বিশেষ আবহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান ও অন্যান্য সংশোধন
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Madame_Nobel_-_film_set_at_the_Embassy_of_France_in_Vienna_May_2014_08.jpg|ডান|থাম্ব|ভিয়েনাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের নাটকের পটভূমি হিসেবে একটি [[ক্রোমা কি|সবুজ পর্দা]] ব্যবহার করে, পোস্ট-প্রোডাকশনের সময় পটভূমিতে অন্যকিছু যোগ করা জন্য এটি করা হয়।]]
[[File:SpiderwickChroniclesSet.jpg|thumb|right|সাদারণত [[ক্রোমা কি]] বিশেষ আবহে নীল পর্দা ব্যবহৃত হয়]]
'''বিশেষ আবহ''' ({{Lang-en|Special effects}}) (সংক্ষেপে এসএফএক্স, এসপিএফএক্স বা সহজভাবে এফএক্স) হচ্ছে [[সিনেমা]], [[টেলিভিশন]], [[নাটক]], [[ভিডিও গেম]] এবং সিমুলেটর শিল্পে ছদ্মবেশ ধারণ করে একটি গল্পের ঘটনা বা ভার্চুয়াল দুনিয়া সৃষ্টিতে যে বিভ্রম বা চাক্ষুষ কৌশল ব্যাবহারব্যবহার করা হয়।
 
বিশেষ আবহগুলো '''অপটিক্যাল প্রভাব''' এবং '''যান্ত্রিক প্রভাব''' এই দুই ভাগে বিভক্ত। ডিজিটাল [[সিনেমা]]র উত্থানের সাথে সাথে বিশেষ আবহ এবং প্রকৃত আবহের মাঝে প্রভেদ বেড়েছে, এরই সাথে আধুনিক ডিজিটাল পোস্ট প্রোডাকশনে "বিশেষ আবহ" অপটিক্যাল প্রভাব এবং যান্ত্রিক প্রভাব সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়েছে।
 
যান্ত্রিক প্রভাব (ব্যাবহারিকব্যবহারিক বা ভৌত প্রভাব বলেও ডাকা হয়) সাধারণত লাইভ-অ্যাকশন শুটিংয়ের সময় সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে রয়েছে যান্ত্রিক প্রপোজ, সিনারি, স্কেল মডেল, অ্যানিমেট্রনিকস, পাইরোটেকনিক্স এবং বায়ুমণ্ডলীয় প্রভাব: বাস্তব বাতাস, বৃষ্টি, কুয়াশা, তুষার, মেঘ ইত্যাদি তৈরি করা। একটি গাড়ী নিজেকে নিজে চালিত করছে এমন রূপ দেয়া এবং একটি বিল্ডিংকে উড়িয়ে দেয়া এসব হচ্ছে যান্ত্রিক প্রভাবের উদাহরণ। যান্ত্রিক প্রভাব প্রায়ই সেট ডিজাইন এবং মেকআপ মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি দৃশ্যে যুদ্ধক্ষেত্র প্রবলতর করার জন্য দরজা বা দেয়াল বিচ্ছিন্ন করা হয়ে থাকে, অথবা একজন অভিনেতাকে একটি অ-মানব জীবের মতো তৈরি করতে প্রস্থেটিক মেকাপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
 
অপটিক্যাল প্রভাব (ফোটোগ্রাফিক প্রভাব নামেও ডাকা হয়) এমন এক কৌশল, যেখানে চিত্র বা ফ্লিম ফ্রেমগুলো ফটোগ্রাফিকভাবে তৈরি করা হয়, ক্যামেরায় একাধিক এক্সপোজার, ম্যাটেস ব্যাবহারব্যবহার করা হয় অথবা স্কুফ্টন প্রসেস বা পোস্ট-প্রোডাকশনে অপটিক্যাল প্রিন্টার ব্যবহার করে। অপটিক্যাল প্রভাব ব্যাবহারব্যবহার করে একটি ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডে অভিনেতাকে উপস্থাপন বা সেট স্থাপন করা যায়।
 
