মুহাম্মাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Shohure Jagoron (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৬০ নং লাইন:
 
== ইসলামী চরিতাভিধান অনুসারে জীবনী ==
{{আরও দেখুন|মুহাম্মদেরমুহম্মদের জীবনের ঘটনাপঞ্জি}}
=== জন্ম ===
মুহাম্মাদমুহম্মদ বর্তমান [[সৌদি আরব|সৌদি আরবে]] অবস্থিত [[মক্কা]] নগরীর [[কুরাইশ]] বংশের [[বনু হাশিম]] গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন<ref name="abraha">
* {{সাময়িকী উদ্ধৃতি| ডিওআই = 10.1017/S0041977X00049016 | শেষাংশ১ = Conrad | প্রথমাংশ১ = Lawrence I. | বছর = 1987 | শিরোনাম = Abraha and Muhammad: some observations apropos of chronology and literary topoi in the early Arabic historical tradition1 | ইউআরএল = http://journals.cambridge.org/action/displayAbstract?fromPage=online&aid=3863868&fulltextType=RA&fileId=S0041977X00049016 | সাময়িকী = Bulletin of the School of Oriental and African Studies |ভাষা=ইংরেজি | খণ্ড = 50 | সংখ্যা নং = 2 | পাতাসমূহ = 225–240}}
* {{বই উদ্ধৃতি| প্রকাশক = G. Bell| শেষাংশ = Sherrard Beaumont Burnaby| শিরোনাম = Elements of the Jewish and Muhammadan calendars: with rules and tables and explanatory notes on the Julian and Gregorian calendars|বছর=1901| ইউআরএল = http://archive.org/details/elementsofjewish00burnuoft | পাতা=465 |ভাষা=ইংরেজি}}
* {{সাময়িকী উদ্ধৃতি | পাতাসমূহ = 6–12| শেষাংশ = Hamidullah| প্রথমাংশ = Muhammad |শিরোনাম = The Nasi', the Hijrah Calendar and the Need of Preparing a New Concordance for the Hijrah and Gregorian Eras: Why the Existing Western Concordances are Not to be Relied Upon| সাময়িকী = The Islamic Review & Arab Affairs |ভাষা=ইংরেজি | তারিখ = February 1969|ইউআরএল=http://aaiil.org/text/articles/islamicreview/1969/02feb/islamicreview_196902.pdf}}</ref><ref name="EncWorldHistory">''Encyclopedia of World History'' (1998), p. 452</ref>। প্রচলিত ধারণা মতে, তিনি [[৫৭০]] খ্রিষ্টাব্দের [[আগস্ট ২৯|২৯ আগস্ট]] বা আরবি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ জন্ম গ্রহণ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |শিরোনাম=The Oxford Dictionary of Islam |শেষাংশ=Esposito |প্রথমাংশ=John L. (ed.) |বছর=2003 |আইএসবিএন=978-0-19-512558-0 |পাতা=198 |পাতাসমূহ= |ইউআরএল=http://books.google.com/?id=E324pQEEQQcC&pg=PA198&dq=muhammad+birthday+Rabi%27+al-awwal#v=onepage&q=muhammad%20birthday%20Rabi%27%20al-awwal&f=false |ভাষা=ইংরেজি |সংগ্রহের-তারিখ=19 June 2012}}</ref>। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা [[মন্টগোমারি ওয়াট]] তার পুস্তকে ৫৭০ সাল উল্লেখ করেছেন; তবে প্রকৃত তারিখ উদ্‌ঘাটন সম্ভবপর হয় নি। তাছাড়া মুহাম্মাদমুহম্মদ নিজে কোনো মন্তব্য করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি; এজন্যই এটি নিয়ে ব্যাপক মতবিরোধ রয়েছে। এমনকি মাস নিয়েও ব্যাপক মতবিরোধ পাওয়া যায়। যেমন, একটি বর্ণনায় এটি [[৫৭১]] সালের ৯ রবিউল আউয়াল [[এপ্রিল ২৬]] হবে; [[সাইয়েদ সোলাইমান নদভী]], সালমান মনসুরপুরী এবং মোহাম্মদমোহম্মদ পাশা ফালাকির গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে তার জন্মের বছরেই [[হস্তী যুদ্ধ|হস্তী যুদ্ধের]] ঘটনা ঘটে<ref>Marr JS, Hubbard E, Cathey JT. (2014): The Year of the Elephant. figshare.
http://dx.doi.org/10.6084/m9.figshare.1186833
Retrieved 22:19, Oct 21, 2014 (GMT)</ref><ref name="Watt7">Watt (1974), p. 7.</ref> এবং সে সময় [[সম্রাট নরশেরওয়া|সম্রাট নরশেরওয়ার]] সিংহাসনে আরোহণের ৪০ বছর পূর্তি ছিল এ নিয়ে কারো মাঝে দ্বিমত নেই।
 
