আবদুস সালাম (সাংবাদিক): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
হুসায়েন (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Bellayet (আলোচনা | অবদান)
copyedit
১ নং লাইন:
{{cleanup}}
'''আবদুস সালাম''' ([[আগস্ট ২]], [[১৯১০]]- [[ফেব্রুয়ারি ১৩]], [[১৯৭৭]]) ছিলেন পাকিস্তানী আমলে শুধু বাংলাদেশের নয়,[[বাংলাদেশ|বাংলাদেশী]] সমগ্রসাংবাদিক উপমহাদেশের সব চেয়ে পরিচিত সাংবাদিকদের একজন।যিনি স্বাধীনতা-উত্তরকালে [[বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট]] প্রতিষ্ঠা করে,করেন এবং এর প্রথম মহাপরিচালক হিসাবেওহিসাবে তিনি এক অনন্যগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পাকিস্তানী সামরিক-বেসামরিক উভয় শাসনকালেই বাঙ্গালীদেরবাঙালিদের অধিকার সম্বন্ধে তাঁর সম্পাদিত ‘পাকিস্তান(''পাকিস্তান অবজার্ভার'' বর্তমানে ''[[বাংলাদেশ ) অবজার্ভার’অবজার্ভার]]'' পত্রিকায় লিখে তিনি শাসকদের বিরাগভাজন হন এবং একাধিকবার কারারুদ্ধ হয়েছিলেন।ছিলেন।
 
 
 
== জন্ম ও শিক্ষাজীবন ==
[[ফেনী]] জেলার [[ছাগলনাইয়া উপজেলা]]র দক্ষিণ ধর্মপুর নামে এক অজ পাড়াগাঁয়ে ১৯১০ সালের ২রা আগস্ট আবদুস সালাম জন্ম গ্রহণ করেন। আবদুস সালাম ছাত্রজীবনে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পরীক্ষায় তিনি চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান পান। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আই, এস, সি পরীক্ষায় মুস্লিমমুসলিম ছাত্রদের মধ্যে তিনি শীর্ষস্থান লাভ করেন।কোলকাতারকরেন। কোলকাতার [[প্রেসিডেন্সি কলেজ]] থেকে এরপর ইংরেজী সাহিত্যে প্রথম হয়ে ''টনি মেমরিয়াল স্বর্ণ পদক'' পান।
 
[[ফেনী]] জেলার [[ছাগলনাইয়া উপজেলা]]র দক্ষিণ ধর্মপুর নামে এক অজ পাড়াগাঁয়ে ১৯১০ সালের ২রা আগস্ট আবদুস সালাম জন্ম গ্রহণ করেন [http://www.banglapedia.org/httpdocs/HT/S_0658.HTM]। তবে পরবর্তীকালে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি পিতৃ বা মাতৃকূলের দিক দিয়ে তাঁর মুন্সীবাড়ির সাথে ঘনিষ্টভবে সংযুক্ত হয়েছিলেন, যেমন প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা কফিলুদ্দিন মাহমুদ, সাংবাদিক এ,বি,এম মূসা, কবি শামসুল ইসলাম।
 
আবদুস সালাম ছাত্রজীবনে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পরীক্ষায় তিনি চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান পান। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আই, এস, সি পরীক্ষায় মুস্লিম ছাত্রদের মধ্যে তিনি শীর্ষস্থান লাভ করেন।কোলকাতার [[প্রেসিডেন্সি কলেজ]] থেকে এরপর ইংরেজী সাহিত্যে প্রথম হয়ে টনি মেমরিয়াল স্বর্ণ পদক পান।
 
== প্রথম কর্মজীবন ও বিবাহ ==
ইংরেজীতে অল্প কিছুদিন ফেণী কলেজে অধ্যাপনার পরে সরকারী চাকুরীতে যোগ দেন । ১৯৩৪ সালে তিনি কুমিল্লার [[লাকসাম উপজেলা|লাকসাম উপজেলার]] পশ্চিম গাঁওয়ের করিমুল হক ও মাহমুদা খাতুনের একমাত্র কন্যা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন। ফাতেমা খাতুনের বড় ভাই মুহাম্মদ শামস-উল হক শিক্ষা মহাপরিচালক, [[রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়]][[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] উপাচার্য, [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] শিক্ষা মন্ত্রী, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রভৃতি গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন।
 
আব্দুস সালাম ইংরেজ আমলে বেঙ্গল সরকারের আয়কর, সিভিল সাপ্লাইজ, অডিট, ইত্যাদি বিভাগে অনেক গুরুত্বপুর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে দেশ বিভাগের সময় তিনি [[ঢাকা]] চলে আসেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব বাংলা সরকারের উপ-মহা হিসাব পরিচালক নিযুক্ত হন।
 
