সুন্নি ইসলাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[পরীক্ষিত সংশোধন][পরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
MdaNoman (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৬৮ নং লাইন:
* [[মুসান্নাফে আবদুল রাজ্জাক]]
* [[মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা]]
==সুন্নি মুসলিমদের বিশ্বাস==
{{আরও দেখুন|তাওহিদ|শিরক|কুফর|আরশ|তানজিহ|আয়াতুল কুরসি|সূরা ইখলাস|সূরা ফাতিহা}}
===একমাত্র স্রষ্টা ও প্রতিপালক===
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ্ মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। একে ''তাওহিদে রুবুবিয়াহ'' বা রবের একত্ববাদ বলা হয়। কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|৫২|৩৫|e=৩৬}}}}
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ্ একমাত্র রব। '''রব''' ({{lang-ar|ﺭﺏ}}) বলা হয় তাকে যিনি সৃষ্টি করেন, পরিচালনা করেন এবং মালিকানা যাঁর জন্য। কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"...জেনে রাখুন, সৃষ্টি করা ও হুকুমের মালিক তিনি। বরকতময় আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতিপালক।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|৭|৫৪}}}}
 
===একমাত্র উপাস্য===
{{অধিকতর|শিরক}}
মুসলিমরা আরও বিশ্বাস করে আল্লাহ্ই একমাত্র ইলাহ্ তথা সত্য উপাস্য। একে ''তাওহীদে উলুহিয়াহ'' বা ইলাহের বা উপাস্যের একত্ববাদ বলা হয়। '''ইলাহ্''' ({{lang-ar|ﺍﻻﻟﻪ}}) অর্থ হলো: সম্মান ও বড়ত্বের কারণে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় যার [[ইবাদাহ|ইবাদত]] করা হয়। আর ইবাদত বা [[প্রার্থনা (উপাসনা)|উপাসনা]] সেই সব কাজকে বলা হয়, যা কোনো ইলাহ্-র সন্তুষ্টি লাভের আশায় অথবা তার অসন্তুষ্টির ভয়ে করা হয়। কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|" আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|2|163}}}}
মক্কার মূর্তিপুজারিরা লাত, মানাত, উজ্জাসহ বিভিন্ন মূর্তির উপাসনা করত। এগুলোর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"এগুলো কেবল কতিপয় নাম, যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষেরা রেখেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ নাযিল করেননি। তারা তো কেবল অনুমান এবং নিজেরা যা চায়, তার অনুসরণ করে।..."{{কুরআন উদ্ধৃতি|53|23}}}}
 
===নাম ও গুণাবলী===
{{আরও দেখুন|আল্লাহর ৯৯টি নাম|ইসমে আজম}}
কুরআনে বা হাদীসে আল্লাহর অনেকগুলো সুন্দর নাম ও গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুসলিমরা আল্লাহর নাম ও গুণগুলোর কোনোটি অস্বীকার করে না, সৃষ্টবস্তুর সাথে সাদৃশ্য দেয় না, গুণগুলোর ধরন নির্ধারণ করে না।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=আল্লাহর প্রতি ঈমান|ইউআরএল=https://islamqa.info/bn/34630|ওয়েবসাইট=[[ইসলামকিউএ.ইনফো]]}}</ref> এই সকল নাম ও গুণ একমাত্র আল্লাহকে সাব্যস্ত করাকে তাওহীদে আসমা ওয়া সিফাত বা নাম ও গুণের একত্ববাদ বলা হয়।
 