=== শৈশব ও কৈশোর কাল ===
মুহাম্মাদমুহম্মদ এর পিতা [[আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব|আব্দুল্লাহ]] তার জন্মের প্রায় ছয় মাস পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন।<ref name="Meri2004">{{citation |last=Meri |first=Josef W. |title=Medieval Islamic civilization |url=http://books.google.com/books?id=H-k9oc9xsuAC |accessdate=3 January 2013 |volume=1 |year=2004 |publisher=Routledge |language=ইংরেজি |isbn=978-0-415-96690-0 |page=525 |আর্কাইভের-তারিখ=১৪ নভেম্বর ২০১২ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20121114153019/http://books.google.com/books?id=H-k9oc9xsuAC |ইউআরএল-অবস্থা=কার্যকর }}</ref> তৎকালীন আরবের রীতি ছিল যে তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন।<ref name= WattHalimah>Watt, "[http://referenceworks.brillonline.com/entries/encyclopaedia-of-islam-2/halima-bint-abi-dhuayb-SIM_2648 Halimah bint Abi Dhuayb] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20140203073455/http://referenceworks.brillonline.com/entries/encyclopaedia-of-islam-2/halima-bint-abi-dhuayb-SIM_2648 |তারিখ=৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ }}", ''[[Encyclopaedia of Islam]]''.</ref> এই রীতি অনুসারে হয়রতহজরত মুহাম্মাদকে'ওমুহম্মদকেও [[হালিমা]] (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেওয়া হয়।<ref name="IntroQuran182">An Introduction to the Quran (1895), p. 182</ref> এই শিশুকে ঘরে আনার পর দেখা যায় হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য : শিশু মুহাম্মাদমুহম্মদ কেবলস্রেফ হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর হালিমা শিশু মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। ইসলামী বিশ্বাস মতে এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে -- একদিন শিশু নবীর বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা [[জমজম কূপ|জমজম কূপের]] পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেন ফেরেশতা জিবরাইল ও ফেরেশতা মিকাইল। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে '''বক্ষ বিদারণের ঘটনা''' হিসেবে খ্যাত।
 
এই ঘটনার পরই [[হালিমা বিনতে আবি যুয়ায়েব (হালিমা সাদিয়া)|হালিমা]] মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে মা [[আমিনা|আমিনার]] কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন মা আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে [[মদিনা]]য় যাবেন। সম্ভবত কোনো আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। মা আমিনা, ছেলে, শ্বশুর এবং সঙ্গী ''উম্মে আয়মনকে'' নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদিনায় পৌঁছেন। তিনি মদিনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে '''আরওয়া''' নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণইন্তেকাল করেন<ref name="IntroQuran182"/><ref>Watt, ''Amina'', [[Encyclopaedia of Islam]]</ref>। মাতার মৃত্যুর পর দাদা [[আবদুল মুত্তালিব]] শিশু মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদা-ইদাদাই মুহাম্মাদেরমুহম্মদের দেখাশোনা করতে থাকেন<ref name="Watt7"/><ref name="IntroQuran182"/>। মুহাম্মাদএরমুহম্মদের বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র [[আবু তালিব|আবু তালিবকে]] মুহাম্মাদএরমুহম্মদএর দায়িত্বজিম্মা দিয়ে যান।<ref name="Watt7"/>
 
আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। মুহাম্মাদএরমুহম্মদএর বয়স যখন ১২ বৎসর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারলেন না। যাত্রাপথে [[বসরা]] পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাবু ফেললেন। সে সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী বসরা অনেক দিক দিয়ে সেরা ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে '''জারজিস''' নামক এক খ্রিষ্টান পাদ্রি ছিলেন যিনি '''বুহাইরা''' বা '''বহিরা''' নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গির্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে দেখে শেষ নবী হিসেবেহিসাবে চিহ্নিতশনাক্ত করেন.<ref>Armand Abel, ''Bahira'', [[Encyclopaedia of Islam]]</ref>। ফিজারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন নবীর বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। অর্থাৎ, তিনি সরাসরি যুদ্ধ না করে, নিজ গোত্রের লোকদের অস্ত্রের যোগান দেয়া সহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তার কিছু করার ছিল না। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন। তার উত্তম চরিত্র ও সদাচরণের কারণে পরিচিত মহলের সবাই তাকে "আল-আমিন" (আরবি : الامين, অর্থ : "বিশ্বস্ত, বিশ্বাসযোগ্য, আস্থাভাজন") "আলআস-সিদ্দিক" (অর্থ : "সত্যবাদীl") বলে সম্বোধন করতেন।<ref name="EoI-Muhammad"/><ref name="EncWorldHistory"/><ref>{{বই উদ্ধৃতি |শেষাংশ১= Khan |প্রথমাংশ১= Majid Ali |শিরোনাম= Muhammad the final messenger |সংস্করণ=1998 |পাতা=332|বছর=1998|প্রকাশক=Islamic Book Service|ভাষা=ইংরেজি|অবস্থান=India|আইএসবিএন= 81-85738-25-4|সূত্র=}}</ref><ref>Esposito (1998), p. 6</ref>
 
=== নবুয়ত-পূর্ব জীবন ===
{{মূল নিবন্ধ|নবুওয়তের পূর্বে মুহাম্মাদমুহম্মদ}}
[[চিত্র :Tribes english.png|thumb|ইসলাম ধর্ম প্রচারের প্রাথমিক দশায় আরবের মানচিত্র]]
আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, খেয়ানতপ্রবণতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্যই [[হিলফুল ফুজুল]] নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং মুহাম্মাদমুহম্মদ এতে যোগদান করেন ও এই সংঘকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, তরুণ বয়সে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের তেমন কোনো পেশা ছিল না। তবে তিনি বকরি চরাতেন বলে অনেকেই উল্লেখ করেছেন। সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল [[বনি সা'দ গোত্র|বনি সা'দ গোত্রের]]। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। মুহাম্মাদমুহম্মদ অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। ব্যবসায় উপলক্ষে তিনি [[সিরিয়া]], [[বসরা]], [[বাহরাইন]] এবং [[ইয়েমেন|ইয়েমেনে]] বেশ কয়েকবার সফর করেন।<ref name="BerkWorldHistory-68">Berkshire Encyclopedia of World History (2005), v. 3, p. 1025.</ref> মুহাম্মাদেরমুহম্মদের সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন [[খাদিজা|খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ]] তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। মুহাম্মাদমুহম্মদ এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদিজার পণ্য নিয়ে [[সিরিয়া]]র অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।
 
[[খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ|খাদিজা]] মাইসারার মুখে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী ''নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের'' কাছে বিয়ের ব্যাপারে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে মুহাম্মাদমুহম্মদ বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাবেন। মুহাম্মাদমুহম্মদ তার চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদিজার বয়স ছিল ৪০ আর মুহাম্মাদেরমুহম্মদের বয়স ছিল ২৫।<ref name="BerkWorldHistory-68"/> খাদিজার জীবদ্দশায় তিনি আর কোনো বিয়ে করেননি। খাদিজার গর্ভে মুহাম্মাদেরমুহম্মদের ছয় জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে চার জন মেয়ে এবং দুই জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসিম, জয়নাব, রুকাইয়া, [[উম্মে কুলসুম বিনতে মুহাম্মাদ|উম্মে কুলসুম]], [[ফাতিমা]] এবং আবদুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামী যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে ও একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সসকলেই তার জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে।
 
