পাক্কা বাড়ি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎অবকাঠামো: সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
→‎ইতিহাস: সংশোধন
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৫ নং লাইন:
 
== ইতিহাস ==
ঘন বাগানের ভেতরভিতর অবস্থিত অন্ধকারাচ্ছন্ন এই ভবনটাকে স্থানীয়রা অন্ধকার কুপকূপ এবং অন্দকারঅন্ধকার কুটওকূটও বলে থাকে। পুরনো ভবনটার ভেতরেভিতরে পুরোপুরিই অন্ধকার। এই পাক্কা বাড়িটা সম্পর্কে স্থানীয়দের ভেতরভিতর প্রচলিত আছে নানান রকম মুখরোচক গল্প। গল্পগুলো এরকম যে, এক সময় এখানে সাপ মানুষ হতে পারতো। তখন এক সাপের রাজা মানুষের রূপ ধারণ করে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করে। যে কারণে সিঁড়ির গোড়ায় বড়বড়ো বড়বড়ো গর্ত। পরে এক সময় সাপেরা ওই গর্তের মধ্যে চলে যায়। তবে বর্তমানে গর্তটার মুখে মাটি দিয়ে ভরাট করে রাখা আছে। তাদের ধারণা গর্তের মধ্যে কেউ পড়ে গেলে কিছু দিন পর রক্ত ও বিষ মাখা মৃতদেহ পাশের দীঘিতেদিঘিতে (এই বাড়িরই অংশ বিশেষঅংশবিশেষ) ভেসে উঠতো। আবার কেউ কেউ মনে করেন এই প্রাসাদটি মাটির নিচ থেকে অলৌকিকভাবে উঠেছে যে কারণে বাড়িটার বর্তমান অধিবাসীরাও ভাগবাটারারভাগবাটোয়ারার সময় প্রাসাদটাকে আলাদাভাবে যৌথ সম্পত্তি হিসেবে রাখে। তবে বাড়িটার চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গেভেঙে দেয় তারা। এই প্রাসাদ নিয়ে স্থানীয়দের ভেতরভিতর প্রচলিত আছে আরো অনেক গল্প। এই অঞ্চলটি এককালে সম্রাট আকবরের প্রথম দিককার সেনাপতি শাহবাজ খানের সুবেদার আমলে (আনুমানিক ১৫৮৩-৮৫) শাহবাজপুর নামকরণ করা হয়। প্রথম দিকে এই দ্বীপটি ছিল পুর্তগীজপর্তুগিজ, মগ ও আরাকান জলদস্যুদের অভয় অরণ্য।অভয়ারণ‍্য। মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা-মুলাদী-বাবুগঞ্জ-বাকেরগঞ্জ-ভোলা-মনপুরা-হাতিয়া-সন্দ্বীপ প্রভৃতি স্থানে লুন্ঠন, নারী নির্যাতন, দাস বিক্রয়সহ নির্মম অত্যাচার চালাতেন এই অঞ্চলের সাধারণ জনগণের উপর।ওপর। তাছাড়া পুর্তগীজরাপর্তুগিজরা ছিল ক্যাথিলিক খ্রিস্টান। এই অঞ্চলের মানুষের ভেতরভিতর তখন অধিকাংশই ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং বাকিরা ছিল মুসলমান। পুর্তগীজপর্তুগিজ জলদস্যুরা তাদের ধর্মীয় অনুভূতির উপরওওপরও নানানভাবে আঘাত হানে। অতঃপর সম্রাট আকবরের সেনাপতি শাহবাজ খান পুর্তগীজপর্তুগিজ ও মগ আরাকান জলদস্যুদের কবল থেকে সাধারণ বিরাট সেনাবাহিনী ও স্থানীয় যুবকদের নিয়ে পুর্তগীজপর্তুগিজ-মগ ও আরাকান জলদস্যুদের উপরওপর আক্রমণ করে এবং তাদেরকে উত্তর শাহবাজপুর (বর্তমান ভোলা জেলা) থেকে বিতাড়িত করেন। ১৫৮৫ সালে তিনি চলে যান। পরে শাহবাজ খানের স্মৃতি বিজড়িত স্থান হিসাবেহিসেবে মেঘনা-তেঁতুলিয়া-ইলিশা-মাছকাটা কালবদরের মাঝ খানেরমাঝখানের নদী কন্যা দ্বীপটির নাম শাহবাজপুর নামে পরিচয়। পরে ইলিশা নদীর উত্তর অংশ (মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা-মুলাদী) নিয়ে গঠিত হয় উত্তর শাহবাজপুর। শাহবাজ খান চলে যাওয়ার বেশ কিছু কালকিছুকাল পর আবার শুরু হয় আরাকান ও পুর্তগীজপর্তুগিজ জলদস্যুদের অত্যাচার এবং সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ে মুঘল সেনাপতি আগা মেহেদীকে পাঠান শাহবাজপুর। আগা মেহেদী ও তার বাহিনী উত্তর শাহবাজপুর (বর্তমান মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা, ভোলভোলা জেলার রামদাশপুর ইউনিয়নের যে কোনকোনো স্থানে) আস্তানা করেন এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুর্তগীজপর্তুগিজ ও আরাকানদের এই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করেন। পরে আঘাআগা মেহেদী নামে উত্তর শাহবাজপুরের একাংশের নাম করা হয় মেহেদীগঞ্জ যার বিবর্তিতরূপ মেহেন্দিগঞ্জ। আগা মেহেদী চলে যাওয়ার কিছুকাল পর আবার শুরু হয় পুর্তগীজপর্তুগিজ এবং আরাকনদের উৎপাত—উৎপাত — এবার তিনি ফিরে এসে এ অঞ্চল থেকে পুরোপুরি নিশ্চহ্ননিশ্চিহ্ন করেন। পরে তিনি সুবেদার হিসেবে এই এলাকায় থেকে যান এবং সংগ্রাম কেল্লা থেকে একটু দূরে সরে উলানিয়া নামক স্থানে তার উত্তরসুরীরাউত্তরসূরিরা স্থানীয়ভাবে বাসস্থান নির্মাণ করেন ও বসবাস শুরু করেন। যা এখন উলানিয়া জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। সেনাপতি শাহবাজ খাঁরখানের ঘাঁটি মনপুরা এবং আঘা মেহেদী স্থায়ী ঘাঁটি নির্মাণ করেছেন বলে জানা যায় নি।যায়নি। পরবর্তী মুঘল সুবেদার শেখ মোহাম্মদ হানিফের সংগ্রাম কেল্লা রামদাসপুরে ও বাসস্থান উলানিয়াতে শনাক্ত করা যায়। যেহেতু এই অঞ্চলটা পুর্তগীজ জলদস্যুদের অবস্থান ছিল। বিশেষ করে শাহবাজ খাঁর পর আগা মেহেদী এবং তারপর শেখ মোহাম্মদ হানিফ যেহেতু উত্তর শাহবাজ পুরশাহবাজপুর (বর্তমান মেহেন্দিগঞ্জ) অবস্থান নেয় তাতে অনুমান করা যায় পুর্তগীজপর্তুগিজ এবং আরাকানদের মূল আস্তানা এই অঞ্চলে ছিল। এই পাকা বাড়িটা পুরোপুরি জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং এর আশে পাশেআশেপাশে এমন কোনকোনো মন্দিরও নেই যাকে কোনকোনো হিন্দু রাজা বাড়িরাজবাড়ি বলা যায়। উনিশ শতকের আগে সাধারণত হিন্দু রাজ বাড়িতেরাজবাড়িতে অথবা মুসলমান রাজরাজবাড়ির বাড়ির কাছাকছিতেকাছাকাছিতে মন্দির অথবা মসজিদের স্মৃতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এ বাড়িটিতে এর কোনটিরকোনোটির সন্ধান মেলে নি।মেলেনি। তাছাড়া মেহেন্দিগঞ্জের সবচেয়ে পুরাতন এবং সবচেয়ে বেশি সুপারির বাগান এই বাড়িটার চারপাশে এবং ওই এলাকাতে রয়েছে আনারস গাছের ঘন ঝোপঝাড়। এতে অনুমান করা হয় বাড়িটা পুর্তগীজদেরইপর্তুগিজদেরই ছিল এবং এটাই ছিল পুর্তগীজপর্তুগিজ জলদস্যুদের মূল আস্তানা। এই পুরাকীর্তিটি (পাক্কাবাড়িপাক্কা বাড়ি) ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে পুরাতত্বপুরাতত্ত্ব বিভাগ এর দায়িত্ব নেয়।
 
== তথ্যসূত্র ==