===ফেরেশতাদের সম্পর্কে ===
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে নূর বা আলো দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত আছেন। কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"তারা অহঙ্কারবশতঃ তাঁর ইবাদত হতে বিমুখ হয় না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না। তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তারা ক্লান্তও হয় না।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|21|19|e=20}}}}
হাদীস অনুসারে জিব্রাইলের দিগন্ত জুড়ানো ছয়শত ডানা রয়েছে। কয়েকজন ফেরেশতার কাজ সম্পর্কে হাদীসে জানা যায়। যেমন- [[ওহী]] বহনের দায়িত্বে আছেন জিব্রাইল, শিংগায় ফুঁ দেওয়ার দায়িত্বে আছেন ইস্রাফিল, বৃষ্টি বর্ষণের দায়িত্বে আছেন মিকাইল, জাহান্নামের দায়িত্বে আছেন মালিক, মৃত্যুর দায়িত্বে আছেন মালাকুল মাউত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=ফিরিশতাদের প্রতি ঈমান|ইউআরএল=https://islamqa.info/bn/9477|ওয়েবসাইট=[[ইসলামকিউএ.ইনফো]]}}</ref>
এছাড়াও মুসলিমরা বিশ্বাস করে প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে দুইজন করে ফেরেশতা থাকে। এ ফেরেশতাদ্বয় ব্যক্তির আমলসমূহ লিপিবদ্ধ করেন।
 
=== নবী-রসূলদের সম্পর্কে ===
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক জাতির জন্য একজন মানুষকে রাসূল (বার্তাবাহক) করে পাঠিয়েছেন যারা তাদেরকে [[তাওহীদ]]ের আহ্বান জানান। আল্লাহ তাদেরকে যে বাণী দিয়ে প্রেরণ করেছেন তারা তার কোনো অংশ গোপন বা পরিবর্তন করেননি।
ভিন্ন রাসূলের ক্ষেত্রে বিধিবিধান ও আইন-কানুন ভিন্ন হতে পারে। এক রাসূলের [[উম্মত]]ের উপর যে ইবাদাত [[ফরজ]] করা হয়েছে তা অন্য রাসূলের উম্মতের উপরে ফরজ করা হয়নি। আবার এক রাসূলের উম্মতের উপরে যে বিষয়গুলো [[হারাম]] করা হয়েছে তা অন্য রাসূলের উম্মতের জন্য হয়তো [[হালাল]] করা হয়েছে।
কুরআন ও হাদীসে রাসূলদের মধ্যে কারো কারো নাম জানা যায়। যেমন- মুহাম্মদ, [[ঈসা]], [[দাউদ]], [[মূসা]], [[ইব্রাহিম]], [[নূহ]]। তবে সব নবী-রাসূলদের নাম ও তাদের বর্ণনা জানানো হয়নি।<ref>{{কুরআন উদ্ধৃতি|40|78|s=r}}</ref>
 
কুরআন অনুসারে সর্বশেষ রাসূল হচ্ছেন মুহাম্মদ।<ref>{{কুরআন উদ্ধৃতি|33|40|s=r}}</ref>
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, আল্লাহ তাকে অন্য নবীদের উপর বেশ কিছু বিশেষত্ব দিয়েছেন। তাকে সমস্ত জিন ও মানুষের নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=রাসূলদের প্রতি ঈমান|ইউআরএল=https://islamqa.info/bn/8929|ওয়েবসাইট=[[ইসলামকিউএ.ইনফো]]}}</ref>
 
===আসমানী গ্রন্থ সম্পর্কে===
মুসলিমরা বিশ্বাস করে, আসমানী কিতাবসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"কোনো মানুষের এ মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন, ওহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোন দূত পাঠানো ছাড়া। তারপর আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে তিনি যা চান তাই ওহী প্রেরণ করেন। তিনি তো মহীয়ান, প্রজ্ঞাময়।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|42|51}}}}
{{উক্তি|"আর অবশ্যই আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|4|164}}}}
[[তাওরাত]]ের ব্যাপারে কুরআনে বলা হয়েছে,
{{উক্তি|"আর আমি তার জন্য ফলকসমূহে লিখে দিয়েছি প্রত্যেক বিষয়ের উপদেশ এবং প্রত্যেক বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা।"{{কুরআন উদ্ধৃতি|7|185}}}}
কিতাবসমূহের মধ্যে কয়েকটির নাম কুরআনে বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কুরআন, তওরাত, [[ইনযিল|ইঞ্জিল]], যাবুর, সহিফায়ে ইব্রাহিম ও সহিফায়ে মূসা।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=আসমানী কিতাবের প্রতি ঈমান|ইউআরএল=https://islamqa.info/bn/9519|ওয়েবসাইট=[[ইসলামকিউএ.ইনফো]]}}</ref>
 
