দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Asim Dhali (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Asim Dhali (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
২৪ নং লাইন:
 
== প্রথম প্রজাতন্ত্র (১৯৪৮-১৯৬০) ==
{{মূল নিবন্ধ: দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রজাতন্ত্র}}
 
সিন্গমান রিহ, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি
 
১৯৪৮ সালের ১৫ই আগস্ট সিন্গমান রিহ কে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রজাতন্ত্রী কোরিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। রিহ'র সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নতুন সরকারের আইনগত সার্বভৌমত্বও পাস হয়। ১৯৪৮ সালে ৯ই সেপ্টেম্বর কিম-ই-সাঙ এর নেতৃত্বে একটি সাম্যবাদী দল, ডেমোক্রাটিক পিপলস রিপাবলিক অফ কোরিয়া (উত্তর কোরিয়া) ঘোষনা করা হয়। যাইহোক, ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বরে, তৃতীয় অধিবেশনে এর  রেজোলিউশন ১৯৫ অনুসারে, জাতিসংঘ প্রজাতন্ত্রী সরকারকে কোরিয়ার একমাত্র আইনসিদ্ধ সরকার হিসেবে চিহ্নিত করে।
 
১৯৪৬ সালে, উত্তর কোরিয়া ভূমি সংস্কার আইন বাস্তবায়ন করে, বিশেষত  জাপানি এবং জাপানপন্থী মালিকানায় থাকা সুযোগ, কারখানাসমূহ ও ব্যাক্তিগত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিবর্তন করে।  দক্ষিণে ভূসি সংস্কারের দাবি আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে, এবং ১৯৪৯ সালে এই আইন পাস হয়। কোরিয়ায় বিশাল জমিজমা অধিকৃতকারীরা তাঁদের অধিকাংশ জমি বর্জন করতে বাধ্য হয়ে পড়েছিলো। মোট খামার পরিবারের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ অল্প জমির মালিক হয়ে যায়। যাইহোক, স্বাধীনতার পূর্বে জমির মালিকদের সংস্পর্শে যারা ছিলো তাঁদের ক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের অগ্রাধিকার দেয়া হয়, একারণে বহু জাপানপন্থী দল সম্পত্তি লাভ করে বা ধরে রাখে।
 
দেশ ভাগ হওয়ার পর এখন, সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে দুই কোরিয়ার মাঝে সম্পর্কও শত্রুতা পূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ সালে সোভিয়েতের সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পর, দক্ষিণ কোরিয়া হতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা বহিষ্কারের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর উত্তর কোরিয়া চাপ প্রয়োগ করে, কিন্তু রিহ তার সরকার আমেরিকার সাথে থাকার কথা ব্যক্ত করে এবং উত্তর কোরিয়া ও জাপান উভয়ের বিপক্ষে চলে যায়।  যদিও জাপানের সাথে সম্পর্ক শিথিল করতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় তবু তাঁরা সামান্যই অর্জন করে। ইতিমধ্যে, সরকার আমেরিকা হতে বিশাল অঙ্কের সাহায্য লাভ করে, যা পরিমানে সরকারের মোট জাতীয় বাজেটের কাছাকাছি। ১৯৪৮ সালে জাতীয়বাদী এ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সামরিক চর্চাও অব্যাহত রাখে, রিহ'র সরকার জেজু, সানচন ও ইয়েওসুতে অনেক সামরিক বিদ্রোহ দমন করে। বিদ্রোহ উত্থান ও এর দমনকালে ১৪,০০০ হতে ৬০,০০০ এর মত লোক হত্যা করা হয়েছিলো সমস্ত যুদ্ধে।  রাষ্ট্রপতি রিহ'র শাসন প্রতিপক্ষদের জন্য অসহনীয় হয়ে যায়। একটি বিখ্যাত সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছিলো যে, ১৯৪৮ সালে সাম্যবাদী ষড়যন্ত্রে জন্য ভবিষ্যত রাষ্ট্রপতি পার্ক চুঙ-হি কে আটক ও আসামী করা হয়।
 
১৯৪৮ সালের ১৫ই আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রজাতন্ত্রী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন
 
কোরিয়ার প্রথম প্রজাতন্ত্রী সরকারের প্রধান নীতি ছিলো সাম্যবাদ-বিরোধী চেতনা এবং " উত্তরদিকে প্রসারিত হয়ে কোরিয়াকে একীকরণ। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী যথেষ্ট সজ্জিত বা প্রস্তুত ছিলো না, তারপরও রিহ'র প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কোরিয়াকে পুনরায় এক করার কাজে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলো। যাইহোক, ১৯৫০ সালের ৩০ মে দ্বিতীয় সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, অধিকাংশ আসন স্বতন্ত্র হয়ে যায় এবং তাঁদের অবস্থান অনুমোদন করে না, যা সমর্থনের অভাব ও রাষ্ট্রের ভঙ্গুর অবস্থা নিশ্চিত করে।
 
