সুভাষচন্দ্র বসু: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Swapan234 (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা
蟲蟲飛 (আলোচনা | অবদান)
Swapan234 (আলাপ)-এর করা সম্পাদনাগুলি বাতিল করে Pramit.jee-এর করা সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত এসডাব্লিউভিউয়ার [১.৪]
১ নং লাইন:
{{Distinguish|সুভাষ চন্দ্র গোয়েল}}
{{তথ্যছক ব্যক্তি
| name = নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
| image = Subhas Chandra Bose NRB.jpg
| image_size =
| caption =
| birth_name =
| birth_date = {{জন্ম তারিখ|1897|1|23}}
| birth_place = [[কটক]], (অধুনা ([[ওড়িশা]]), [[ব্রিটিশ ভারত]]
| resting_place = মৃত্যু প্রমাণিত হয়নি
| resting_place_coordnates =
| residence = ৩৮/২ এলগিন রোড (অধুনা লালা লাজপত রাই সরণি), [[কলকাতা]]
| nationality = [[ভারতীয়]]
| known_for = [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী]] ও [[আজাদ হিন্দ ফৌজ|আজাদ হিন্দ ফৌজের]] সংগঠক ও সর্বাধিনায়ক
| education = [[Ravenshaw Collegiate School|র‍্যাভেনশো কলেজিয়েট স্কুল]], কটক
| employer =
| occupation = স্বাধীনতা-সংগ্রামী, রাজনীতিবিদ
| title = নেতাজি , দেশনায়ক
| networth =
| height = ৫ ফুট ৮.৫ ইঞ্চি
| weight =
| term =
| predecessor =
| successor =
| party = [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস]], [[সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক|ফরওয়ার্ড ব্লক]]
| boards =
| religion = [[হিন্দুধর্ম|হিন্দু]]
| spouse = এমিলি শ্যাঙ্কেল
| partner =
| parents = জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবী
| relatives = * [[শরৎচন্দ্র বসু]] (দাদা)
* [[শর্মিলা বসু]] (পৌত্রী)
| signature = Subhas Chandra Bose Signature.svg
| website = [http://www.netaji.org/ নেতাজী রিসার্চ ব্যুরো]<br />[http://www.missionnetaji.org/ মিশন নেতাজি]
| footnotes =
}}
'''সুভাষচন্দ্র বসু''' {{অডিও|Bn-নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু.oga|উচ্চারণ}} (জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭ - মৃত্যু:?) [[ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন|ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের]] এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তিনি '''নেতাজি''' নামে সমধিক পরিচিত। ভারত সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী তাঁর জন্মবার্ষিকী কে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষনা করেন ২০২১ এ।
সুভাষচন্দ্র পরপর দু'বার [[ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস|ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের]] সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু [[মহাত্মা গান্ধী]]র সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত এবং কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা<ref>"১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে হরিপুরায় অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে সুভাষ বসু প্রস্তাবিত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রবর্তনের তীব্র সমালোচনা করেন এবং এই প্রচেষ্টা কার্যকর করা হলে তা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করার আবেদন করলেন। এ ছাড়া সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেসকে একটি ব্যাপক গণসংগঠনে পরিণত করে জাতীয় আন্দোলনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানালেন। কংগ্রেস সভাপতির পদে আসীন থাকার সময় সুভাষ বসু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বর্জন ও আপোষহীন সংগ্রামের সপক্ষে বলিষ্ঠ মতামত প্রকাশ করতে লাগলেন। জুলাই মাসে (১৯৩৮ খ্রি.) এক বিবৃতিতে তিনি ঘোষণা করলেন– "কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্য যদি ফেডারেশন সম্পর্কে কোনো আপোষরফায় রাজি হয় তাহলে কংগ্রেস দলে গৃহযুদ্ধের সূচনা হবে।" ''আধুনিক ভারত (১৯২০–১৯৪৭)'', দ্বিতীয় খণ্ড, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, কলকাতা, ১৯৯৯, পৃ. ১৫২</ref> বিরুদ্ধ-মত প্রকাশ করার জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। সুভাষচন্দ্র মনে করতেন, মহাত্মা গান্ধীর অহিংসার এবং সত্যাগ্রহ নীতি ভারতের স্বাধীনতা আনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। সুভাষচন্দ্র [[সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক|ফরওয়ার্ড ব্লক]] নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করে<ref>''আধুনিক ভারত (১৯২০–১৯৪৭)'', দ্বিতীয় খণ্ড, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ, কলকাতা, ১৯৯৯, পৃ. ১৫৬</ref> ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের পূর্ণ ও সত্বর স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এগারো বার কারারুদ্ধ করেছিল। তাঁর বিখ্যাত উক্তি "''তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।''"