১৯৯০ এর দশক থেকে কম্পিউতার-উদ্ভূত চিত্রাবলী (কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজারি - জিসিআই) সম্পুর্ণভাবে বিশেষ আবহ প্রযুক্তির অধীনে চলে এসেছে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এটি চলচ্চিত্র নির্মাতাদেরকে স্বল্প খরচে আরও নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন প্রভাবকে আরো নিরাপদে এবং দৃঢ়ভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম করেছে। ফলস্বরূপ, অনেক অপটিক্যাল এবং যান্ত্রিক প্রভাব কৌশল জিসিআই দ্বারা স্থানান্তরিত হয়েছে। মেরি, স্কটিশ রানী, শিরোনাম একটি reenactment ফিল্ম যখন, ক্লার্ক মেরি এর পোশাকে ব্লক পর্যন্ত পদক্ষেপ একটি অভিনেতা নির্দেশ।
১৫ নং লাইন:
১৮৫৭ সালে অস্কার রেজেন্ডার ৩০ টি নেগেটিভের বিভিন্ন অংশ একটি একক ইমেজ মধ্যে সংযুক্ত করে বিশ্বের প্রথম "বিশেষ প্রভাব" চলচ্চিত্র তৈরি করেন। এটি একটি কোলাজ সমন্বয় মুদ্রণ ছিল। ১৮৯৫ সালে অ্যালফ্রেড ক্লার্ক প্রথমবারের মতো বিশেষ আবহ দিয়ে গ্রহণযোগ্য গতিশীল ছবি তৈরী করেছিলেন। একটি চলচ্চিত্রে স্কটিশ রানী মেরির শিরঃচ্ছেদের দৃশ্য পুনরাবৃত্তি করতে, ক্লার্ক একজন অভিনেতাকে মেরির পোশাকে ব্লকটিতে বারবার যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। জল্লাদ যখন মাথায় করে কুড়াল নিয়ে আসছিলো তখন ক্লার্ক ক্যামেরা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং সব অভিনেতা স্থির হয়ে গিয়েছিল। আর যিনি মেরির অভিনয় করছিলেন, তাকে সেট থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি অভিনেতার জায়গায় মেরির অনুরূপ একটি পুতুল স্থাপন করে নতুনভাবে চিত্রগ্রহণ শুরু করেন এবং পুতুলের মাথা কাটার জন্য জল্লাদকে তখন কুড়াল আনতে বলেন। এই ধরনের কৌশল এক শতাব্দী ধরে বিশেষ আবহ সৃজন শাসন করেছিল।<ref>Rickitt, 10.</ref>
 
সিনেমায় এই চাতুরতা ব্যবহারে এটিই শুধু প্রথমই ছিল না, এটি চলমান ছবির প্রথম ফোটোগ্রাফিক চাতুরি ছিল, যেমন "স্টপ ট্রিক"। জর্জ মেলিয়েস ঘটনাক্রমে একই "স্টপ ট্রিক" আবিষ্কার করেছিলেন। মেলিয়েস অনুযায়ী, প্যারিসে রাস্তার দৃশ্য চিত্রগ্রহণের সময় তার ক্যামেরা কাজ করছিল না। যখন তিনি চলচ্চিত্রটি দেখেন, তিনি "স্টপ ট্রিকটি" আবিষ্কার করেন, যেখানে একটি পথচারীদের দিক পরিবর্তন করতে এবং পুরুষদের মহিলাদের মাঝে নিয়ে যেতে একটি ট্রাক শবযানে রুপান্তরিত হয়েছিল। থিয়েটার রবার্ট-হাউডিনের মঞ্চ ব্যবস্থাপক মেলিয়েস ১৯১৪-এর মধ্যে ৫০০ [[স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র]] ধারাবাহিক গড়তে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, এই পদ্ধতিতে একাধিক এক্সপোজার, টাইম-ল্যাপ আলোকচিত্ৰবিদ্যা, দ্রবীভূত এবং হাতে আঁকা রং এর কৌশল উদ্ভাবন বা উন্নয়ন করেছিলেন। চলচ্চিত্রক্ষেপক ব্যাবহারব্যবহার করে নিপূণভাবে তার এই রূপান্তর করার দক্ষতার কারণে উর্বর মেলিয়েসকে অনেক সময় "সিনেম্যাজিশন" হিসেবে উল্লেখ হয়। তার সবচেয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্র এ ট্রিপ টু দ্যা মুন (১৯০২), জুলস ভার্নিসের ফ্রম দ্যা আর্থ টু মুন এর অদ্ভুত প্যারোডি ছিল। যাতে জীবন্ত দৃশ্য এবং এনিমেশনের সমন্বয় ঘটেছিল এবং ব্যাপকভাবে ক্ষুদ্রকায় এবং ঔজ্বল্যহীন অঙ্কন কাজের সংঘবদ্ধ করেছিল।
 
