আত্মপ্রেম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আতিকুল হক (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Paradox Alpha (আলোচনা | অবদান)
বিষয়বস্তু যোগ করা হয়েছে
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১ নং লাইন:
{{উৎসহীন}}
[[নার্সিসিজম]] বা আত্মপ্রেম বলতে আত্নমগ্নতা, নিজের গুন সম্বন্ধে অতিরঞ্জিত ধারনা পোষন করা, নিজের প্রতি নিজেই অতিরিক্ত মুগ্ধ থাকা এবং নিজের জীবনে অন্য কাউকে অতটা গুরুত্ব না দেওয়া। নিজ ব্যতীত অন্য কারো প্রতি আকর্ষিত না হওয়া।  যদিও সীমিত পরিসরে নার্সিসিজম সাধারন জীবনের একটা অংশ। নার্সিসিজম এর ক্ষেত্রে মানুষ সর্ব ক্ষেত্রেই নিজের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে।
 
[[গ্রিক মিথলজি]] থেকে পাওয়া যায়, নার্সিসাস নামে এক সুদর্শন যুবক ছিল। ইকো নামের এক দেবী তাকে প্রেম নিবেদন করে। কিন্তু সে তা প্রত্যাখ্যান করে। ইকো তখন তাকে অভিশাপ দেয়, একসময় সে তার নিজের রূপের দেমাগে নিজেই কাবু হবে।
৭ নং লাইন:
 
নার্সিসিজম খারাপ কিছু নয়, সব সময়। এ
 
এ অবস্থায় ব্যক্তি নিজেকেই সম্ভাব্য সকল কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু মনে করে।
 
[[বিষয়শ্রেণী:স্বকীয় সত্তা]]
 
"নার্সেসিস্ট" শব্দটার সাথে কম বেশি খুব কম মানুষ ই পরিচিত। মুলত যারা নার্সেসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজর্ডার এ ভুগে তাদের কে নার্সেসিস্ট বলা হয়।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, "নার্সেসিস্টিক ডিজর্ডার কি?"। আসুন নার্সেসিস্টিক ডিজর্ডার সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
নার্সেসিস্টিক ডিজর্ডারঃ নার্সেসিস্টিক ডিজর্ডার হলো বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব ব্যাধিগুলোর মাঝে একটি - যেখানে একজন ব্যক্তি নিজের গুরুত্বকে সবচাইতে বেশি প্রাধান্য দিতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। অন্যের প্রতি সহানুভূতির অভাব, নিজেকে বড় মনে করা, নিজের দোষ ঢাকতে অন্যকে দোষারোপ করা ইত্যাদি। Self admiration, Ego-centrism, Arrogance, Envy, Lack empathy এই প্রতিটি শব্দের বাহক একজন নার্সেসিস্ট। চার প্রকারের নার্সেসিজম এই পৃথিবীতে খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়।
 