মুসলিমদের বিশ্বাস অনুসারে, শেষ আসমানী কিতাব কুরআন পূর্বের কিতাবসমূহের সত্য বিষয়গুলোর সত্যায়ন করে, ঐ কিতাবগুলোতে যেসব বিকৃতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে।
 
===তাকদীর সম্পর্কে===
{{অধিকতর|তাকদির}}
এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তাআলা তার পূর্বজ্ঞান অনুসারে সেসব কিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন এরূপ বিশ্বাসকে '''তাকদীর''' বলা হয়। মুসলিমরা বিশ্বাস করে,
* আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে জানেন এবং তিনি লওহে মাহফুজে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বৎসর পূর্বে সবকিছু লিখে রেখেছেন।
* কোনো কিছুই আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে ঘটে না।
* সবকিছুর জাত-বৈশিষ্ট্য আল্লাহরই সৃষ্টি।
* মানুষের ইচ্ছা ও ক্ষমতা আল্লাহর ইচ্ছা ও ক্ষমতার অনুবর্তী।
 
===আখিরাত/পরকাল সম্পর্কে===
{{মূল নিবন্ধ|আখিরাত}}
মুসলিমরা বিশ্বাস করে, পার্থিব জীবন শেষ হয়ে মৃত্যু ও কবর জীবনের মাধ্যমে অন্য জগত শুরু হবে। একসময় কিয়ামত সংঘটিত হবে, তারপর পুনরুত্থান, হাশর ও হিসাব-নিকাশের পর ফলাফল প্রাপ্ত হয়ে জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে যাবে।
 
====কবর====
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর তাকে তার রব, দীন ও শেষনবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হবে। মানুষ তাদের কর্ম অনুসারে কবরে শাস্তি বা শান্তি ভোগ করবে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=মিশকাতুল মাসাবিহ, ১৩১|ইউআরএল=http://ihadis.com/30086|ওয়েবসাইট=ihadis.com}}</ref> মৃত ব্যক্তি কবর জীবনের শাস্তি অথবা শান্তি প্রাপ্ত হবে, যদিও তাকে ভূগর্ভস্থ করা না হয়।
 
====কিয়ামতের পুর্বাভাস====
ইসলাম অনুসারে কিয়ামত বা মহাপ্রলয়ের পূর্বে এর পুর্বাভাস বা আলামত প্রকাশ পাবে। আলেমগণ এ আলামতগুলোকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন:
 
# ছোট আলামত: ছোট পুর্বাভাসগুলোর মধ্যে রয়েছে - ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, বড় বড় অট্টালিকা নিয়ে রাখালদের গর্ব করা, নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, অধিক হত্যা হওয়া, ব্যভিচার ও অন্যায় কাজ অধিক মাত্রায় হওয়া, [[নবুয়াত|নবুয়তের]] মিথ্যা দাবিদারদের আত্মপ্রকাশ, [[ইউফ্রেটিস]] নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় আবিষ্কৃত হওয়া ইত্যাদি।
 
