সমতা নারীবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
T. Galib (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
৫ নং লাইন:
নারীবাদী তত্ত্বটি পুরুষদের তুলনায় নারীদের সমান ও বৈসাদৃশ্যহীন আইনি মর্যাদাকে প্রচার করতে চায়। যদিও সমতা নারীবাদীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্মত হন যে পুরুষ এবং মহিলাদের শারীরবৃত্তীয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে ভিন্ন জৈবিক পার্থক্য রয়েছে, তারা যুক্তি দিয়েছেন যে একটি মনস্তাত্ত্বিক স্তরে, যৌক্তিকতা এবং কারণের ব্যবহার উভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সাম্যবাদী নারীবাদীদের মতে, পুরুষ এবং নারীরা তাদের যুক্তি, লক্ষ্য অর্জন এবং কাজে এবং বাড়িতে উভয় ক্ষেত্রেই সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সমান।{{Citation needed|reason=Reliable source needed for this entire paragraph|date=February 2018}}
 
[[মেরি ওলস্টোনক্রাফট]] এর "“এ ভিন্ডিকেশন অব দ্যা রাইটস অব ওমেন” (A Vindication of the Rights of Woman") (১৭৯২)-এর পরে সমতা নারীবাদই নারীবাদের প্রধান প্রভাব ছিলো। পুরুষ এবং নারীর সমতার বিষয়টি শিক্ষা এবং শ্রমিকের অধিকারে আত্মপ্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতের নারীদের সক্রিয়তা ও নারীবাদী তাত্ত্ব অনুসরণের জন্য একটি প্রবাদমূলক পথ তৈরি করে।<ref>Wollstonecraft, Mary. [https://www.gutenberg.org/dirs/etext02/vorow10.txt "A Vindication of the Rights of Woman"]. Retrieved 4 October 2014.</ref> সেই থেকে সক্রিয় সমতা নারীবাদীদের মধ্যে [[সিমোন দ্যা বোভোয়ার]], সেনেকা ফলস সম্মেলনের নেত্রীরা, এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যানটন, লুচারিয়া কফিন মট, সুসান বি অ্যান্টনি, [[বেটি ফ্রাইডান]] এবং গ্লোরিয়া স্টেইনেম অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
 
উনিশ এবং বিংশ শতাব্দীতে সমতা নারীবাদ যখন নারীবাদের প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, তখন ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে জনপ্রিয় নারীবাদ, পার্থক্য নারীবাদ বা পুরুষ এবং নারীর মধ্যে প্রয়োজনীয় পার্থক্য সম্পর্কে একটি নারীবাদ তা মনোযোগ লাভ করে।<ref>The University of Alabama. [http://www.uah.edu/woolf/feminism_kinds.htm "Kinds of Feminism"]. Retrieved 3 October 2014.</ref> সমতা নারীবাদের বিপরীত এই দৃষ্টিভঙ্গি সহানুভূতি, লালনপালন ও যত্নের মতো ঐতিহ্যগতভাবে দেখা নারীদের বৈশিষ্ট্যগুলিকে কেন্দ্র করে এর লক্ষ ছিল "নারীত্ব" উদযাপনের পক্ষে। যদিও সাম্যবাদী নারীবাদী মানব প্রকৃতিটিকে মূলত উভয়লিঙ্গের জন্য সত্য মনে করেন কিন্তু পার্থক্য নারীবাদীরা, এই দৃষ্টিভঙ্গি পুরুষ-আধিপত্যবাদের প্রচলিত ধারণাকে ভালো বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন এবং তাদের মতে, এইভাবে এটি সমাজের [[পিতৃতন্ত্র|পুরুষতান্ত্রিক]] কাঠামোর জন্য কাজ করে।<ref>[http://www.iep.utm.edu/care-eth/ Ethics of Care] (International Encyclopedia of Philosophy). Retrieved 2 October 2014.</ref>
১৩ নং লাইন:
ফ্রান্সে সংঘটিত অধিকাংশ সমতা নারীবাদ সফল হয়নি কিন্তু ১৮০০ শতকে উত্তর আমেরিকায় সংঘটিত অনেক আন্দোলনকে প্রভাবিত করে। অ্যাবিগেইল অ্যাডামস এবং মার্সি ওটিস ওয়ারেন ১৭৭৬ সালের সংবিধানে নারী স্বাধীনতা কোনো লাভ ছাড়াই যুক্ত করার চেষ্টা করেন। ১৯৪৮ সালে [[নিউ ইয়র্ক|নিউ ইয়র্কে]] অবস্থিত সেনেকা জলপ্রপাতে সংঘটিত নারী চুক্তির মাধ্যমে এলিজাবেথ কেডি স্টান্টন এবং লুক্রেসিয়া কোফিন মোট সহ হাজার হাজার নারী সমতা নারীবাদের গতি পরিবর্তন করে দেয়। এতে তারা স্বাধীনতার পাশাপাশি তারা সকল ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বৈধ সমতা দাবি করেন (শিক্ষা, ক্ষতিপূরণ, অর্থনৈতিক সুবিধা এবং ভোটাধিকার ইত্যাদি)। এলিজাবেথ কেডি স্টান্টন এবং সুজান বি. এনথোনি এর প্রভাবে এই আন্দোলন ইউরোপে বিস্তার লাভ করে। ১৯৬৯ সালে জন স্টুয়ার্ট মিল “দ্যা সাবজেকশন অব ওমেন” প্রকাশ করেন যেখানে তিনি নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতার অর্থ মানবিক এবং অধ্যাত্মিক অগ্রসরতা এবং প্রত্যেকের জন্য আরো সুখ নিয়ে আসবে বলে যুক্তি দেন।<ref name=Mills/>{{rp|87–89}}
 