নার্সেসিজম এর প্রকারভেদঃ মুলত চার প্রকার নার্সেসিস্ট মানুষদের সংখ্যা পৃথিবীতে বেশি।যেমনঃ
1. Grandiose narcissist: যারা মুলত সবার মনোযোগ আকর্ষন (Attention seeking) করতে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। তারা একটু অহংকারী স্বভাব এর হয়। তারা কারো কথা শুনতে চায় নাহ, তারা সর্বদা নিজেকে সবার উপরের সন্মান দিতে ব্যস্ত থাকে।
2. Malignant narcissist: Grandiose narcissist-দের সব গুনাগুন এদের মধ্যে রয়েছে। তারা কিছুটা মানসিক ভাবে বিকারগ্রস্থ। তার আপনার ক্ষতি করতে পিছপা হবে নাহ। তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য সব কিছু করতে পারে। তারা তাদের জীবন সঙ্গীর কে ধোকা দিয়ে পরকিয়ায় লিপ্ত থাকলেও এতা তারা তাদের নিজেদের দোষ হিসেবে বিবেচনা করবে নাহ। তারা প্রচন্ডভাবে মিথ্যাবাদী হয়ে থাকে।
3. Covert narcissist: এদের মধ্যেও Grandiose narcissist-দের সব গুনাগুন রয়েছে কিন্তু এদের মধ্যে এমন একটি গুন রয়েছে যেই গুন তাদেরকে Grandiose narcissist এবং Malignant narcissist থেকে আলাদা করেছে। তারা পৃথিবীকে দোষারোপ করে তার সফল নাহ হবার জন্য। তারা দোষারোপ করে তাদের জীবনকেও। একটি উদাহরন এ আসা যাকঃ " আমাকে কেউ খেয়াল করে নাহ , আমি এত ভাল কাজ করেছি , সবাই দেখেও নাহ দেখার ভান করে। তখন তারা মনে করে এই পৃথিবীর মানুষজনের যোগ্যতা নেই তার কাজ বিচার করার।"
4. Communal narcissist: এরা সবার থেকে একটু আলাদা! তারা নিজেকে সবচাইতে বেশি শো অফ করে। যেমনঃ কোন অসহায় এর সাহায্য সহযোগিতা করার পর ছবি তুলে সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করে নিজেকে বড় করার জন্য। তারা নিজেদের কে সোশাল মিডিয়াতে বসবাস করা যোদ্ধা দাবী করে।
 
এতক্ষন নার্সেসিজম এর প্রকারভেদ দেখার পর আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক। যেমন আপনি বা আপনার সঙ্গী কি কোন প্রকারের মধ্যে পড়ে? উত্তরটি খুব সোজা আপনি নার্সেসিজম এর প্রকারভেদ দেখেই বুঝতে পারবেন আপনি নার্সেসিস্ট নাকি নাহ! কিন্তু আপনি আপনার জীবন সঙ্গীকে দেখে কিভাবে বুঝবেন, আপনির জীবন সঙ্গী নার্সেসিস্ট কিনা? আজ্ঞে হ্যা! কিছু কিছু বৈষিষ্ঠ্য এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার জীবন সঙ্গী নার্সেসিস্ট কিনা।
আপনার নার্সেসিস্ট জীবন সঙ্গীর বৈশিষ্ট্যঃ
1. তারা প্রচন্ড ঈর্ষান্বিত বৈশিষ্ট্য বহন করে, 2. সে আপনাকে আপনার নিজের অস্তিত্বকে মিথ্যে প্রমান করতে চাইবে,
3. সে কখনও আপনার সাথে সৎ ভাবে আচরন করবে নাহ,
4. সে কোন দিন কোন ভুল কাজ করলে পরবর্তীতে যে তার দোষ স্বীকার করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করবে। যেমনঃ "নাহ আমি এই কাজ কখনই করি নাই" অর্থ্যাৎ সে নিজের দোষ স্বীকার করবে নাহ।
যদি দুজন নার্সেসিস্ট এক সাথে প্রেমের বন্ধনে যুক্ত হইয় তাহলে কি হবে?
উত্তরটি খুব সহজ, আসুন উদাহরন দিয়ে বিশ্লেষন করা যাক ব্যাপার টা। যেমনঃদুটি বাচ্চা একই সময় একই জায়গায় বসে দুজন দু ধরনের গেইম খেলছে। তারা কেউ একসাথে খেলছে নাহ। তারা দুজন দুজনকে বিশ্বাস করে নাহ , তাদের মধ্যে যে কেউ একজন আরেকজনের সাথে প্রতারনা করতে পারে। এটি একধনের সাইকোলজিকাল যুদ্ধ এর রূপ নিবে। তাদের সম্পর্ক দির্ঘায়িত নাহ হবার সম্ভাবনা বেশি।
 