ইংরেজীতে অল্প কিছুদিন ফেণী কলেজে অধ্যাপনার পরে সরকারী চাকুরীতে যোগ দেন । ১৯৩৪ সালে তিনি কুমিল্লার [[লাকসাম উপজেলা]]র পশ্চিম গাঁওয়ের করিমুল হক ও মাহমুদা খাতুনের একমাত্র কন্যা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেন। ফাতেমা খাতুনের বড় ভাই মুহাম্মদ শামস-উল হক শিক্ষা মহাপরিচালক, রাজশাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, পাকিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রী, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রভৃতি গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন।
 
আব্দুস সালাম ইংরেজ আমলে বেঙ্গল সরকারের আয়কর, সিভিল সাপ্লাইজ, অডিট, ইত্যাদি বিভাগে অনেক গুরুত্বপুর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তবে দেশ বিভাগের সময় তিনি ঢাকা চলে আসেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব বাংলা সরকারের উপ-মহা হিসাব পরিচালক নিযুক্ত হন।
 
==সাংবাদিক জীবন==
কিন্তু এই সময়ে তিনি উপলব্ধি করেন যে পুর্ব বাংলাকে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠি একটা উপনিবেশ করে রাখতে চায়। লোভনীয় সরকারী চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়ে অবজার্ভার পত্রিকাতে [http://www.bangladeshobserveronline.com/], [http://banglapedia.search.com.bd/HT/B_0228.htm]অনিশ্চিত নতুন জীবন শুরু করেন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারীর এক সপ্তাহ আগে তাঁর এক সম্পাদকীয়কে ধর্ম বিরোধী আখ্যা দিয়ে নূরুল আমীনের মুসলিম লীগ সরকার সালামকে কারারুদ্ধ করেন এবং পত্রিকাটি বন্ধ করে দেন। দীর্ঘ দু বছর সালামকে এখানে সেখানে ছোটখাট চাকুরী করে সংসার চালাতে হয়। এর পরে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে সালাম যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে বিপুল ভোটে প্রাদেশিক সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। অবজার্ভার পুনরায় তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশনা শুরু করে।
 
কিন্তু এর কিছুদিন পরেই পাকিস্তানে সামরিক শাসনের সুত্রপাত হয়। আবদুস সালাম আইউব খানের আত্মজীবনী ''Friends , not Masters'' এর বিরূপ সমালোচনা করায় তাঁর পত্রিকায় সরকারী বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়। অবাঙ্গালীঅবাঙালিদের স্বার্থের মুখপত্র ‘মর্নিং নিউজ’ পত্রিকার প্রেস দুর্ঘটনাক্রমে আগুনে পুড়ে গেলে আবদুস সালামকে গ্রেফতার করা হয়। তবে সমস্ত পাকিস্তানেই আবদুস সালাম বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য একটি সম্মানিত ব্যক্তিত্বে পরিনত হন। তাঁকে পাকিস্তান কাউন্সিল অব নিউজপেপার এডিটরস-এর সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবেরও আজীবন সদস্য পদ লাভ করেন।
কিন্তু এই সময়ে তিনি উপলব্ধি করেন যে পুর্ব বাংলাকে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠি একটা উপনিবেশ করে রাখতে চায়। লোভনীয় সরকারী চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়ে অবজার্ভার পত্রিকাতে [http://www.bangladeshobserveronline.com/], [http://banglapedia.search.com.bd/HT/B_0228.htm]অনিশ্চিত নতুন জীবন শুরু করেন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারীর এক সপ্তাহ আগে তাঁর এক সম্পাদকীয়কে ধর্ম বিরোধী আখ্যা দিয়ে নূরুল আমীনের মুসলিম লীগ সরকার সালামকে কারারুদ্ধ করেন এবং পত্রিকাটি বন্ধ করে দেন। দীর্ঘ দু বছর সালামকে এখানে সেখানে ছোটখাট চাকুরী করে সংসার চালাতে হয়। এর পরে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে সালাম যুক্তফ্রন্টের মনোনয়নে বিপুল ভোটে প্রাদেশিক সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। অবজার্ভার পুনরায় তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশনা শুরু করে।
 
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ঢাকার সব দৈনিকের সম্পাদক পরিবর্তন হলেও আবদুস সালাম স্বপদে থেকে যান। কিন্তু নতুন সরকারকে কিছু গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে ‘দি সুপ্রীম টেস্ট’ নামে একটি সম্পাদকীয় লেখায় তাঁকে সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর পরেও তিনি অধুনালুপ্ত ‘বাংলাদেশ টাইমস’ পত্রিকায় কলাম ও সম্পাদকীয় লিখতে থাকেন। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে [[জিয়াউর রহমান]] তাঁর অনুরোধে প্রেস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন এবং আবদুস সালাম হন তার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতেই তিনি শেষ শক্তি ব্যয় করেন। ১৯৭৬ সালে প্রথম [[একুশে পদক]] প্রবর্তন হলে জাতীয় কবি [[কাজী নজরুল ইসলাম]] এর মত আব্দুস সালামও এই পদকে ভূষিত হন।
কিন্তু এর কিছুদিন পরেই পাকিস্তানে সামরিক শাসনের সুত্রপাত হয়। আবদুস সালাম আইউব খানের আত্মজীবনী ''Friends , not Masters'' এর বিরূপ সমালোচনা করায় তাঁর পত্রিকায় সরকারী বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়া হয়। অবাঙ্গালী স্বার্থের মুখপত্র ‘মর্নিং নিউজ’ পত্রিকার প্রেস দুর্ঘটনাক্রমে আগুনে পুড়ে গেলে আবদুস সালামকে গ্রেফতার করা হয়।
 
