বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১১০ নং লাইন:
| HDI_year =
}}
'''বাংলা প্রেসিডেন্সি''' ([[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]: Bengal Presidency), সরকারিভাবে '''[[ফোর্ট উইলিয়াম, ভারত|ফোর্ট উইলিয়ামের]] প্রেসিডেন্সি''' (ইংরেজি: Presidency of Fort William) এবং পরবর্তীকালে '''বাংলা প্রদেশ''' (ইংরেজি: Bengal Province) ছিল [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] একটি প্রশাসনিক বিভাগ। অতীতে এই প্রেসিডেন্সির এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার যে সর্বাধিক বিস্তৃতি ঘটেছিল, তার মধ্যে অধুনা [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ]] ও [[দক্ষিণপূর্ব এশিয়া|দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার]] একটি বৃহৎ অংশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। [[বঙ্গ|বাংলার]] (অধুনা [[বাংলাদেশ]] রাষ্ট্র ও [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ]] [[ভারতের রাজ্যসমূহ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহ|রাজ্য]]) জাতি-ভাষাগত অঞ্চলটি ছিল বাংলার মূল ভূখণ্ডের অন্তর্গত। ফোর্ট উইলিয়ামকে ঘিরে গড়ে ওঠা শহর [[কলকাতা]] ছিল বাংলা প্রেসিডেন্সির রাজধানী। [[বাংলার গভর্নর|বাংলার গভর্নরগণ]] বহু বছর ধরে একই সঙ্গে [[ভারতের ভাইসরয়|ভারতের ভাইসরয়ের]] দায়িত্বও পালন করতেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্যন্ত কলকাতাই কার্যত ছিল [[ভারতের রাজধানী]]।
 
১৬১২ সালে [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল সম্রাট]] [[জাহাঙ্গির|জাহাঙ্গিরের]] শাসনকালে [[মুঘল বাংলা|মুঘল বাংলা সুবায়]] স্থাপিত বাণিজ্যকুঠি থেকে বাংলা প্রেসিডেন্সির উত্থান ঘটে। একচেটিয়া বাণিজ্যের রাজকীয় সনদপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সংস্থা [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] বাংলায় প্রভাব বিস্তারের জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। ১৭৫৭ সালে ষড়যন্ত্রপূর্বক [[বাংলার নবাব|বাংলার নবাবকে]] [[পলাশীর যুদ্ধ|সিংহাসনচ্যূত]] করার পর এবং তারপরে ১৭৬৪ সালে [[বক্সারের যুদ্ধ|বক্সারের যুদ্ধের]] পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তর অংশে নিজ কর্তৃত্ব বিস্তার করে। এইভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিই উপমহাদেশের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সামরিক শক্তিতে পরিণত [[ভারতে কোম্পানি শাসন|ভারতে কোম্পানি শাসনের]] সূত্রপাত ঘটে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ক্রমশ কোম্পানির একচেটিয়া অধিকার খর্ব করতে শুরু করে। ১৮৫০-এর দশকের মধ্যে কোম্পানি আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ওঠে।<ref name="autogenerated1">William Dalrymple (10 September 2019). The Anarchy: The Relentless Rise of the East India Company. Bloomsbury Publishing. {{ISBN|978-1-4088-6440-1}}.</ref> ১৮৫৭ সালের [[সিপাহী বিদ্রোহ|মহাবিদ্রোহের]] পরে ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসনভার স্বহস্তে তুলে নেয়। বাংলা প্রেসিডেন্সি পুনর্গঠিত হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাংলা হয়ে ওঠে [[ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন|ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের]] অন্যতম উৎসস্থল তথা [[বাংলার নবজাগরণ|বাংলার নবজাগরণের]] কেন্দ্রবিন্দু।
[[চিত্র:Bengalpresidency 1858.jpg|thumb|250px|ব্রিটিশ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ১৮৫৭ সালের মানচিত্র]]
 
