মাটি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
মিসবাহুল হক (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
সংশোধন, সম্প্রসারণ, তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন, চিত্র, বিষয়বস্তু যোগ, হালনাগাদ করা হল
৫০ নং লাইন:
বালি, পলি ও কাদা- এই তিনটি স্বতন্ত্র মাটি কণার তুলনামূলক অনুপাতের ওপর ভিত্তি করে মাটির বুনটসমূহের নামকরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন মাটি বিভিন্ন অনুপাতে বালি, পলি ও কাদা কণা ধারণ করে থাকে। কোন মাটিতে বালি কণার পরিমাণ বেশি, আবার কোনটাতে কাদা কণার পরিমাণ বেশি। এই পরিবর্তনের নির্দিষ্ট সীমারেখায় রেখে মাটিকে ১২ টি গ্রুপ বা দলে বিভক্ত করা হয়। এই দলগুলোই বুনটভিত্তিক শ্রেণী বলে পরিচিত। এই শ্রেণীগুলোর একটির হতে অন্যটির ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক ধর্মে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যে মাটিতে অধিক পরিমাণ কাদা কণা থাকে তাকে কাদা মাটি, যে মাটি অধিক পরিমাণ পলি কণা ধারণ করে তাকে পলি মাটি, আর যে মাটিতে বালি কণার পরিমাণ বেশি থাকে তাকে বালি মাটি বলে। যদি কোন মাটি এই তিনটি শ্রেণীর একটিরও প্রভাব বিস্তারকারী ভৌতিক বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন না করে (যেমন-৪০% বালি কণা, ২০% কাদা কণা ও ৪০% পলিকণা যুক্ত মাটি) তবে তাকে দোআঁশ মাটি বলে। দোয়াঁশ মাটিতে বালি, পলি ও কাদা কণার শতকরা পরিমাণ সমান থাকেনা। কিন্তু এ বালি, পলি ও কাদা কণাসমূহের কাছাকাছি প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বা ধর্ম প্রদর্শন করে।
 
===মাটির গুণাগুণ===
 
সুষ্ঠুভাবে মাছ চাষ ব্যবস্থাপনায় পুকুর তৈরির জন্য দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটি সবচেয়ে ভাল। এ ধরনের মাটি সহজে পানি ধারণ করে রাখতে পারে। মাটির পিএইচ (PH)-এর মাত্রা ৫.০ এর উপরে থাকা সমীচীন। মাটিতে বিদ্যমান পুষ্টি পদার্থ ও পিএইচ-এর ওপর ভিত্তি করে মাটিকে সাধারণতঃ ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- উচ্চ উৎপাদনশীল, মধ্যম উৎপাদনশীল ও নিম্ন উৎপাদনশীল (সারণি-১)।
 
'''সারণি-১:''' মাটির পুষ্টিমান ও পিএইচ অনুযায়ী পুকুর-জলাশয়ের শ্রেণিবিন্যাস
উৎপাদনশীলতার শ্রেণী পিএইচ মাত্রা পুষ্টি উপাদানের মাত্রা (মিগ্রা/কিলো)
নাইট্রোজেন ফসফরাস কার্বন
৬৫ নং লাইন:
মাটির গঠন, বর্ণ, পিএইচ-র ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের মাটিকে সাধারণভাবে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। এ ভিত্তিতে বাংলাদেশের মাটির শ্রেণিবিন্যাস ও প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা নিচের সারণিতে দেয়া হলো (সারণি-২)।
 
'''সারণি-২:''' অঞ্চলভেদে মাটির গুণাগুণ
 
ক্র.নং অঞ্চল মাটির প্রকার PH-র ভিত্তিতে মাটির ধরন মাটির বর্ণ উৎপাদনশীলতা
৭৫ নং লাইন:
৬ উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ পলি ও কাদার ভাগ বেশি অম্লীয় কালো বা ছাই রং প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা কম
 
====মাটির ভৌত-রাসায়নিক গুণাগুণ====
 
যে অঞ্চলের মাটি উর্বর সে স্থানে খনন করা পুকুরও সাধারণভাবে উর্বর হয়ে থাকে এবং সে অঞ্চলের পুকুরে মাছের উৎপাদনও ভাল হয়। উর্বর মাটি পানিতে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের যোগান দেয় এবং পানি দূষণ রোধে ভূমিকা রাখে। সাধারণভাবে মাটি ৪ প্রকারের হয়ে থাকে ক) এটেল মাটি, ২) বেলে মাটি, গ) লাল মাটি এবং ঘ) দোআঁশ মাটি। দোআঁশ মাটির পুকুর মাছ চাষের জন্য সর্বাধিক উপযোগি। বেলে মাটির পানি ধারণক্ষমতা খুবই কম এবং লাল মাটির পুকুরে পানি প্রায় সবসময় ঘোলা থাকে। এজন্য বেলে মাটি ও লাল মাটিতে খনন করা পুকুর মাছ চালের জন্য ততটা উপযোগি হয় না। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ধরে রাখা ও আদান প্রদানে দোআঁশ মাটি উত্তম।
৮৬ নং লাইন:
মাছ চাষের জন্য বদ্ধ জলাশয়ের পানির উপযোগিতা মাটির কয়েকটি উপাদানের মানের ওপর র্নিভর করে। যথা- পি,এইচ, ফসফরাস, নাইট্রোজন, কার্বন-ড্রাই অক্সাইড, জৈব পদার্থ ইত্যাদি। নিচে এসব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ
 
