বাঘা যতীন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৩১ নং লাইন:
যতীনের মা বিধবা শরৎশশী দেবী ছিলেন স্বভাবকবি। সমসাময়িক [[বাঙালি]] চিন্তাবিদদের রচনাবলীর পাঠিকারূপে তিনি অবগত ছিলেন দেশের মংগলের পথ এবং সেইমতো তিনি লালন করতেন তার সন্তান দু'টিকে। পরোপকার, সত্যনিষ্ঠা, নির্ভীক চিন্তায় ও কর্মে অভ্যস্ত যতীন পড়াশোনা ও খেলাধুলার পাশাপাশি কৌতুকপ্রিয়তার জন্যও সমাদৃত ছিলেন। পৌরাণিক নাটক মঞ্চস্থ ও অভিনয় করতে তিনি ভালোবাসতেন এবং বেছে নিতেন হনুমান, রাজা হরিশচন্দ্র, ধ্রুব, প্রহ্লাদ প্রভৃতি চরিত্র।<ref name=letter>যতীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবনের বহু তথ্য পাওয়া গেছে তাঁর দিদি বিনোদবালা দেবীর লিখিত খাতায়। তাঁর ছোট মামা ও প্রথম পর্বের বিপ্লবী সহকর্মী ললিতকুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা তিনটি পুস্তকেও বহু সংবাদ পাওয়া যায়: "দুর্গোৎসব", কৃষ্ণনগর, ১৯৩৬, পৃঃ ৩১, "পারিবারিক কথা", কৃষ্ণনগর, ১৯৪৭ পৃঃ ১০২, "বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ", বেঙ্গল পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৪৭, পৃঃ ৮২ (ভূমিকা) [[ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়]])।</ref>
 
যতীনের বড় মামা [[বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়]] (বিপ্লবী [[হরিপদ চট্টোপাধ্যায়|হরিপদ চট্টোপাধ্যায়েচট্টোপাধ্যায়ের]]<nowiki/>র পিতা) ছিলেন কৃষ্ণনগরের আইনজীবি এবং আইনের অধ্যাপক। তার পরামর্শ নিতেন স্বয়ং কবিগুরু [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] - পার্শ্ববর্তী [[শিলাইদহ|শিলাইদহে]] তার জমিদারী সংক্রান্ত নানা প্রয়োজনে। কৈশোর থেকে রবীন্দ্রনাথ যে অনুরাগ নিয়ে আন্দোলন চালিয়েছিলেন ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয়দের প্রতি অবজ্ঞা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে, তারই প্রেরণায় শরৎশশী উদ্বুদ্ধ করেছিলেন যতীনকে। রবীন্দ্রনাথের ভাইপো [[সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর]] ছিলেন ইতিহাস-ভক্ত। যতীনের চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে তিনি হাজির হতেন যতীনের [[ফুটবল]] ক্লাবে; সেখানে দামাল ছেলেগুলির সামনে সুরেন তুলে ধরতেন দেশপ্রেমের আদর্শ। গীতাপাঠের মধ্যে তাদের বুঝিয়ে দিতেন নিষ্কাম কর্মের উপযোগিতা। যতীন কৃষ্ণনগর শহরে এংলো ভার্নাকুলার (এ ভি) বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
 
১৮৯৫ সালে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজে (বর্তমানের [[ক্ষুদিরাম বোস সেন্ট্রাল কলেজ]]) ভর্তি হন। কলেজের পাশেই [[স্বামী বিবেকানন্দ]] বাস করতেন। বিবেকানন্দের সংস্পর্শে এসে যতীন দেশের স্বাধীনতার জন্য আধ্যাত্মিক বিকাশের কথা ভাবতে শুরু করেন। এসময়ে [[প্লেগ]] রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বিবেকানন্দের আহবানে যতীন তার বন্ধুদের দল নিয়ে এই রোগে আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত হন।
৪১ নং লাইন:
জননী শরৎশশীর অসুস্থতার সংবাদে যতীন কয়াগ্রামে এসে দেখেন এক কলেরা রোগীর সেবা করতে করতে তার সংক্রমণে যতীনের মা মৃত্যুবরণ করেছেন। দিদি বিনোদবালার কাছে যতীন জানতে পারেন, তার প্রয়াত মা কুমারখালীর উমাপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে ইন্দুবালার সাথে যতীনের বিয়ের সম্বন্ধ করেছিলেন। ১৯০০ সালে যতীন ইন্দুবালাকে বিয়ে করেন। তাদের ৪টি সন্তান হয় - অতীন্দ্র (১৯০৩-০৬), আশালতা (১৯০৭-৭৬), তেজেন্দ্র (১৯০৯-৮৯) এবং বীরেন্দ্র (১৯১৩-৯১)।
 
যতীন মজঃফরপুরে আর ফিরবেন না - এই খবর পেয়ে কেনেডি একটি সুপারিশ দেন তার বন্ধু হেনরি হুইলারের নামে, যিনি তখন বাংলা সরকারের অর্থসচিব। যতীনকে হুইলার নিজের স্ট্যানোগ্রাফার হিসাবে নিয়োগ করেন। যতীনের পেশাগত নৈপুণ্যের সংগে তার আত্মসম্মানবোধ ও দেশপ্রেম মুগ্ধ করে হুইলারকে। ভারতীয় প্রজাদের উপরে ইংরেজ অফিসারদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে তখন [[বিপিন চন্দ্র পাল]] ''নিউ ইন্ডিয়া'' (''New India'') পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপছেন; তারই প্রতিধ্বনি তুলে ''বংগদর্শনের'' পৃষ্ঠায় [[রবীন্দ্রনাথ]] লিখছেন মুষ্টিযোগের উপযোগিতা বিষয়ে - ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত ইংরেজের পক্ষ নিয়ে সরকার যেভাবে তার বদলা নেয়, সেবিষয়ে হুঁশিয়ার করে রবীন্দ্রনাথ ইঙ্গিত দিচ্ছেন ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ হতে। এর পিছনে প্রচ্ছন্ন আছে বিপ্লবীদের '''গুপ্ত সমিতি''' গঠনের পরিকল্পনা।
[[File:কৃষ্ণনগর এ ভি স্কুল.jpg|thumb|শহীদ বাঘা যতীনের স্মৃতিবিজড়িত বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর]]