'''বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি''' বা '''বাংলা প্রেসিডেন্সি''' ছিল [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] একটি ঔপনিবেশিক অঞ্চল। এই অঞ্চলের ক্ষেত্রভুক্ত ছিল পূর্ব ও পশ্চিম বাংলা নিয়ে গঠিত অবিভক্ত বাংলা যা বর্তমানে [[বাংলাদেশ]] রাষ্ট্র এবং [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ]], [[অসম]], [[বিহার]], [[ওড়িশা]], [[ঝাড়খণ্ড]], [[ত্রিপুরা]] ও [[মেঘালয়]] ইত্যাদি রাজ্যসমূহে বিভক্ত। পরবর্তীকালে ভারতের [[উত্তর প্রদেশ]], [[উত্তরাখণ্ড]], অবিভক্ত [[পাঞ্জাব (ভারত)|পাঞ্জাব]], [[হরিয়ানা]], [[হিমাচল প্রদেশ]] ও [[ছত্তিসগড়]], [[মধ্যপ্রদেশ]] ও [[মহারাষ্ট্র|মহারাষ্ট্রের]] অংশবিশেষ এবং [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] [[উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ]], [[পাঞ্জাব (পাকিস্তান)|পাঞ্জাব]] এবং বর্মা (অধুনা [[মায়ানমার]]) অঞ্চলের বিভিন্ন দেশীয় রাজ্য বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৬৭ সালে স্ট্রেইট সেটলমেন্টের ক্রাউন কলোনির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে [[পেনাং]] এবং [[সিঙ্গাপুর]]ও প্রেসিডেন্সির প্রশাসনিক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হিসাবে গণ্য হত। [[১৬৯৯]] সালে [[কলকাতা]] নগরীকে [[ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির]] প্রেসিডেন্সি নগর ঘোষণা করা হয়। কিন্তু [[১৭৬৫]] সালকেই বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির প্রকৃত সূচনাকাল হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। এই বছরই কোম্পানি, [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] সম্রাট ও [[অযোধ্যার নবাব|অযোধ্যার নবাবের]] মধ্যে যে চুক্তি সাক্ষরিত হয়, তার ফলে অবিভক্ত [[বঙ্গ|বাংলা]], অবিভক্ত [[বিহার]], [[ওড়িশা]] ও [[মেঘালয়]] কোম্পানির শাসনাধীনে আসে। [[বোম্বাই প্রেসিডেন্সি]] ও [[মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি]]র বিপরীতে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি উত্তর ও মধ্য ভারতের সকল ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল। এই প্রেসিডেন্সির বিস্তার ছিল পূর্বে [[গঙ্গা]] ও [[ব্রহ্মপুত্র নদ|ব্রহ্মপুত্রের]] মোহনা থেকে উত্তরে [[হিমালয়]] ও পশ্চিমে পাঞ্জাব ও সীমান্ত অঞ্চল পর্যন্ত। ১৮৩১ সালে উত্তরপশ্চিমের প্রদেশগুলি স্থাপিত হয়। এই সময় [[অযোধ্যা]] [[যুক্তপ্রদেশ|যুক্তপ্রদেশের]] (বর্তমানে উত্তর প্রদেশ) অন্তর্ভুক্ত হয়। [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম মহাযুদ্ধের]] পূর্বে সমগ্র উত্তর ভারত চারটি লেফটানেন্ট-গভর্নরশাসিত প্রদেশ, যথা – [[পাঞ্জাব]], [[যুক্তপ্রদেশ]], বঙ্গপ্রদেশ, [[পূর্ববঙ্গ]] ও আসাম প্রদেশে এবং কমিশনার শাসিত [[উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ|উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে]] বিভক্ত হয়ে যায়।
বাংলা ছিল [[ব্রিটিশ রাজ|ব্রিটিশ ভারতের]] অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা-সংক্রান্ত কেন্দ্র। [[প্রত্ন-শিল্পায়ন|প্রত্ন-শিল্পায়নের]] যুগে [[ব্রিটেন|ব্রিটেনের]] [[শিল্প বিপ্লব|শিল্পবিপ্লবে]] বাংলা গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছিল। যদিও কিছুকাল পরেই [[টিপু সুলতান|টিপু সুলতানের]] শাসনে [[মহীশূর রাজ্য]] [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ এশিয়ার]] প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়।<ref name="Parthasarathi">{{Citation |title=Why Europe Grew Rich and Asia Did Not: Global Economic Divergence, 1600–1850 |given=Prasannan |surname=Parthasarathi |publisher=[[Cambridge University Press]] |year=2011 |isbn=978-1-139-49889-0 |url=https://books.google.com/books?id=1_YEcvo-jqcC}}</ref> ১৮৬৭ সালে বাংলা পুনর্গঠনের সময় [[পেনাং]], [[সিঙ্গাপুর]] ও [[মালাক্কা|মালাক্কাকে]] পৃথক করে গঠিত হয় [[স্ট্রেইটস সেটলমেন্টস]]।<ref name="autogenerated2">{{cite web|url=http://eresources.nlb.gov.sg/history/events/bd541c73-58ef-4bb1-9de7-173f00913286 |title=The Straits Settlements becomes a residency - Singapore History |publisher=Eresources.nlb.gov.sg |date= |accessdate=2020-03-30}}</ref> [[ব্রিটিশ ব্রহ্মদেশ]] ভারতের একটি প্রদেশে এবং পরবর্তীকালে একটি পৃথক [[রাজকীয় উপনিবেশ|রাজকীয় উপনিবেশে]] পরিণত হয়। [[অর্পিত ও বিজিত প্রদেশসমূহ]] ও [[পাঞ্জাব প্রদেশ (ব্রিটিশ ভারত)|পাঞ্জাব]] স পশ্চিমের এলাকাগুলি অধিকতর পুনর্গঠিত হয়। উত্তরপূর্বের এলাকাগুলি নিয়ে গঠিত হয় [[ঔপনিবেশিক আসাম]]। ১৯৪৭ সালে [[ব্রিটিশ ভারত বিভাজন|ব্রিটিশ ভারত বিভাজনের]] সময় ধর্মীয় জনসংখ্যার ভিত্তিতে [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)|বাংলাও বিভাজিত]] হয়।
 
== নামকরণ ==