'''পিএইচ'''
 
মাটির পিএইচ (PH) ৬.৫-৮.০ এর মধ্যে হলে তা মাছ চাষের জন্য উত্তম। অনুকূল পিএইচ মাত্রায় ফসফরাসের যোগান বৃদ্ধি পায় এবং অ্যামোনিয়া ও নাইট্রোজেনঘটিত অণুজীব অধিক কর্মক্ষম হয়। পি এইচ ৬.০-এর নিচে হলে মাটি অধিক অম্লীয় হয় এবং পানিতে ক্ষতিকর মৌলিক পদার্থের উপস্থিতি দেখা দেয়। আবার পিএইচ-এর মাত্রা ৯.০ এর বেশি হলে অণুজীবগোষ্ঠী নিস্ক্রিয় হয় ও ফসফরাসের সরবরাহ হ্রাস পায়। এতে উদ্ভিদ প্ল্যাংটনের উৎপাদন খুব কমে যায়।
 
'''ফসফরাস'''
ফসফরাস মাটিতে ক্যালসিয়াম, আয়রণ ও এ্যালুমিনিয়ামের ফসফেট হিসেবে অবস্থান করে। মাটিতে পরিমিত জৈব পদার্থের উপস্থিতিই সহজপ্রাপ্য ফসফরাসের সরবরাহ অব্যাহত রাখে। ফসফরাসের প্রাচুর্যতা পুকুরের প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে। ফসফরাস সবুজ শেওলার বংশ বৃদ্ধিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে অধিক পরিমাণে উদ্ভিদ-প্ল্যাংঙ্কটন উৎপন্ন হয়। মাছ চাষের জন্য প্রতি ১০০ গ্রাম মাটিতে ১০-১৫ মিলিগ্রাম হারে সহজপ্রাপ্য ফসফেট থাকা উচিত।
 
'''নাইট্রোজেন'''
বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেনই মাটির নাইট্রোজেনের প্রধান উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম মাটিতে ৮-১০ মিলিগ্রাম হারে সহজপ্রাপ্য নাইট্রোজেন থাকা দরকার। নাইট্রোজেন উদ্ভিদকে ঘন সবুজ রাখে। পরিমিত নাইট্রোজেন উপস্থিতিতে উদ্ভিদ-প্ল্যাংটনের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয় এবং বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। ফলে অধিক পরিমাণে উদ্ভিদ-প্ল্যাঙ্কটন উৎপন্ন হয় ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
 
'''জৈব পদার্থ'''
মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থ যে কোন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় একটি অপরিহার্য উপাদান। জৈব পদার্থ পুকুরের তলায় মাটিকে সজীব ও সক্রিয় রাখে এবং পানি চুয়ানো বন্ধ করে মাটির পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জৈব পদার্থ ফরফরাস ও নাইট্রোজেনের প্রধান উৎস। জলজ পরিবেশে জৈব পদার্থ আবহাওয়া থেকে সরাসরি নাইট্রোজেন ধারণ করে।
 
