মুহাম্মাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৯৪ নং লাইন:
== মক্কী জীবন ==
{{মক্কায় মুহাম্মদের জীবনের ঘটনাপঞ্জি}}
{{মূল নিবন্ধ|হিজরতের পূর্বে মুহাম্মাদমুহম্মদ}}
[[চিত্র :Cave Hira.jpg|thumb|right|200px|হেরা গুহা, এখানেই মুহাম্মাদমুহম্মদ প্রথম প্রত্যাদেশ পান]]
==== গোপন প্রচার ====
প্রত্যাদেশ অবতরণের পর মুহাম্মাদমুহম্মদ বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে; কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের ভীত ধ্বংস করা ব্যতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোনো উপায় ছিল না। তাই প্রথমে তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে গোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন। মুহাম্মাদএরমুহম্মদএর আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথমপহেলা ব্যক্তি ছিলেন তার সহধর্মিণী [[খাদিজা]]।<ref name="Watt53-86">Watt (1953), p. 86</ref> এরপর মুসলিম হন মুহাম্মাদএরমুহম্মদএর চাচাতো ভাই এবং তার ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর [[আলী ইবনে আবু তালিব|আলী]], ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী পৌঁছে দেওয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তার আদর্শ মেনে নেয় নি, এ সভাতে শুধু একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো [[আলী ইবনে আবু তালিব|আলী]]।<ref name="IntroQuran184"/> ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধু [[আবু বকর]]।<ref name="Watt53-86"/> এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এবং এই প্রচারকাজ চলতে থাকে সম্পূর্ণ গোপনে।
 
==== প্রকাশ্য দাওয়াত ====
তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেওয়ার পর মুহাম্মাদমুহম্মদ প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরনের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল। মুহাম্মাদমুহম্মদ [[সাফা পর্বত|সাফা পর্বতের]] উপর দাঁড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, "''আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু নেই এবং মুহাম্মাদমুহম্মদ আল্লাহ্‌র রাসুলরসূল"''। কিন্তু এতে সকলে তার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায়।<ref name="Rubin">Uri Rubin,'' Quraysh'', [[Encyclopaedia of the Qur'an]]</ref> বেশিরভাগ মক্কাবাসী তাকে অবজ্ঞা করে, তবে তার অল্প সংখ্যক অনুসারীও হয়। মূলত তিন শ্রেণীর লোকজন তার অনুসারী হয় এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে: ছোট ভাইগণ ও বৃহৎ সওদাগরদের পুত্ররা; যেসব ব্যক্তি তাদের সম্প্রদায়ের শীর্ষ স্থান থেকে চ্যুত হয়েছেন বা শীর্ষ স্থানে পৌঁছাতে পারেননি এবং দুর্বল ব্যক্তিরা, বিশেষ করে নিরাপত্তাহীন বিদেশিরা।<ref>Watt, The Cambridge History of Islam (1977), p. 36</ref>
 
==== মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন ====
মুহাম্মাদেরমুহম্মদের বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে তার উপর নির্যাতন শুরু করে : প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কূটতর্ক এবং বিপরীত যুক্তি।<ref name="Watt53-86"/> এগুলোতেও কাজ না হওয়াতে এক সময় ইসলামের প্রচারকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা শুরু হয় এবং তা পরিচালনা করার জন্য একটি অপপ্রচার গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়। একই সাথে তৎকালীন আরব কবি ও চাটুকারদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় মনোরঞ্জক সাহিত্য ও গান-বাজনার দল, এমনকি এক পর্যায়ে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের সাথে আপোসেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু মুহাম্মাদমুহম্মদ তা মেনে নেন নি; কারণ আপোসের শর্ত ছিল প্রচারবিহীনভাবে ইসলাম পালন করা অথবা বহুঈশ্বরবাদী পৌত্তলিকতাকে সমর্থন করে ইসলাম প্রচার করা, অথচ প্রতিমাবিহীন একেশ্বরবাদের দিকে মানুষকে ডাকাই ছিল তার ধর্ম প্রচারের সর্বপ্রথম ঐশী দ্বায়িত্ব।<ref name="IntroQuran185">An Introduction to the Quran (1895), p. 185</ref>
 
==== ইথিওপিয়ায় হিজরত ====
১১০ নং লাইন:
 
==== গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ ====
এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল '''মুহাম্মাদমুহম্মদ''' এর চাচা [[হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব|হামজা]] এবং কুরাইশ নেতা [[উমর ইবনুল খাত্তাব|উমর ইবনুল খাত্তাবের]] ইসলাম গ্রহণ। মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে তার চাচা [[হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব|হামজা]] খুব পছন্দ করতেন এবং তাকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করতেন। আবু জাহল কাবা প্রাঙ্গণে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের সাথে কঠোর ভাষায় বিরূপ আচরণ করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের চাচা [[হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব|হামজা]] তার প্রতিবাদস্বরূপ আবু জাহলকে মারধোর করেন এবং মুহাম্মাদেরমুহম্মদের সমর্থনে ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়। আবু জাহলের সঙ্গী হিসেবেহিসাবে কুরাইশ বলশালী যুবক উমরও মুসলিমদের বিরোধিতায় নেতৃত্ব দিতেন। মুহাম্মাদমুহম্মদ সবসময় প্রার্থনাদোয়া করতেন যেন [[আমর ইবনে হিশাম|আবু জাহল]] ও উমরের মধ্যে যে কোনো একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। উমরের ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে তার এই প্রার্থনা পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবেচিত হচ্ছিল। তবুও উমরের ইসলাম গ্রহণে মুসলিমদের আধিপত্য আরও মজবুত হয় এবং মুহাম্মাদমুহম্মদ সহ মুসলিমগণ উমরের কাছ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা দানের আশ্বাস পেয়ে তখন থেকে উমরের সাথে কাবা প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে উপাসনা করা শুরু করেন।<ref>Horovitz, Josef (1927). "The Earliest Biographies of the Prophet and Their Authors". Islamic Culture. 1: 548f. doi:10.1163/157005807780220576.</ref>
 
==== একঘরে অবস্থা ====
এভাবে ইসলাম যখন শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলছিল তখন মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদমুহম্মদ ও তার অনুসারী সহ [[বনু হাশিম]] গোত্রকে একঘরে ও অবরোধ করে। তিন বছর অবরুদ্ধ থাকার পর তারা মুক্তি পায়।<ref>F.E. Peters (2003b), p. 96</ref><ref name="Moojan">Moojan Momen (1985), p. 4</ref>
 
==== দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন ====
মুক্তির পরের বছর ছিল মুহাম্মাদেরমুহম্মদের জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী [[খাদিজা]] ও চাচা [[আবু তালিব]] মারা যায়। দুঃখের সময়ে মুহাম্মাদমুহম্মদ মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপারে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য [[তাইফ|তায়েফ]] যান (তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে)। কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে তাকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েন নি; বরং সেখানেও তিনি ইসলাম প্রসারের সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।<ref name="Moojan"/>
 
==== মি'রাজ বা উর্দ্ধারোহণ ====
ইসলামী ভাষ্যমতে মুহাম্মাদমুহম্মদ এক রাতে মক্কায় অবস্থিত [[মসজিদ আল-হারাম|মসজিদুল হারাম]] থেকে [[জেরুজালেম|জেরুজালেমে]] অবস্থিত [[মসজিদ আল-আকসা|মসজিদুল আকসায়]] যান; এই ভ্রমণ ইসলামে [[ইসরা]] নামে পরিচিত। পবিত্র [[হাদিস]] শরীফ ও [[সাহাবা]]-আজমাঈ'নদের বর্ণনানুযায়ী, [[মসজিদুল আকসা]] থেকে তিনি বুরাক (একটি ঐশ্বরিক বাহন বিশেষ)'এ করে উর্দ্ধারোহণ করেন এবং মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করেন এবং এ সময় তিনি [[জান্নাত|বেহেশ্‌ত]] ও [[জাহান্নাম|দোজখ]] অবলোকন করেন এবং [[ইব্রাহিম]], [[ইসলাম ধর্মে মূসা|মূসা]] ও [[ঈসা]] নবীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।<ref name="EoIMW-2003">Encyclopedia of Islam and the Muslim World (2003), p. 482.</ref> এই যাত্রা মুসলমানদের কাছে [[শবে মেরাজ|মি'রাজ]] নামে পরিচিত। ইসলামী সূত্রানুসারে এই সম্পূর্ণ যাত্রার সময়ে পৃথিবীতে কোনো সময়ই অতিবাহিত হয় নি বলে ধারণা করা হয়। মুহাম্মাদেরমুহম্মদের প্রথম জীবনীকার [[ইবনে ইসহাক]] ঘটনাটি আধ্যাত্মিকভাবে সংঘটিত হয়েছিল বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন, অন্যদিকে পরবর্তী সময়ে [[আল-তাবারি]] ও [[ইবনে কাসির]]দের মত যুক্তিবাদী ইসলামী ইতিহাসবেত্তাদের মতে মি'রাজে মুহাম্মাদমুহম্মদ সশরীরে উর্দ্ধারোহণ করেছিলেন বলে যুক্তি দেখান।<ref name="EoIMW-2003"/>
 
== মদিনায় হিজরত ==