ইউরোপে এই আন্দোলন অগ্রসর হওয়ার পর তা ১৯২০ সালে নারীর ভোটাধিকার আন্দোলন শুরুর পূর্ব পর্যন্ত ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অনেক নারী পুরুষ এবং নারী সমান কিনা এ বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন মতের অধিকারী ছিলেন। বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক, অথনৈতিক এবং শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষে ‘Unitedজাতিসংঘ নারী মর্যাদা কমিশন (United Nations Commission on the Status of Women’Women) স্থাপিত হওয়া পর্যন্ত এটি চলতে থাকে। ফরাসি অস্তিত্ববাদী সিমোন দে বিউভোয়র তার কীর্তি ‘The Second Sex’ প্রকাশ করেন, যাতে তিনি নারী এবং লিঙ্গ সমতা সম্পর্কিত অনেক দাবির সত্য প্রকাশ করে দেন। ১৯৬৩ সালে সমতা নারীবাদ সংক্রান্ত আরেকটি সাহিত্য সামনে আসে। বেটি ফ্রাইডেন এর ‘The“দ্যা ফেমিনাইন মিস্টিক” (The Feminine Mystique’Mystique) তিনি “যে সমস্যার কোনো নাম নেই” তা আলোচনা করেছেন, যা দ্বারা তিনি ১৯৫০ এর দশকের নারীদের মধ্যে বৃহৎভাবে বিস্তৃত থাকা হতাশাকে নির্দেশ করেছেন।<ref name=FB>Friedan, Betty. "The Feminine Mystique." The Essential Feminist Reader. Ed. Estelle B. Freedman. New York: Random House Group, 2007. Retrieved 2 October 2014.</ref> তথ্যের মাধ্যমে সমাজের তৈরি অসমতা দেখিয়েছেন যা এ দঃখজনক পরিস্থিতির কারণ ছিল সাথে তিনি তার নিজের সন্তানের যত্ন নিতে তার মনোস্তাত্ত্বিকের কর্মজীবন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। ১৯৬৬ সালে জাতীয় সংস্থার উন্নয়নের সাথে এই সাহিত্যগুলোকে নির্দেশনা হিসেবে ব্যবহার করে আবার যুক্তরাষ্ট্রে নারীবাদ জেগে ওঠে। এই সংঘ নারী এবং পুরুষের মধ্যে আবার সকল বৈষম্য দূর করতে নারীদের উপর থেকে সকল আইনী এবং সামাজিক বাধা সরিয়ে দিতে সংগ্রাম করে। ১৯৭২ সালে বেলা আফজাং, বেটি ফ্রেইডেন এবং গ্লোরিয়া স্টেইনেম এই সমতা অধিকার আন্দোলনকে কংগ্রেস পর্যন্ত নিয়ে যায়।<ref>Castro, Ginette. American Feminism: A Contemporary History. Trans. Elizabeth Loverde-Bagwell. New York: New York UP, 1990. Retrieved 1 October 2014.</ref>
 
==সমতা নারীবাদী তত্ত্ব==
২২ নং লাইন:
==গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ==
===মেরি ওলস্টোনক্রাফ্ট===
১৭৯২ সালে, মেরি ওলস্টোনক্রাফ্ট প্রথম দিকের নারীবাদী দর্শনের প্রথম কীর্তিগুলোর একটি তৈরি করেন এবং যদিও তিনি স্পষ্টভাবে নারী ও পুরুষ সমান বলেননি, কিন্তু জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমতার ডাক দিয়েছেন যা পরবর্তী সমতা নারীবাদী কীর্তিগুলোর জন্য পথ প্রসস্থ করে দেয়। তিনি তার "A“এ Vindicationভিন্ডিকেশন ofঅব theদ্যা Rightsরাইটস ofঅব Woman"ওমেন” - এ তিনি রাজেনৈতিক এবং নৈতিক বিষয়গুলোর উপর জোর দিয়ে, নারীদের তাদের সমাজের অবস্থার সাথে ‍তুলনাযোগ্য শিক্ষা থাকা উচিত বলে যুক্তি প্রদান করেন। যেহেতু নারীরা প্রধান যত্নশীল ব্যক্তি, তাই তারা যদি এ সুযোগ পায়, তাহলে তারা তাদের সন্তানদের আরো ভালোভাবে শিক্ষা দিতে পারবে এবং স্বামীদের কাছে তারা স্ত্রী এর পরিবর্তে সঙ্গী হিসেবে গণ্য হতে পারবে বলে তিনি তার যুক্তিটি ব্যাক্ত করেছেন। তিনি নারীদের বিয়ের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হওয়া ‘সম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য করার পরিবর্তে তারা মানুষ এবং তাদের পুরুষের সমান অধিকার পাওয়া উচিত এই বিষয়টি তিনি মান্য করেন।<ref name=WM/>{{rp|74–88}}
 
