জিহাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Raihan abir (আলোচনা | অবদান)
++
২৩ নং লাইন:
মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআনে জিহাদকে মুসলমানদের জন্য একটি 'কর্তব্য' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে 'হারব' বা 'যুদ্ধ' শব্দ ব্যবহার না করে 'জিহাদ' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে জিহাদ শব্দটি ব্যাপক অর্থ বহন করে। সংক্ষেপে বলা যায়, "সমগ্র মানবজাতির সমাজ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধন করে ইসলামের নিজস্ব মতাদর্শ অনুসারে নতুন করে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে চেষ্টা, সংগ্রাম ও চূড়ান্ত শক্তি প্রয়োগের নামই হলো জিহাদ"।
বিশেষ কোনো জাতির হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে অন্য কোনো বিশেষ জাতির হাতে তুলে দেয়া ইসলামের লক্ষ্য নয়। বরং এর লক্ষ্য এই যে, (ইসলামের ভাষ্যমতে,) সমগ্র মানবজাতির কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে ইসলামের পরিপূর্ণ আদর্শ দ্বারা সারা বিশ্বকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করে তোলা। এ উদ্দেশ্যে বিপ্লব সৃষ্টির জন্য ইসলাম তার অনুসারীদেরকে চেষ্টা ও সংগ্রাম চালিয়ে যেতে বলে। এই ব্যাপক চেষ্টা, সংগ্রাম ও শক্তি প্রয়োগের সমষ্টিগত নামই হচ্ছে ‘জিহাদ’। মুখের ভাষা ও লেখনির সাহায্যে মানুষের মানসিকতা, চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভংগিতে পরিবর্তন সাধন করা এবং তাদের মধ্যে ‘অন্তর্বিপ্লব’ সৃষ্টি করা জিহাদের একটি দিক। আবার তরবারি (সমরশক্তি) ব্যবহার করে 'অনৈসলামিক সমাজ ব্যবস্থা' নির্মূল করে নতুন 'সুবিচারমূলক ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা' প্রতিষ্ঠা করাও জিহাদের একটি দিক। এপথে মেধা, অর্থ-সম্পদ, শারীরিক শক্তি সামর্থ নিয়োগ করাও জিহাদ। এখানে উল্লেখ্য যে, ইসলাম মনে করে, "মানবজাতির জন্য ইসলামী আদর্শই একমাত্র সঠিক ও উপযুক্ত জীবন-দর্শন; অন্যান্য সকল জীবন-ব্যবস্থা মানবজাতির জন্য অনুপযুক্ত ও অকল্যানকর"।
 
=জিহাদ ও সন্ত্রাস=
 
বিভিন্ন ইসলামী পণ্ডিতরা জিহাদকে জীবনকে আল্লাহর উপসনায় পথে নিয়োজিত রাখার সংগ্রাম করার অর্থে ব্যবহার করে থাকলেও অসংখ্য মুসলিম এই জিহাদের নামে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালিত করে থাকে। অসংখ্য সন্ত্রাসী সংগঠনের পরিচয় পাওয়া যায় যাদের নামের সাথে জিহাদ শব্দটি যুক্ত। যেমনঃ "ইজিপসিয়ান ইসলামিক জিহাদ”, “ইয়েমেনি ইসলামিক জিহাদ”, “প্যালেস্টাইনী ইসলামিক জিহাদ” ইত্যাদি। মুসলিম সন্ত্রাসীরা ইসলামের আলোকে নিরপরাধ বিধর্মীদের হত্যাকে জায়েজ বলে মনে করে। বিশেষ করে ঈসরায়েল, এর বন্ধু রাষ্ট্রগুলোয় হামলা, হত্যা, লুণ্ঠন তারা পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করে। <ref>http://www.memri.org/bin/articles.cgi?Page=subjects&Area=jihad&ID=SP54203</ref>
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এগারোই সেপ্টেম্বর, ২০০১ সালে সংগঠিত বিমান হামলাও ছিলো বিধর্মীদের প্রতি ইসলামী জিহাদ। এই হামলায় দুই হাজার সাতশ বিরানব্বই জন্য সাধারণ মানুষ নিহত হয় <ref>http://edition.cnn.com/2003/US/Northeast/10/29/wtc.deaths/</ref>। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর অধ্যাপক ব্রুস লিংকন, তার বই "হলি টেররসঃ থিংকিং এবাউট রিলিজিয়ন আফটার সেপ্টেম্বর ইলেভেন" বইয়ের সমাপ্তিতে বলেনঃ <ref>Bruce Lincoln, Holy Terrors: Thinking about religion after September 11, University of Chicago Press, 2003</ref>
 
