প্রকাশনী, ২০১৮)
- রবীন্দ্রকবিতার বাতায়ন (কথাপ্রকাশ, ২০১৯)
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- ২০১৬: অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার -১৪২৩[৬]
- প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪২৩ (২০১৮ তে প্রদত্ব)
- ২০২১: প্রবন্ধ ও গবেষণায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার[৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১০ জন"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৫ জানুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার"। বাংলা একাডেমি ওয়েবসাইট।
- ↑ "অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৩ পাচ্ছেন বেগম আকতার কামাল"। দৈনিক ইনকিলাব। ২৭ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বেগম আকতার কামাল"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "অধ্যাপক ডক্টর বেগম আকতার কামাল"। বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বেগম আকতার কামাল | মহিলা অঙ্গন"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২৮ নভেম্বর ২০১৬। ১১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ জন"। বাংলা ট্রিবিউন। ২৫ জানুয়ারি ২০২১। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২১।