# বড় আলামত: বড় পুর্বাভাস দশটি। যেগুলো এখনো প্রকাশিত হয় নি। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে কিয়ামতের পূর্বে [[মাহাদি|ইমাম মাহদী]] ও দাজ্জালের আগমন ঘটবে। [[ঈসা|ঈসা আ.]] আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। তিনি খৃষ্টানদের ক্রুশ ভেঙ্গে দিবেন, [[দাজ্জাল]] ও শুকর হত্যা করবেন। [[জিজিয়া কর|জিযিয়া করের]] আইন রহিত করবেন। ইসলামি শরী‘আত অনুসারে বিচার পরিচালনা করবেন। একসময় [[ইয়াজুজ মাজুজ|ইয়াজুজ-মাজুজ]] বের হবে। তাদের ধ্বংসের জন্য তিনি [[দোয়া|দুআ]] করবেন, তারপর তারা মারা যাবে। তিনটি বড় ভূমিকম্প হবে। পূর্বে একটি, পশ্চিমে একটি, জাযিরাতুল আরবে একটি। আকাশ থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া নেমে এসে সকল মানুষকে ঢেকে নিবে। পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হবে। একটি অদ্ভুত চতুস্পদ জন্তু বের হবে। [[ইয়েমেন|ইয়ামানের]] আদন থেকে ভয়ানক আগুন বের হয়ে মানুষদের [[শাম|শামের]] দিকে নিয়ে আসবে।<ref name="ir-ih"/>
 
====কিয়ামত, হাশর, হাউয====
ইসলামি আকীদা অনুসারে, ইসরাফীল শিঙ্গায় ফুৎকার দিলে কিয়ামত হবে, অর্থাৎ বিশ্বজগৎ ধ্বংস হবে। প্রথম ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ যা জীবিত রাখবেন তাছাড়া সকল সৃষ্টজীব মারা যাবে। দ্বিতীয় ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই পৃথিবী সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত সৃষ্টজীবের আর্বিভাব হয়েছিল, তারা সকলেই জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে।<ref>{{কুরআন উদ্ধৃতি|39|68|style=ref}}</ref>
 
এরপর তাদের হিসাব-নিকাশের জন্য ময়দানে একত্রিত করা হবে। এই একত্রিত করাকে [[হাশর]] বলা হয়।
ময়দানে অবস্থানকালে সূর্য তাদের নিকটবর্তী হবে। এ উত্তপ্ত ও কঠিন অবস্থান দীর্ঘ হওয়ায় শরীর থেকে নির্গত ঘামে হাবু-ডুবু খাবে তাদের (ভালো-মন্দ) কর্ম অনুপাতে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=রিয়াদুস সলেহিন, ৪০৭|ইউআরএল=http://ihadis.com/33516|ওয়েবসাইট=ihadis.com}}</ref>
 
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, হাউয নামের একটি সুপ্রশস্ত পানির ধারা আল্লাহ্ নবীকে হাশরের মাঠে দান করেছেন। হাউযের পানি দুধের চেয়ে সাদা, বরফের চেয়ে ঠাণ্ডা, মধুর চেয়ে অধিক মিষ্টি, মিশকের চেয়ে সুগন্ধি। যে ব্যক্তি তা থেকে একবার পানি পান করবে, সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।<ref name="t-qpc"/>
 
====শাফায়াত====
{{অধিকতর|শাফায়াত}}
মানুষ বিচার দিবসের ভয়াবহ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে তাদের রবের নিকট সুপারিশ পেশ করার চেষ্টা করবে। শেষনবী তাদের জন্য সুপারিশ করবেন। কিয়ামতের দিন পাপীদের ক্ষমা করা ও পুণ্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হবে। নবী-রাসুল, ফেরেশতা ও নেককার ব্যক্তিরা সুপারিশ করার অনুমতি পাবে। [[কুরআন]] ও [[সিয়াম]] সুপারিশ করবে বলেও হাদিসে উল্লেখ আছে। যে ব্যক্তিদের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ সন্তুষ্ট রয়েছেন, তাদের ছাড়া অন্য কারো জন্য কেউ সুপারিশ করবে না<ref>{{কুরআন উদ্ধৃতি|21|28|style=ref}}</ref>।
 
====মীযান, পুল সিরাত, কানত্বারাহ্====
আল্লাহ বিচার দিবসে [[মীযান]] স্থাপন করবেন, বান্দাদের আমল মাপার ও তাদের কর্মের প্রতিদান প্রদানের জন্য।<ref>{{কুরআন উদ্ধৃতি|21|47|style=ref}}</ref> এর দুটি পাল্লা ও রশি রয়েছে।
 