===জন স্টুয়ার্ট মিল===
জন স্টুয়ার্ট মিল ১৮৬৯ সালে তার স্ত্রী, Harrietহ্যারিয়েট Taylorটেয়লর Millমিল এর সাহায্যে "“দ্যা সাব্জেকশন অব ওমেন” (The Subjection of Women") ‍প্রকাশ করেন। এতে তিনি লিঙ্গ সমতার পক্ষে বিতর্ক করেন। তিনি তার স্ত্রীর তৈরি প্রবন্ধ, "“দ্যা এনফ্রানচাইজমেন্ট অব ওমেন” (The Enfranchisement of Women") (যাতে তিনি নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতার দরজা খুলে দেন) থেকে কিছু যুক্তি তিনি কাটিয়ে দিতে সক্ষম হন। মিল বিশ্বাস করেন যে, নারীদের সমান হিসেবে গণ্য হওয়া থেকে পাওয়া নৈতিক এবং বুদ্ধিমত্তার অগ্রসরতা প্রত্যেকের জন্য বৃহত্তর অর্থে সুখ নিয়ে আসতে পারে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রত্যেকেরই নিজেকে শিক্ষিত এবং উন্নত করার অধিকার আছে, একই সাথে তিনি নারীদের ভোটাধিকার প্রদানের পক্ষে বিতর্ক করেন। সম্পূর্ন বই জুড়ে তিনি নারী ও পুরুষ উভয়েই ভোট দিয়ে নিজেদের অধিকার রক্ষা করার সুযোগ এবং নৈতিক এবং বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে নিজেদের পায়ে দাড়ানোর সুযোগ সবার পাওয়া উচিত বলে বিতর্ক করেন এবং তিনি তার সংসদে তার অবস্থান নারীদের ভোটাধিকারের জন্য ব্যবহার করেন।<ref>John Stuart Mills (Stanford Encyclopedia of Philosophy)". plato.stanford.edu. Retrieved 30 September 2014.</ref>
 
 
৩১ নং লাইন:
 
===সিমোন দে বিউভোয়র===
সিমোন দে বিউভোয়র তার তিন অংশে বিভক্ত বই, "The[[দ্বিতীয় Second Sex"লিঙ্গ]] লেখার মাধ্যমে সমতা নারীবাদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রথম অংশ "“ডেসটিনি” (Destiny") তে তিনি মানুষের মধ্যে তুলনা করার পূর্বে বিভিন্ন প্রাণিদের মধ্যে নারীর সাথে পুরুষের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এই শারীরবৃত্তীয় এবং মনোবিশ্লেষণ সম্পর্কিত তথ্যগুলো থেকে তিনি এই সারমর্মে পৌছান যে, ইতিহাসে স্ত্রী লিঙ্গ কখনো পরাজিত হয়নি। দ্বিতীয় অংশ, “হিসটোরি” "(History") -তে তিনি নারীদের দুটি ক্রমবিন্যাসে আলোকপাত করেছেন: উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ এবং প্রজননের দাসত্ব থেকে মুক্তি। যেভাবে পুরুষ পশু স্ত্রী পশুর আধিপত্য বিস্তার করে, সেভাবে তিনি এই দুটি অংশে নারী হওয়াকে পশু হওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। অবশেষে, তৃতীয় অংশে, তিনি পুরুষের ভিন্ন ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কল্পিত “চিরন্তন হতাশা” নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারপর তিনি অবস্থার সম্পূর্ণ প্রকৃত বাস্তবতায় নিয়ে আলোচনা করে তার কল্পনা এবং বাস্তবতার মধ্যকার বৈসাদৃশ্য দেখান।<ref>Beauvoir, Simone De. ''The Second Sex''. New York: Alfred A. Knopf, 1949.</ref> তার সম্পূর্ণ সাহিত্যিক কর্মজীবনে তিনি লিঙ্গ বিষয়ে কিছু কুসংস্কার স্পষ্ট করতে সাহায্য করেছেন এবং নারী এবং পুরুষকে সমান অধিকারের সাথে সমানভাবে বিবেচনা করতে হবে।
===বেটি ফ্রাইডেন===
বেটি ফ্রাইডেন তার "The Feminine Mystique" বইটি লেখার পর সর্বোস্বীকৃত সমতা নারীবাদীদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেন। এ বইটিতে তিনি “যে সমস্যার কোনো নাম নেই” (১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকের নারীদের হতাশাকে নির্দেশ করা হয়েছে) নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তার বইয়ের মাধ্যমে তিনি অনেক সমস্যা সনাক্ত করতে সক্ষম হন এবং তার ব্যাপকভাবে বিস্তৃত স্বীকৃতির জন্য পরবর্তীতে তিনি ন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর ওমেন (এনএও) -এর সভাপতি হন।