[[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ]] ঘোষিত হওয়ার পরেও তাঁর মতাদর্শের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি; বরং এই যুদ্ধকে ব্রিটিশদের দুর্বলতার সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন। যুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করে [[সোভিয়েত ইউনিয়ন]], [[জার্মানি]] ও [[জাপান]] ভ্রমণ করেন ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে। জাপানিদের সহযোগিতায় তিনি [[আজাদ হিন্দ ফৌজ]] পুনর্গঠন করেন এবং পরে তার নেতৃত্ব দান করেন। এই বাহিনীর সৈনিকেরা ছিলেন মূলত ভারতীয় [[যুদ্ধবন্দি]] এবং ব্রিটিশ মালয়, [[সিঙ্গাপুর]]<nowiki/>সহ [[দক্ষিণ এশিয়া]]র অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত মজুর। [[জাপান সাম্রাজ্য|জাপানের]] আর্থিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় তিনি নির্বাসিত [[আজাদ হিন্দ সরকার]] প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বদান করে ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে [[ইম্ফলের যুদ্ধ|ইম্ফল]] ও [[ব্রহ্মদেশ অভিযান|ব্রহ্মদেশে]] (বর্তমান মায়ানমার) যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে [[নাৎসি জার্মানি|নাৎসি]] ও অন্যান্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোনো কোনো ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ সুভাষচন্দ্রের সমালোচনা করেছেন; এমনকি কেউ কেউ তাঁকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ভারতে অন্যান্যরা তাঁর ইস্তাহারকে [[রিয়েলপোলিটিক]] (নৈতিক বা আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বদলে ব্যবহারিক রাজনীতি)-এর নিদর্শন বলে উল্লেখ করে তাঁর পথপ্রদর্শক সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছেন।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। [[জওহরলাল নেহরু]] সহ অন্যান্য যুবনেতারা তাঁকে সমর্থন করেন। শেষপর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রস [[পূর্ণ স্বরাজ]] মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়। [[ভগৎ সিং|ভগৎ সিংয়ের]] ফাঁসি ও তাঁর জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ<ref>"করাচি কংগ্রেস উদ্বোধনের ঠিক আগে ২৩ মার্চ ভগৎ সিং, শুকদেব ও রাজগুরুর ফাঁসির ঘটনায় তীব্র হয় র‌্যাডিকাল জাতীয়তাবাদীদের হতাশা ও ক্রোধ।" ''আধুনিক ভারত (১৮৮৫-১৯৪৭)'', সুমিত সরকার, কে পি বাগচী অ্যান্ড কোম্পানি, কলকাতা, ২০০৪, পৃ.২৬৭</ref> সুভাষচন্দ্র [[গান্ধি-আরউইন চুক্তি|গান্ধী-আরউইন চুক্তি]] বিরোধী
আন্দোলন<ref>"ভাইসরয় আরউইন গোলটেবিল বৈঠকের প্রস্তাব করে প্রথম যে ঘোষণা করেন তাকে সুভাষচন্দ্র প্রথম থেকেই খুব সন্দেহের চোখে দেখেছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল আসলে এটি ব্রিটিশ সরকারের একটি ফাঁদ মাত্র। প্রথমে মতিলাল নেহরু, মদনমোহন মালব্য, সর্দার প্যাটেল প্রমুখ নেতারা ও গান্ধিজি নিজে আরউইনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে একটি বিবৃতিতে সই দেন। সুভাষচন্দ্র, জওহরলাল এবং আরো কয়েকজন এর বিরোধিতা করে পৃথক এক ইস্তাহার প্রচার করার মনস্থ করেন। কিন্তু... জওহরলাল গান্ধিজির কথায় তাঁর মত পরিবর্তন করেন।" ''দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র: এক ঐতিহাসিক কিংবদন্তি'', নিমাইসাধন বসু, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৯৭, পৃ. ১৩৯</ref> শুরু করেন। তাকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়।
 
==প্রথম জীবন ==
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি, তাঁর পিতার কর্মস্থল বর্তমান [[ওড়িশা]] রাজ্যের [[কটক]] শহরে (ওড়িয়া বাজার) একটি দক্ষিণ রাঢ়ী কায়স্থ বংশে জন্মগ্রহণ করেন সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন কটক-প্রবাসী বিশিষ্ট বাঙালি আইনজীবী জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে নবম। তাঁদের পৈত্রিক নিবাস ছিল [[ভারত|ভারতের]] অধুনা [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের [[দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা]] জেলার [[কোদালিয়া]] (বর্তমানে [[সুভাষগ্রাম]]-এর অন্তর্ভূক্ত)৷<ref>''Subhash Chandra Bose: A Biography'', Chattopadhyaya, Gautam, National Council of Educational Research and Training, New Delhi, 1997, p. 1</ref> তাঁর পিতা [[দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা]]র মাহিনগরের বিখ্যাত বসু বংশ, যাঁরা মাহিনগরের বসু নামে খ্যাত, সেই বংশোদ্ভূত এবং তাঁর মাতা উত্তর কোলকাতার হাটখোলা দত্ত বাড়ির কন্যা ছিলেন৷<ref>''An Indian Pilgrim: An Unfinished Autobiography And Collected Letters 1897-1921'', Subhas Chandra Bose, Asia Publishing House, London, 1965, p. 1</ref> ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র একটি কটকের ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করেন; বর্তমানে এই স্কুলটির নাম স্টুয়ার্ট স্কুল। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে। সুভাষচন্দ্র ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] অধিভুক্ত [[স্কটিশ চার্চ কলেজ]] থেকে দর্শনে সাম্মানিকসহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।