== প্রকারভেদ ==
বিভিন্নভাবে মৃত্তিকাবিজ্ঞানীরা মাটির প্রকারভেদ করেছেন। তন্মধ্যে - বেলে, এঁটেল, দো-আঁশ এবং পলিমাটি অন্যতম । বিভিন্ন ধরনের মাটির মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে এবং কোনো বিশেষ কাজে মাটির উপযোগিতা যাচাই করার জন্য মাটির বিভিন্ন রকমের শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে । পূর্বে এইরকম একটি ধারণা ছিল যে, মাটি তৈরির উপকরণ এবং কারণগুলি-ই মাটিকে কোনো একটি নির্দিষ্ট বহির্গঠন দান করে । এই ধারণা অনুযায়ী বানানো প্রথম দিককার শ্রেনীবিভাগ গুলির মধ্যে ১৮৮৮ খ্রীস্টাব্দে রাশিয়ান বৈজ্ঞানিক [[Dokuchaev]] (দকুচেভ)-এরটি উল্লেখযোগ্য । পরবর্তী কালে অনেক মার্কিন এবং ইউরোপীয় গবেষক এটিকে উন্নত করে ১৯৬০ খ্রীস্টাব্দ নাগাদ একটি গ্রহণযোগ্য শ্রেণীবিভাগ তৈরী করেন । এই ষাটের দশকে একটি অন্য ধরনের শ্রেণীবিভাগ তৈরী হয়, যেখানে মাটি তৈরির উপকরণ ও কারণের থেকে মাটির বহির্গঠনের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে । পরবর্তীকালে এটি-ও ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে ।World Reference Base for Soil Resources (WRB)<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি | শেষাংশ =IUSS Working Group WRB | প্রথমাংশ = | লেখক-সংযোগ = | coauthors = | শিরোনাম = World Reference Base for soil resources - A framework for international classification, correlation and communication | কর্ম = | প্রকাশক = FAO | month = | বছর =2007 | ইউআরএল = http://www.fao.org/ag/agl/agll/wrb/doc/wrb2007_corr.pdf | বিন্যাস = | ডিওআই = | সংগ্রহের-তারিখ =}}</ref> নামের সংস্থাটি মাটির আন্তর্জাতিক শ্রেণীবিভাগের কাজে বাপৃত।
 
[[File:ময়মনসিংহে খাওয়ার চেরা মাটি.jpg|thumb|right|250px|ময়মনসিংহে খাওয়ার চেরা মাটি]]
==মাটি খাওয়া প্রচলন==
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে দেশে বিস্তর পটভূমিতে মাটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এই মাটি খাওয়া বিষয়টি শারীরিক অসুস্থতার মুক্তির সঙ্গে জড়িত। অর্থাৎ আরোগ্য ও উপকারের জন্যই প্রচলিত এই মাটি ভক্ষণ। চীন, জিম্বাবুইয়ে আর যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে নমুনা নিয়ে মাটি খাওয়ার একই উপকারী ফলফল পাওয়া গেছে। জানা যায়, রোমানরা মাটি ও ছাগলের রক্ত মিশিয়ে ওষুধের ট্যাবলেট তৈরি করতো। গত শতাব্দীতেও দেখা যায়, জার্মানিরা খুব মিহি কাদার আস্তরণ রুটির উপর মাখনের পরিবর্তে ব্যবহার করে খেতো। <ref name="sa">{{ওয়েব উদ্ধৃতি| ইউআরএল=https://www.aparajeobangla.com/seven-colours/news/8004 | শিরোনাম=মাটি খাওয়া মানুষ | তারিখ=2021-04-19| ওয়েবসাইট=অপরাজেয় বাংলা | লেখক= শেখ আনোয়ার | সংগ্রহের-তারিখ=2022-04-19}}</ref>
 
===বাংলাদেশে মাটি খাওয়া===
মানুষ মাটি খায় সভ্য সমাজে এটি খুবই অজানা কথা। মানুষ সত্যি মাটি খায় এবং তা বাজারে পাওয়া যায়। এর নাম চেরা মাটি। ময়মনসিংহের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোন কোন এলাকার দরিদ্র মানুষের মধ্যে এ চেরা মাটি খাওয়া প্রচলন এখনও লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে পোয়াতি মহিলাদের এ মাটির প্রতি বিশেষ আকর্ষণ। বাজার থেকে প্রয়োজনীয় মাছ তরকারির পাশাপাশি ২/৪ টাকার চেরা মাটিও কিনে তারা। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| ইউআরএল=https://blog.bdnews24.com/manoneshdas/158785| শিরোনাম=ময়মনসিংহের মানুষ মাটি খায়!| তারিখ=2014-08-31| ওয়েবসাইট= blog.bdnews24.com | লেখক= [[মনোনেশ দাস]]| সংগ্রহের-তারিখ=2022-04-19}}</ref>
 
===খাওয়ার মাটিতে যা থাকে===
পরীক্ষায় দেখা গেছে, চীনের নমুনাটিতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে লোহা, ক্যালশিয়াম, ভ্যানডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আর পটাশিয়াম। দুর্ভিক্ষের সময় শরীরে এসব পদার্থের অভাব ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের নমুনাটিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় আয়োডিন আর লৌহ। যা শিশু ও মহিলাদের বেশি করে দরকার। অনেক খাবারে এগুলো যথেষ্ট থাকে না। জিম্বাবুইয়ের নমুনাটিতে বেশি দেখা যায় কেওলিনাইট। ডায়রিয়া সারানোর জন্য বাণিজ্যিকভাবে যে ক্যাওপেকটেট পাওয়া যায় তার প্রধান উপাদানই হচ্ছে এই কেওলিনাইট। <ref name="sa"/>
 
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
 
http://203.112.195.237/ebook/Koi_shing_Magur_culture/Mati.html{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=এপ্রিল ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}
 
'https://bn.wikipedia.org/wiki/মাটি' থেকে আনীত