১৯১০ থেকে ১৯২০ পর্যন্ত বিশেষ আবহের প্রধান উদ্ভাবন ছিল নরটন ডন কর্তৃক ম্যাট শটের উন্নতি। মূল ম্যাট শট সঙ্গে, কার্ডবোর্ড টুকরা ফিল্ম রাখা হয়েছিল এক্সপোজারকে বাধা দেয়ার জন্য, যা পরে প্রকাশিত হত। ডন "গ্লাস শট" এর সাথে এর সমন্বয় করেছিলেন। ফিল্ম এক্সপোজার নির্দিষ্ট জায়গায় বাধাগ্রস্থ করার জন্য কার্ডবোর্ড ব্যবহার করার পরিবর্তে, ফিল্ম থেকে প্রকাশিত আলো প্রতিরোধ করার জন্য ডন কেবল কিছু অংশে কালো প্রলেপ দিয়েছিলেন। আংশিকভাবে উন্মুক্ত ফিল্ম থেকে একটি ফ্রেম চিত্রফলকের উপরে তখন অভিক্ষিপ্ত হয়, সেখানে তখন ম্যাট টানা হয়। ফিল্ম থেকে সরাসরি একটি ছবি নিয়ে ম্যাট তৈরির মাধ্যমে সঠিক মাপ ও দৃশ্যানুযায়ী একটি আঁকা অবিশ্বাস্যভাবে সহজ হয়ে যায়। সহজাত ছবি নির্মিত হওয়ার কারণে, ডন এর কৌশল ম্যাট শট জন্য পাঠ্যপুস্তকের মত হয়ে উঠে।
২৩ নং লাইন:
খুব দ্রুতই "স্টপ ট্রিক" এর মত কিছু কৌশল উন্নতি লাভ করে, যা গতিসম্পন্ন ছবিতেও বাস্তবের মতই ছিল। [[অ্যানিমেশন|অ্যানিমেশনে]] অঙ্কন (এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উইসর ম্যাক এর ''গার্টি দ্যা ডাইনোসর'') এবং ত্রিমাতৃক ছাঁচ (এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উইলিস ও'ব্রায়েন এর চলচ্চিত্র দ্যা লস্ট ওয়ার্ল্ড ও [[কিং কং (১৯৩৩-এর চলচ্চিত্র)|কিং কং]]) এর সমন্বয় ঘটিয়ে চলমান বিভ্রম সৃস্টি করা হত। অনেক স্টুডিও নিজেদের "বিশেষ আবহ" বিভাগ খুলেছিল, যেগুলো গতময় ছবির সম্ভাব্য সকল কৌশল পরিপ্রেক্ষিত নির্নয়ের জন্য দায়বদ্ধ ছিল।
 
এছাড়া দৃশ্য নকল করা বা ছদ্মবেশ ধারণ করার এই প্রতিযোগিতা ক্ষুদ্র প্রতিরূপ ব্যাবহারকেব্যবহারকে আরও উন্নত করে উৎসাহিত করেছিল। নৌবাহিনীর যুদ্ধ স্টুডিওতে মডেলের মাধ্যমে চিত্রিত করা যেত। জীবন ও অঙ্গের ঝুঁকি ছাড়াই ট্যাংক এবং উড়োজাহাজ উড়ানো (এবং ধ্বংস) করা যেত। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে ক্ষুদ্র প্রতিরূপ এবং চিত্র দিয়ে পৃথীবিতে অস্তিত্ব নেই এমন কিছুও দৃশ্যায়ন করা সম্ভব হত। ফ্রিটস ল্যাং এর ''মেট্রোপুলিশ'', ক্ষুদ্র প্রতিরূপ, ম্যাট পেইন্টিং, স্কুফ্টান প্রক্রিয়া এবং জটিল মিশ্রণের উদ্ভাবনী ব্যবহারে তৈরি গোড়ার দিকের দর্শনীয় বিশেষ আবহ এর চলচ্চিত্র ছিল।
 
অপটিক্যাল প্রিন্টার বিশেষ আবহ ফোটোগ্রাফির জন্য ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। মূলত, অপটিক্যাল প্রিন্টার হচ্ছে এক ধরনের প্রজেক্টর, যা ক্যামেরার লেন্সের দিকে তাক করানো থাকে এবং ফিল্মের প্রতিলিপি তৈরীর জন্য এটিকে বিকশিত করা হয়েছিল।