মুহাম্মাদমুহম্মদ এর বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মাণের সময় যখন [[হাজরে আসওয়াদ]] (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি নামক এক ব্যক্তি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন মুহাম্মাদমুহম্মদ সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবেহিসাবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্বজিম্মা পেয়ে মুহাম্মাদমুহম্মদ অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রেরখানদানের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ইতাই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।<ref>Dairesi, Hırka-i Saadet; Aydin, Hilmi (2004). Uğurluel, Talha; Doğru, Ahmet, eds. The Sacred Trusts: Pavilion of the Sacred Relics, Topkapı Palace Museum, Istanbul. Tughra Books. ISBN 978-1-932099-72-0.</ref><ref>Muhammad Mustafa Al-A'zami (2003), The History of The Qur'anic Text: From Revelation to Compilation: A Comparative Study with the Old and New Testaments, p. 24. UK Islamic Academy. ISBN 978-1872531656.</ref>
 
=== নবুওয়ত প্রাপ্তি ===
[[চিত্র:Qur'an folio 11th century kufic.jpg|thumb|right|একাদশ শতাব্দীর পারসিয়ান কুরআনের একটি পৃষ্ঠা]]
ইসলামিক তথ্যসূত্রানুসারে চল্লিশ বছর বয়সে ইসলামের নবী মুহাম্মাদমুহম্মদ [[নবুওয়ত]] লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই সৃষ্টিকর্তা তার কাছে বাণী প্রেরণ করেন। [[আজ জুহরি|আজ-জুহরি]] বর্ণিত হাদিসেহাদিসের অনুসারেমাফিক মুহাম্মাদসত্যমুহম্মদসত্য দর্শনের মাধ্যমেমারফতে ওহি লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর মুহাম্মাদপ্রায়ইমুহম্মদ হরহামেশাই মক্কার অদূরে [[হেরা গুহা|হেরা গুহায়]] ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তার স্ত্রী [[খাদিজা]] নিয়মিত তাকে খাবার দিয়ে আসতেন। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী এমনি একদিন ধ্যানের সময় [[ফেরেশতা]] [[জিবরাইল]] তার কাছে [[আল্লাহ]] প্রেরিত বাণী নিয়ে আসেন<ref name="IntroQuran184">An Introduction to the Quran (1895), p. 184</ref> এবং তাকে এই পংক্তি কটি পড়তে বলেন :
{{Cquote|''পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।''<ref>'''[[সূরা আলাক্ব]]''': মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ [[কুরআন|পবিত্র কুরআনের]] ৯৬ নং সুরা; প্রথম পাঁচ (১ - ৫) আয়াত। www.islamdharma.net -এ প্রাপ্ত কুরআনের বাংলা অনুবাদ থেকে নেওয়া হয়েছে।</ref>
}}
উত্তরে মুহাম্মাদজানানমুহম্মদ জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিবরাইল তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও মুহাম্মাদমুহম্মদ নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেওয়ার পর মুহাম্মাদমুহম্মাদ পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। মুসলিমদের ধারণা অনুযায়ী এটিই কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; [[সূরা আলাক্ব|সুরা আলাকের]] প্রথম পাঁচ [[আয়াত]]। বর্ণনায় আরও উল্লেখ আছে প্রথম বাণী লাভের পর মুহাম্মাদএতইমুহম্মদ এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গৃহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাকেন, "আমাকে আবৃতবয়ান কর"। খাদিজা মুহাম্মাদেরমুহম্মদের এর সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাকে নবী হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য মুহাম্মাদকেমুহম্মদকে নিয়ে খাদিজা নিজ চাচাতো ভাই [[ওয়ারাকা ইবনে নওফল|ওয়ারাকা ইবনে নওফলের]] কাছে যান<ref name=autogenerated1>Esposito (2010), p.8</ref>। নওফল তাকে শেষ নবী হিসেবেহিসাবে আখ্যায়িত করে।<ref name="Esposito4">John Esposito, ''Islam'', Expanded edition, Oxford University Press, p.4–5</ref><ref name=Esposito4/> ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন নবী। তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তার কাছে দ্বিতীয় বারের মতো স্রষ্টার বাণী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় [[সূরা মুদ্দাস্‌সির]]-এর কয়েকটি আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন মুহাম্মাদ।মুহম্মাদ।
 
== মক্কী জীবন ==