নার্সেসিস্ট বাবা-মা তারা তাদের সন্তানের পর্যাপ্ত খেয়াল রাখে নাহ। যদি তাদের সন্তানরা তাদের সাথে একসাথে কিছুটা সময় কাটাতে চায় তখন তারা প্রায় সময়ই অবহেলা করে থাকে। নার্সেসিস্ট গুনাবলী সম্পন্ন মানুষজন তারা অভিভাবক হিসেবে সম্পূর্নভাবে যোগ্য নাহ। কিন্তু যখন কোন প্রতিযোগিতামুলক খেলা হয়ে থাকে তখন তারা তাদের সন্তানকে পন্য হিসেবে বিবেচনা করে। অর্থাৎ তখন তারা মনে করে তাদের সন্তানকে যেভাবেই হোক প্রথম হতে হবে। তাহলেই তারা তাদের সন্তানকে ব্যবহার করে সমাজে সবার থেকে বেশি মান সন্মান অর্জন করতে পারবে। সন্তানের যখন এই বিষয় গুলো বোধগম্য হয়, অর্থাৎ যখন তারা বুঝতে পারে তাদের নার্সেসিস্ট পিতা-মাতা তাদেরকে পন্য হিসেবে ব্যবহার করেছে তখন ই শুধু হয় তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ । পারিবারিক কলহের কারণে কেন সন্তানরা মানসিক ও আচরণগত দিক থেকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ধরনের পরিবারের সন্তানরা তাদের মা-বাবাদের কলহের জন্য নিজেকে দোষী ভাবতে শুরু করে। ছেলে-মেয়েরা নার্সেসিস্ট বাবা-মাকে দেখে নার্সেসিজম বৈশিষ্ট শিখতে থাকে এবং পরবর্তীতে তাদের নার্সেসিস্ট হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
 
নার্সেসিস্ট হবার কিছু ভাল দিক নিয়ে আলোচনা করা যাকঃ
নার্সেসিস্টরা পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকতে পছন্দ করে থাকে। নার্সেসিস্টরা সবসময় তাদের বসবাস এর স্থল যথেষ্ট পরিষ্কার করে রাখে যাতে সমাজে তাদের নামে ভাল মন্তব্য এর আদান-প্রদান হয়। কিন্তু কিছু কিছু নার্সেসিস্টদের চিন্তাভাবনা একটু আলাদা হয়ে থাকে। মূলত এটি তাদের চিন্তার উপর নির্ভর করে যে , তারা কি পরিষ্কার থেকে সামাজিক সুনাম অর্জন করবে নাকি অন্য কোন উপায়ে। কিন্তু তাদের ভাল দিক থেকে খারাপ দিক লক্ষ্য করলে তাদের ভাল দিক খারাপ দিকের বড় চাদরে ঢাকা পড়ে যাবে।
 
জীবন সঙ্গীর একজন নার্সেসিস্ট হলে অন্যজন নিজেকে নিয়ে ভাবা শুরু করে দেয়।যেমনঃ আমি যদি আরেকটু সুন্দর হই তাহলে হয়ত সে আমাকে ভালবাসবে, আমি যদি একটু চিকন হই তাহলে হয়ত সে আমার দিকে লক্ষ্য করবে। এ ধরনের কথা ভাবতে ভাবতে সে নিজেকে পরিবর্তনের নামে মানসিক ভাবে নিজেকে অত্যাচার করতে থাকে। যখন তার মাঝে বিষয়টা বোধগম্য হয় যে নিজের পরিবর্তন হবার বিষয়টা ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো, তখন থেকেই শুরু হয় তাদের মাঝে কলহ। আর এই কলহ থেকেই একটি সম্পর্কের বিসর্জন হয়।
নার্সেসিস্ট সম্পর্ককে টিকিয়ে নাহ রেখে বিছিন্ন করে দেয়াকে যথাযথ বলে আমি মনে করি। যেখানে একজন মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থাকে নাহ এবং সবার থেকে বেশি সন্মান অর্জনের জন্য জীবন সঙ্গীর সাপেক্ষে নিজেকে পরিবর্তন করতে হয় সেখানে সম্পর্ক নামক পবিত্র শব্দের বিসর্জন দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।