এ সময় জুন মাসে সাম্যবাদী দল উত্তর থেকে আক্রমণ করে, দক্ষিণ কোরিয়ার সন্দেহভাজন সাম্যবাদী বা তাদের অনুসারী দলকে পশ্চাদ্ধাবন করে, যারা কারাগারে বা পুনঃ শিক্ষা আন্দোলন চালনা করছিলো তাঁদেরকেও, যা বদো লীগ ম্যাসাকর নামে পরিচিত।
 
১৯৫০ সালের জুন মাসে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়াকে আক্রমণ করে। যুক্তরাষ্ট্র চালিত ১৬-দলীয় জোট দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে প্রথম সংগঠিত অ্যাকশন নেয়, যা ইউনাইটেড নেশনশ কমান্ড (ইউএনসি) এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।  দোদুল্যমান যুদ্ধ পরিস্থিতি ব্যাপক নাগরিক সমস্যার সৃষ্টি করে এবং বিশাল ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ১৯৫০ এর শেষের দিকে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রবেশ করলে, সীমারেখার মূল রেখার কাছাকাছি যুদ্ধ কিছুটা শিথিল হয়। ১৯৫১ সালের জুলাই মাসের শুরুতে যুদ্ধরীতি আলোচনা শুরু হয়, এবং ১৯৫৩ সালের ২৭শে জুলাই চূড়ান্তভাবে শেষ হয় প্যানমুনজম নামের স্থানে, এখন পরিচিত নিরস্ত্রীকৃত এলাকা নামে (ডিমিলিটারিজাইড জোন - ডিএমজেড)।  যুদ্ধরীতি অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ান সরকার সিওলে ফিরে আসে তাৎপর্যপূর্ণ তারিখে ১৯৫৩ এর ১৫ই আগস্টে।
 
যুদ্ধবিরতির পরে, সিন্গমান রিহ'র কিছু বছর স্বৈরাচারী নেতৃত্বে দক্ষিণ কোরিয়া রাজনৈতিক গোলযোগের অভিজ্ঞতা পেতে থাকে, যা ১৯৬০ সালে একটি ছাত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে। রিহ'র শাসন জুড়ে অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চেয়েছিলো সরকারের প্রতি তাঁর নিয়ন্ত্রন মজবুত করতে।  ১৯৫২ সালেই এসব শুরু করে যখন সরকার বুসান ভিত্তিক চালিত হতো চলমান যুদ্ধের কারণে। ঐ বছরের মে মাসে রিহ সংবিধান সংশোধন করে যা রাষ্ট্রপতির পদকে সরাসরি-নির্বাচনের অবস্থানে দাড় করায়। এসব করতে, সে সামরিক শাসন জারি করে, সংসদের প্রতিপক্ষ সদস্য৷ বিক্ষোভকারী ও সরকার-বিরোধী দলকে আটক করে। রিহ পরবর্তীতে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হয়।
 
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে রিহ সংসদের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনরায় লাভ করে, এবং আট-বছর মেয়াদে শাসন চালানোর পর নিজেকে অব্যাহতি দেয়ার একটা আইন সংশোধন করে। ১৯৫৬ সালে সে আবারো একবার নির্বাচিত হয়। এরপরপরই, রিহ'র প্রশাসন প্রতিপক্ষ দলের সদস্যদের আটক করে, এবং প্রতিপক্ষ দলের নেতাকে উত্তর কোরিয়ান গুপ্তচর নামে অভিহবত করে।
 
এই প্রশাসনে ক্রমশ রাজনৈতিক অঙ্গন আয়ত্ব করতে দমন-পীড়ন বাড়াতে থাকে, এবং ১৯৫৮ সালে এটি জাতীয় নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সকল ধাপের শাসনের (স্থানীয় শাসন সহ) ওপর কর্তৃত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করে। এই পদক্ষেপ সমূহ জনগণের ওপর অত্যাচার আরো বাড়িয়ে তোলে, কিন্তু জনগণের হৈচৈ সত্ত্বেও, রিহ'র প্রশাসন ১৯৬০ এর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কারচুপি করে এবং নির্বাচনে জয়লাভ করে।
 
নির্বাচনের দিন, মাসান শহরে নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকরা প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। শুরুতে প্রতিবাদকারীদের স্থানীয় পুলিশ বাহিনী দ্বারা প্রশমিত করা হয়, কিন্তু মাসানের পোতাশ্রয়ে এক ছাত্রের দেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেলে, সারাদেশ ফুসে ওঠে এবং রাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।  এপ্রিলের ১৯ তারিখ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সিওলের রাস্তায় সমাবেশ ও মিছিল করে প্রতিবাদ করে, এটাকে এপ্রিল বিপ্লব বলা হয়ে থাকে। সরকার সামরিক শাসন ঘোষনা করে, সেনাবাহিনীকে তলব করে এবং জনগণের ওপর গুলিবর্ষণের মাধ্যমে নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সরকারকে নাড়িয়ে দেয়, এবং ২৫শে এপ্রিল রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকমন্ডলী নিয়ে এক বর্ধিত প্রতিবাদ হয়, রিহ ২৬শে এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করে এবং নির্বাসনে পালিয়ে যায়।
 
== দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র (১৯৬০-১৯৬৩)   ==