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী [[পুল সিরাত]] হলো জাহান্নামের উপর স্থাপিত পুল, যা অন্ধকারাছন্ন ভয়ের পথ। এর উপর দিয়ে মানুষ জান্নাতের দিকে অতিক্রম করবে। কেউ অতি দ্রুত অতিক্রম করবে আবার কেউ অনেক ধীর গতিতে তাদের কর্ম অনুসারে। পুল সিরাতের দুই ধারে হুকের মত অসংখ্য কাঁটা থাকবে। পুল সিরাত হবে তরবারীর চেয়ে ধারালো, চুলের চেয়ে সূক্ষ্ম ও পিচ্ছিল জাতীয়। অনেকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের তলদেশে নিক্ষিপ্ত হবে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪২৮০|ইউআরএল=http://ihadis.com/21805|ওয়েবসাইট=ihadis.com}}</ref>
 
মুমিনেরা পুলসিরাত অতিক্রম করে কানত্বারাতে অবস্থান করবে। এখানে জান্নাতে যাওয়ার পূর্বে একে অপরের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করে পরিশুদ্ধ হবে। এরপর জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।<ref name="ir-ih">{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=ঈমানের রুকনসমূহ|লেখক=ইলমী গবেষণা ডীনশীপ, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা|অনুবাদক=মোহাম্মাদ ইবরাহীম আবদুল হালীম|ইউআরএল=|অধ্যায়=পঞ্চম রুকন : শেষ দিবসের ওপর ঈমান|প্রকাশক=ইসলাম হাউজ|তারিখ=২০০৬}}</ref>
 
====জান্নাত, জাহান্নাম====
মুসলিমরা বিশ্বাস করে [[জান্নাত]] ও [[জাহান্নাম]] বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে এবং সর্বদা থাকবে। জান্নাতবাসীদের নি‘আমত শেষ হবে না, অনুরূপ জাহান্নামীদের মধ্যে যার ব্যাপারে আল্লাহ চিরস্থায়ী শাস্তির ফায়সালা করেছেন তার শাস্তি কখনও শেষ হবে না।
 
ইসলাম অনুসারে, জান্নাত হলো অতিথিশালা, যা আল্লাহ মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। সেখানে রয়েছে প্রবাহিত নদী, সুউচ্চ কক্ষ, মনোলোভা রমণীগণ। আরো রয়েছে এমন সব সামগ্রী যা কোনো দিন কোনো চক্ষু দেখে নি, কোনো কর্ণ শ্রবণ করে নি, আর কোনো মানুষের অন্তরেও কোনো দিন কল্পনায় আসে নি। জান্নাতে মুমিনদের জন্য সব চাইতে বড় নি‘আমত হলো আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখা। সবচেয়ে উন্নত ও উত্তম জান্নাত হল, জান্নাতুল ফিরদাউস আল-আ‘লা। এর ছাদ হলো আল্লাহর ‘আরশ। জান্নাতের সুগন্ধি চল্লিশ বৎসর দূরত্বের রাস্তা থেকে পাওয়া যাবে। জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে, প্রত্যেক দরজার পার্শ্বের দৈর্ঘ্য ‘মক্কা’ থেকে ‘হাজর’ এর দূরত্বের সমান। জান্নাতে নূন্যতম মর্যাদার অধিকারী যে হবে তার জন্য দুনিয়া ও আরো দশ দুনিয়ার পরিমাণ জায়গা হবে।
 
আর জাহান্নাম হল শাস্তির ঘর যা আল্লাহ [[কাফির]] ও অবাধ্যদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। তার পাহারাদার হবে নিষ্ঠুর ও নির্দয় ফিরিশতারা। কাফিরদের খাদ্য হবে যাক্কুম (কাঁটাযুক্ত) আর পানীয় হবে পুঁজ, দুনিয়ার আগুনের তুলনায় ৭০ গুণ তাপমাত্রার আগুনে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। জাহান্নামের সাতটি দরজা হবে।<ref name="ir-ih"/>
 
==আরও দেখুন==