"ধর্মই, মুহাম্মদ আত্তা সহ আঠারোজনকে প্ররোচিত করেছিল এই বলে যে, সংগঠিত বিশাল হত্যাযজ্ঞ শুধুমাত্র তাদের কর্তব্য নয়, বরং স্বর্গ থেকে আগত পবিত্র দায়িত্ব"
 
এই উপসংহার অধ্যাপক ব্রুসের মন গড়া ভাষ্য নয়, বরঞ্চ হামলার নেতৃত্বদান কারী মোহাম্মদ আত্তা তার দলের অন্যান্য সদস্যদের যে চুড়ান্ত নির্দেশনামা সরবরাহ করেছিলেন তা পড়লেই বোঝা যায় <ref>Bruce Lincoln, Holy Terrors: Thinking about religion after September 11, University of Chicago Press, 2003 পৃষ্ঠা নং ৯৭- ১০৪</ref>, আমেরিকার বিরুদ্ধে মুহাম্মদ আত্তাদের যুদ্ধ ঘোষণা সমঅধিকার আদায় কিংবা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ছিলনা। "ইহজগৎ"/ "দুনিয়াবী জীবন" ইত্যাদি শব্দের কোনো মানেই ছিলনা তাদের কাছে। সরাসরি বেহেসতে প্রবেশের জন্য অতিরিক্ত চুল- দাঁড়ি কর্তন করে, আতর দিয়ে, বারবার কুরআনের বিশেষ কিছু আয়াত (যেখানে আল্লাহ, শহীদদের অন্তিম সুখের সন্ধান দিয়েছেন) উচ্চারণই বলে দেয় এই হামলার উদ্দেশ্য কী। আত্তা তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দিতে থাকেন, মনে রেখ এই যুদ্ধ আল্লাহর জন্য" <ref>Bruce Lincoln, Holy Terrors: Thinking about religion after September 11, University of Chicago Press, 2003 পৃষ্ঠা নং ১০০</ref>। তারপর যখন বিমানগুলো লক্ষ্যবস্তুর নিকটে চলে আসে তখন মাইক্রোফোন থেকে ভেসে আসে এক বার্তাঃ
 
সময় চলে আসছে, অন্তিম সময়, (অস্পষ্ট), আল্লাহর নামে মৃত্যুকে আনন্দের সাথে বরণ করে নাও। সবসময় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো, প্রার্থনার মাধ্যমে শেষ করো তোমার জীবন, মৃত্যুর ঠিক আগে উচ্চারণ কর- আল্লাহ ছাড়া কোনও মাবুদ নাই, মুহাম্মদ (সঃ) তার রাসুল। তারপর আমাদের আবার দেখা হবে, সর্বোচ্চ জান্নতে, আল্লাহর ইচ্ছায়। <ref>Bruce Lincoln, Holy Terrors: Thinking about religion after September 11, University of Chicago Press, 2003 পৃষ্ঠা নং ১০২</ref>
 
ইসলামের নামে বিধর্মী হত্যাকে কুরআন সম্মত বলেই মনে করে এই কাজে জড়িতরা <ref>http://www.wvinter.net/~haught/Koran.html</ref>। নাইন ইলেভেন পরবর্তী ইসলামী জিহাদীদের হাতে নিহত মানুষের সংখ্যা হালনাগাদ রাখে রিলিজিয়ন অফ পিস নামে একটি সাইট <ref>http://www.thereligionofpeace.com/</ref>। তাদের গননা অনুসারে নাইন ইলেভেন পরবর্তী ইসলামী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ <ref>http://www.thereligionofpeace.com/index.html#Attacks</ref>।
 
== ভুল অর্থে প্রয়োগ ও বিভ্রান্তি ==