আবদুস সালামের নেতৃত্বে সেই সময়ে অবজার্ভারে যাঁরা সাংবাদিকতা করেছেন, তাঁদের অনেকেই পরে দেশে-বিদেশে খ্যাতিমান সাংবাদিক হয়েছেন ; যেমন - [[ওবায়েদ উল হক]] , এস, এম, আলী, মাহবুব জামাল জাহেদী, কে,জি, মুস্তফা, আতাউস সামাদ, এ,বি, এম, মূসা, [[এনায়েতুল্লাহ্‌ খান]] প্রমুখ; আবার অনেকে পরে অন্য পেশায় শীর্ষ পৌঁছেছেন, যেমন শাহ কিবরিয়া, শেখ রাজ্জাক আলী, রাজিয়া খান, মীজানুর রহমান শেলী প্রমুখ।
তবে সমস্ত পাকিস্তানেই আবদুস সালাম বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য একটি সম্মানিত ব্যক্তিত্বে পরিনত হন। তাঁকে পাকিস্তান কাউন্সিল অব নিউজপেপার এডিটরস-এর সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবেরও আজীবন সদস্য পদ লাভ করেন।
 
== মৃত্যু ==
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ঢাকার সব দৈনিকের সম্পাদক পরিবর্তন হলেও আবদুস সালাম স্বপদে থেকে যান। কিন্তু নতুন সরকারকে কিছু গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে ‘দি সুপ্রীম টেস্ট’ নামে একটি সম্পাদকীয় লেখায় তাঁকে সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর পরেও তিনি অধুনালুপ্ত ‘বাংলাদেশ টাইমস’ পত্রিকায় কলাম ও সম্পাদকীয় লিখতে থাকেন।
১৯৭৬ সালে প্রথম [[একুশে পদক]] প্রবর্তন হলে জাতীয় কবি [[কাজী নজরুল ইসলাম ]]এর মত আব্দুস সালামও এই পদকে ভূষিত হন। এর অল্পকাল পরেই ১৯৭৭ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী তারিখে এক আকস্মিক হৃদ-আক্রমণে ৬৬ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
 
 
== প্রেস ইনস্টিটিউট ও মৃত্যু ==
 
 
১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে [[জিয়াউর রহমান]] তাঁর অনুরোধে প্রেস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন এবং আবদুস সালাম হন তার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক।
এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতেই তিনি শেষ শক্তি ব্যয় করেন।
 
১৯৭৬ সালে প্রথম [[একুশে পদক]] প্রবর্তন হলে জাতীয় কবি [[কাজী নজরুল ইসলাম ]]এর মত আব্দুস সালামও এই পদকে ভূষিত হন। এর অল্পকাল পরেই ১৯৭৭ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী তারিখে এক আকস্মিক হৃদ-আক্রমণে ৬৬ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
 
আবদুস সালামের নেতৃত্বে সেই সময়ে অবজার্ভারে যাঁরা সাংবাদিকতা করেছেন, তাঁদের অনেকেই পরে দেশে-বিদেশে খ্যাতিমান সাংবাদিক হয়েছেন ; যেমন - [[ওবায়েদ উল হক]] , এস, এম, আলী, মাহবুব জামাল জাহেদী, কে,জি, মুস্তফা, আতাউস সামাদ, এ,বি, এম, মূসা, [[এনায়েতুল্লাহ্‌ খান]] প্রমুখ; আবার অনেকে পরে অন্য পেশায় শীর্ষ পৌঁছেছেন, যেমন শাহ কিবরিয়া, শেখ রাজ্জাক আলী, রাজিয়া খান, মীজানুর রহমান শেলী প্রমুখ।
 
== বহিঃসংযোগ ==
1. বাংলাপিডিয়াঃ আবদুস সালাম [http://www.banglapedia.org/httpdocs/HT/S_0658.HTM বাংলাপিডিয়াঃ আবদুস সালাম]
 
2. বাংলাপিডিয়াঃ বাংলাদেশ অবজারভার [http://banglapedia.search.com.bd/HT/B_0228.htm]
৫১ ⟶ ৩৪ নং লাইন:
 
[[বিষয়শ্রেণী: বাংলাদেশী সাংবাদিক]]
 
[[Category:১৯১০-এ জন্ম]]
[[Category:১৯৭৭-এ মৃত্যু]]